ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

বিদ্যুৎ সঙ্কটে সুখবর দিলেন প্রধানমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:১১, ৩ জুন ২০২৩   আপডেট: ২০:৫৩, ৩ জুন ২০২৩
বিদ্যুৎ সঙ্কটে সুখবর দিলেন প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট জ্বালানি সঙ্কটের কারণে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতির কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের কষ্ট দূর করতে কাজ করছে সরকার। 

শনিবার (৩ জুন) রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

বিকেল ৪টার কিছুক্ষণ আগে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধ হয়ে তাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান দলীয় নেতাকর্মীরা। পরে কার্যালয় উদ্বোধন করেন তিনি।

পড়ুন: আমেরিকার ভিসা-নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মাথাব্যথা নেই: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। কিন্তু, তেলের দাম বেড়ে গেছে, গ্যাসের দাম বেড়ে গেছে, কয়লার দাম বেড়ে গেছে। এখন অবাক করার বিষয়, কয়লাই পাওয়া যাচ্ছে না। একসময় যারা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা করেছে আন্তর্জাতিকভাবে, তারাই এখন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করছে।’

‘আমাদের কয়লা কিনে আনতে সমস্যা হচ্ছে। আমি জানি, এই গরমে অনেকের কষ্ট হচ্ছে। আমরা তো লোডশেডিং একদম দূর করেছিলাম। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধটা যদি না হতো, আর করোনাভাইরাস যদি দেখা না দিতো, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা না দিতো, মূল্যস্ফীতি দেখা না দিতো; তাহলে কোনো কষ্ট হতো না। কিন্তু, আজকে আমরা ভেতরে যতই চেষ্টা করি, যে জিনিস আমাদের বাইর থেকে আনতে হয়, সেটা কষ্ট করে আমাকে জোগাড় করতে হচ্ছে।’

এ সময় তিনি সুখবর দিয়ে বলেন, ‘যাহোক, তবুও সুখবর যে, কাতার এবং ওমানের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়ে গেছে। আরও কয়েকটি দেশে সঙ্গে কথা হচ্ছে, যাতে আমরা গ্যাস আনতে পারি, এই কষ্ট দূর করতে পারি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি এই বিদ্যুৎ... একবার যদি মানুষের অভ্যাস হয়ে যায়, তারপর যদি বিদ্যুৎ না থাকে কষ্টটা বাড়ে। আর বিএনপি-জামায়াতের সময় তো মানুষ হাহাকার করত। বিদ্যুৎ চাওয়ার কারণে কানসাটে খালেদা জিয়া গুলি করে মানুষ হত্যা করেছিল। সারের দাবি করেছিল বলে ১৮ জন কৃষককে হত্যা করেছে। মজুরির কথা বলেছিল বলে ১৭ জন শ্রমিককে রোজার সময়ে হত্যা করেছিল।’

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, শতভাগ বিদ্যুতায়ন এবং বিএনপি-জামায়াতের সময়ে সঙ্কটের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যু দিতে পেরেছি। করোনায় অর্থনীতির চাপ, সেটাও আমরা কাটিয়ে উঠলাম; প্রবৃদ্ধি কমে যাচ্ছিল, সেটাও কাটিয়ে উঠলাম; কিন্তু যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার কারণে আজকে আমাদের পরিচালন ব্যয়, পরিবহন ব্যয়, জিনিসের দাম বেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, যে গমের দাম ২০০ ছিল, তা ৬০০ ডলার হয়ে গেছে। জাহাজ ভাড়া বেড়েছে। শুধু বাংলাদেশে না, সারা বিশ্বেই এই মন্দা চলছে। তারপরও আমাদের অর্থনীতির গতিকে সচল রেখেছি। দরিদ্রতা কমিয়েছি, স্বাক্ষরতার হার ৭৫ ভাগের বেশি, আয়ুস্কাল এখন ৭৩ বছর। মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার কমিয়েছি। 

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ২০০৮ সালে কেমন ছিল আর এখন কেমন? এক দিনে ১০০ সেতু, ১০০ সড়ক উদ্বোধন, এটা কি কোনো সরকার পেরেছে, পারেনি। আওয়ামী লীগ পেরেছে। কৃষকদের প্রণোদনা দিয়েছি। ভর্তুকির টাকা তাদের ব্যাংকে চলে যায়। কৃষককে ১০ টাকা দিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দিয়েছি।

দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিবছর পহেলা বৈশাখে আমরা বৃক্ষরোপণ করি। এখন তো জলবায়ু পরিবর্তনের কথা আসছে, এটা ভালো। কিন্তু, আওয়ামী লীগ ১৯৮৫ সাল থেকে এটা করে আসছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সবাই গাছ লাগাবেন। অন্তত তিনটি করে লাগাবেন। 

পড়ুন: বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারব বলেই দিয়েছি: প্রধানমন্ত্রী 

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন—আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, দুর্যোগ ব্যবস্থপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ। 

এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

পারভেজ/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়