ঢাকা     মঙ্গলবার   ২১ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৭ ১৪৩১

বিএনপি নৈরাজ্য করলে ডাবল শিক্ষা পাবে: কাদের 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২৪, ১০ মে ২০২৪   আপডেট: ২০:৪১, ১০ মে ২০২৪
বিএনপি নৈরাজ্য করলে ডাবল শিক্ষা পাবে: কাদের 

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথ সভায় বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদের

বিএনপি আন্দোলনের নামে কোনো ধরনের নৈরাজ‌্য করলে ‘ডাবল শিক্ষা’ দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার (১০ মে) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ‌্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের যৌথ সভায় সূচনা বক্তব্যে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নৈরাজ্য করবে? (বিএনপি) একবার তো একটা শিক্ষা পেয়েছে, এবার ডাবল শিক্ষা পাবে। আমরা বসে নেই। আমরা সর্বাত্মকভাবে প্রস্তুত আছি। সন্ত্রাস, অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্য মোকাবিলায় আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। আমরা সর্বশক্তি নিয়োগ করব শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।

উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচন ঘিরে ষড়যন্ত্র আছে, সতর্ক থাকতে হবে। কোনো সংঘাতে আমরা জড়াবো না। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখব। বাংলাদেশের যে গণতন্ত্র, শেখ হাসিনা যে গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করেছেন, সেই গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এত চক্রান্তের মধ্যেও ৪২ শতাংশ ভোটার টার্ন আউট। আপনারা (বিএনপি), আপনাদের সমমনারা ভোটে যাননি, তাহলে এত ভোটার কীভাবে এলো? উপজেলা নির্বাচনে ৩৬.১ শতাংশ ভোট পড়েছে, এ কথা বলেছে নির্বাচন কমিশন।’

উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি মোটামুটি সন্তোষজনক, উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধান কাটার মৌসুম চলছে। সেদিন (ভোটের দিন) অনেক জেলায় ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও ভোট কম হতে পারে, কিন্তু নেত্রীর নির্বাচনি এলাকায় গোপালগঞ্জে ভোট পড়ে ৬৮ শতাংশ। কোথাও কোথাও একেবারেই স্বাভাবিক না, একটু কমই পড়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে বিএনপি ও কিছু সাম্প্রদায়িক দলের ভোট বর্জনের মধ্যে যে ভোট পড়েছে, সেখানে আমি একটা কথা বলতে চাই, বিএনপির সরকারের সময়ে হওয়া কোনো স্থানীয় নির্বাচন এত শান্তিপূর্ণ হয়েছে?

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতি অতীতের তুলনায় আরো গতিশীল হয়েছে, সমৃদ্ধ হয়েছে। শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে স্থানীয় নির্বাচনগুলো সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে। এত বিরোধিতা, ষড়যন্ত্রের মধ্যেও শেখ হাসিনা নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বাস্তবে বজায় রেখেছেন। জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে আমরা সেটাই দেখলাম।

বিএনপির সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ভুল ব্যর্থতার চোরাবালিতে আটকে বিএনপি কোনো কিছু আদায় করতে পারবে না। তারা মুখে চৌকস কথার ফুলঝুড়ি ছড়াবে, ভিতরে ভিতরে চরম হতাশায় আচ্ছন্ন। হাস্যকর কথা বলে চেষ্টা করছে চাঙ্গা করার জন্য, কিন্তু হালে পানি পাচ্ছে না। যতদিন রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারায় ফিরে না আসবে, ততদিন আরও জনবিচ্ছিন্ন হবে।

তিনি বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো পার্চেজিং ক্যাপাসিটি ইনডেক্স প্রকাশ করা হয়েছে। সেই সূচক অনুযায়ী চলমান ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতির চাপ, অনিশ্চয়তার মুখেও স্থিতিশীলতা দেখিয়ে সম্প্রসারণের পথে আছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, শিল্পোদ্যোক্তাদের সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং গবেষণা সংস্থা পলিসি এক্সচেঞ্জ যৌথভাবে এ সূচক প্রকাশ করেছে। নেত্রীর সুদৃঢ় নেতৃত্বে আমাদের অর্থনীতি স্থিতিশীল রয়েছে। আইএমএফের আরও সহযোগিতা পাবার মতো শক্ত অবস্থানে আছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আমরা অনেকটা সফল। 

‘বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, প্রতিদিন হু হু করে দ্রব্যমূল্য বাড়ত। কখনো নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। আমরা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। সফলতা আসবে, কারণ উদ্যোগটা আন্তরিক।’

বঙ্গবন্ধুকন‌্যা শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে কর্মসূচি হাতে নেওয়ার কথা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অনুকরণে কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। এ কর্মসূচি ইউনিয়ন পর্যন্ত আমরা পালন করব। কারণ, শেখ হাসিনা না এলে দেশে গণতন্ত্র থাকত না, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ বিপন্ন হতো। যুদ্ধাপরাধী, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হতো না। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল হতো না। রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র হতো না, মাতারবারি হতো না। স্যাটেলাইট মহাকাশে পৌঁছে গেছে, এটা শেখ হাসিনা সরকার এবং তার সন্তানের সাফল্য।

পার্শ্ববর্তী দেশকে খুশি করতে রাজনীতি করে আওয়ামী লীগ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের দয়ায় ক্ষমতায় বসিনি। ইলেকশনের সময় আমেরিকাসহ আরও কিছু দেশ যে ভূমিকা নিয়েছিল, ভারত কিন্তু একেবারেই কথা বলেনি। একেবারেই নিরপেক্ষ ছিল। নিজের দেশকে খাটো করা, এটা গয়েশ্বরদের দ্বারাই সম্ভব। 

তিনি বলেন, ভারতের দয়ায় টিকে থাকব, সরে যাবো! পঁচাত্তরের পর আমরা ক্ষমতায় ছিলাম? তখন কি ভারত আমাদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল? কত বছর পর এসে, আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ক্ষমতার রাজনীতিতে প্রবেশ করেছি জনগণের ইচ্ছায়, কোনো বিদেশি শক্তির ইচ্ছায় নয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন—আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাশ, আইনবিষয়ক সম্পাদক নাজিবুল্লাহ হিরু প্রমুখ।

পারভেজ/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়