জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর সঙ্গে এবি পার্টির বৈঠক

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) প্রতিনিধিদল। সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে এবি পার্টির ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল গুলশানস্থ জাতিসংঘের ঢাকা সদর দপ্তরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে জাতিসংঘের এসডিজি (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোওল) বা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত নিয়ে দ্বিপাক্ষিক মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।
এক ঘণ্টারও অধিক সময় ধরে চলা ওই বৈঠকে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক, গোয়েন লুইস ছাড়াও ঢাকা দপ্তরের সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান উপস্থিত ছিলেন।
এবি পার্টির প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া এবং এবি পার্টির সহকারী সদস্যসচিব ও উইমেন ইনচার্জ ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি।
দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মূল বিষয় ছিল জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের অগ্রগতি এবং স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে সরকারের আসন্ন অগ্রগতির দাবি প্রসঙ্গ।
এবি পার্টি মনে করে, বাংলাদেশ জাতিসংঘের ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে অনেক পিছিয়ে আছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ সুশাসনের অভাব, দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যাপক দলীয় করণের প্রভাব। ২০৩০ সালের এজেন্ডা ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এবং ইউএন ডেভেলপমেন্ট সিস্টেম রিফর্ম (ইউএনডিএস) এর সাথে সঙ্গতি রেখে বাংলাদেশে জাতিসংঘ সংস্থাগুলি যে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এবি পার্টির নেতৃবৃন্দ তার প্রশংসা করেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এসডিজি বাস্তবায়ন এবং উন্নয়ন প্রভাব বাড়ানোর জন্য একটি নতুন এবং সুসংগত উপায়ে সরকারের একসঙ্গে কাজ করা উচিত।
মতবিনময়কালে এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ দেশের দুর্বল অর্থনীতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং কীভাবে এটি দারিদ্র্য বিমোচন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সুশাসন, পুলিশ সংস্কার, মানবাধিকার, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য নিরাপত্তা, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষার মতো এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে চাপ তৈরি করতে পারে সে বিষয়ে সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে কথা বলেন। অভিবাসন, উদ্বাস্তু, শান্তিরক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, গবেষণা, অন্তর্ভুক্তিমূলক অবকাঠামো এবং স্থিতিস্থাপকতা বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত ডেটা ম্যানিপুলেশন এবং সংখ্যাগত ত্রুটি প্রসঙ্গে তারা নিজস্ব মতামত জানান। এটা কীভাবে কল্যাণ আকাঙ্ক্ষাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতি করতে পারে সে বিষয়ে নিজেদের মত ব্যক্ত করেন।
তারা বলেন, এবি পার্টি শুধু অর্থনৈতিক সংকটই নয়, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের অবস্থার উন্নতির জন্য একটি স্থিতিশীল ও প্রতিনিধিত্বশীল সরকারের প্রয়োজন অনুভব করে। প্রতিটি আন্তর্জাতিক সূচক ইঙ্গিত করে যে আমরা, একটি দেশ ও জাতি হিসেবে, আইনের শাসন, লিঙ্গ ভারসাম্য এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পিছিয়ে পড়ছি। জাতীয় অগ্রগতি যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্য জাতিসংঘকে তার সহায়তা, নিযুক্তি ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তারা।
এবি পার্টির প্রতিনিধিদল সারা দেশে তাদের দলীয় কর্মকাণ্ড ও কর্মসূচির বিষয়ে আবাসিক প্রতিনিধিকে অবগত করেন।
নঈমুদ্দীন/এনএইচ