ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মেয়ের নামে ধান, বীজ বিক্রি ৫ লাখ টাকা 

কাঞ্চন কুমার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২১, ২২ জুন ২০২১   আপডেট: ১৪:২৩, ২২ জুন ২০২১
মেয়ের নামে ধান, বীজ বিক্রি ৫ লাখ টাকা 

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কৃষক মিলন হোসেন নিজে ফাতেমা নামের একটি ধানের জাত উদ্ভাবন করে বেশ সাফল্য পেয়েছেন। তিনি এক বিঘা জমিতে এ বছর ৪৩ মণ ধান পেয়েছেন। ধানগুলো তিনি বীজ হিসেবে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।

মিলন হোসেন উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের চক গ্রামের বাসিন্দা। তার দেখাদেখি এলাকার অন্য কৃষকরাও নতুন এ জাতের ধান চাষের জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

কৃষক মিলন হোসেন বলেন, ‘তিন বছর আগে আমি ব্রি ধান-৫১ চাষ করি। সে সময় আমার ধানের জমিতে এক গোছা ধানের গাছ দেখা যায় অস্বাভাবিক। অন্য গাছের তুলনায় গাছগুলো বেশ শক্ত, লম্বা ও মোটা। আমি গাছগুলোকে তুলে ফেলে না দিয়ে অন্য ধানের সাথে রেখে দেই। পরে দেখি ওই ধান গাছের শীষে অনেক ধান। আমি সেই গোছার ধানগুলোকে আলাদা করে কেটে রেখে দিলাম। পরবর্তী সময়ে সেই ধানগুলো আলাদা করে চারা দিয়ে অল্প কিছু জমিতে চাষ করি। পরবর্তী বছর ওই ধান থেকে বীজ সংগ্রহ করে পুনরায় দুই বিঘা জমিতে এ ধানের চাষ করি।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু এই ধানের কোনো নাম নেই, তাই আমার মেয়ের নাম অনুসারে এ ধানের নাম রেখেছি ফাতেমা ধান।’

মিলন হোসেন আরও বলেন, ‘এই বোরো মৌসুমে আমি এক বিঘা জমিতে ৪৩ মণ ধান পেয়েছি। যেহেতু এই ধান ইতোপূর্বে কেউ চাষ করেনি। তাই আশেপাশের এলাকার চাষিরা এসে বীজ হিসেবে এই ধান কিনে নিয়ে যাচ্ছে। আমি ৩০০ টাকা কেজি হিসাবে ধান বিক্রি করছি। এ পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ টাকার উপরে বিক্রি করেছি।’

একই এলাকার কৃষক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যেসব ধান চাষ করি, তার তুলনায় এ ধান তিনগুন ফলন বেশি। এর খড়ও গবাদিপশুর উন্নত মানের খাবার। আমরা চাই সরকারিভাবে এ ধান চাষের বিস্তার করানো হোক।’

কৃষক শওকত আলী বলেন, ‘আমি দুই বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের ধানের আবাদ করেছি। তবে আমার দুই বিঘাতে যে ধান হয়েছে। তার চেয়ে মিলনের ‘ফাতেমা’ ধান এক বিঘাতে বেশি ধান হয়েছে। আগামীতে আমি এই ধানের চাষ করবো। কারণ, এটার ফলন বেশি।’

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাঈম হোসেন বলেন, ‘সাধারণত প্রতিটি ধানের শীষে ১৫০-১৬০টি করে ধান থাকে। কিন্তু কৃষক মিলনের উদ্ভাবিত ধানের প্রতিটি শীষে ৭০০-৭৫০টি করে দানা হয়েছে। ধানের ফলন বিঘাপ্রতি ৪০-৫০ মণ হতে পারে।’

মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘কৃষক মিলন হোসেন নিজের প্রচেষ্টায় ব্রিধান-৫১ জাতের মধ্য থেকে কয়েকটা ধানের গোছা সংগ্রহ করে নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন। আমরা কৃষক মিলনের উদ্ভাবিত ধানের নমুনা সংগ্রহ করেছি। আগামীতে এ ধানের বিস্তার লাভ করবে বলে আশা করছি।’ 

কুষ্টিয়া/মাহি 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়