ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

১ লাখ টন চাল আমদানি করবে সরকার

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২৮, ৩ জানুয়ারি ২০২১  
১ লাখ টন চাল আমদানি করবে সরকার

দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে আলাদা দুটি আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জন্য ১ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করবে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৩৪৫ কোটি ৮ লাখ ৫১ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৫০ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, বাকিটা আতপ চাল। ভারত ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক দুটি প্রতিষ্ঠান চাল সরবরাহ করবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর তারিখের দৈনিক খাদ্যশস্য পরিস্থিতি প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর তারিখে সরকারি মজুদের পরিমাণ—চাল ৫.৩৭ লাখ মেট্রিক টন ও গম ২.০০ লাখ মেট্রিক টন। সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখাসহ নিরাপত্তা মজুত সুসংহত করতে আরও ১ লাখ টন চাল আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ১ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির বরাদ্দ থাকলেও অভ্যন্তরীণ বাজারদর বেশি থাকায় কাঙ্ক্ষিত সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তাই খাদ্যশস্যের নিরাপত্তা মজুদ সুসংহত করার লক্ষ্যে গত ২৮ অক্টোবর খাদ্য ক্রয় ব্যবস্থাপনা কমিটির (এফপিএমসি) সভায় ২-৩ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত হয়।

সূত্র জানায়, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডিসেম্বর মাসের ২, ৯ ও ৩০ তারিখে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি আলাদা তিনটি প্যাকেজে মোট ১ লাখ ৫০ লাখ মেট্রি টন চাল ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়। এর ধারাবাহিকতায় প্যাকেজ-৪ এর আওতায় খাদ্য অধিদপ্তর ১৪ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক কোটেশন আহ্বান করে। কোটেশনে ভারতের মেসার্স ইটিসি অ্যাগ্রো প্রসেসিং ও সিঙ্গাপুরের মেসার্স কেআরবিএল লিমিটেড অংশ নেয়।

সূত্র জানায়, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে কোটেশনে অংশগ্রহণকারী ওই দুই প্রতিষ্ঠানকে গ্রহণযোগ্য দরদাতা ঘোষণা করে। এরপর কমিটি ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল সরবরাহের জন্য দাখিল করা দরপত্রগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা মেসার্স ইটিসি অ্যাগ্রো প্রসেসিংয়ের (ভারত) উদ্ধৃত দর প্রতি মেট্রিক টন ৪০৫.৬০ মার্কিন ডলার, যা ভারত, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার ও পাকিস্তানের চালের প্রাক্কলিত দরের চেয়ে কম হওয়ায় তা গ্রহণ করার সুপারিশ করে। প্রতি মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চালের দাম ৪০৫.৬০ ডলার হিসেবে মোট ব্যয় হবে ১৭১ কোটি ৯৭ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।

এরই ধারাবাহিকতায় প্যাকেজ-০৫ এর আওতায় খাদ্য অধিদপ্তর ১৭ ডিসেম্বর ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল আমাদনির জন্য আন্তর্জাতিক কোটেশন আহ্বান করে। এতে চারটি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে কোটেশনে চারটি প্রতিষ্ঠানকে গ্রহণযোগ্য দরদাতা ঘোষণা করে। এরপর কোটেশনকৃত ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চালের জন্য দাখিলকরা দরপত্রগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা মেসার্স অ্যাগোকরপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের উদ্ধৃত দর প্রতি মেট্রিক টন ৪০৮ দশমিক ২৮ মার্কিন ডলার যা ভারত, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার ও পাকিস্তানের চালের প্রাক্কলিত দরের চেয়ে যথাক্রমে কম হওয়ায় তা গ্রহণ করার সুপারিশ করে। খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশের সঙ্গে একমত পোষণ করে তা অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠান। খাদ্য অধিদপ্তরের প্রস্তাব মতে মেসার্স অ্যাগোকরপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের প্রতি মেট্রিক টন ৪০৮ দশমিক ২৮ মার্কিন ডলার (প্রতি কেজি ৩৪ দশমিক ৬২ টাকা) দরে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল কেনার বিষয়টি বিবেচনা করার সুপারিশ করা হয়। সর্বনিম্ন এই দরদাতা তাদের দাখিল করা কোটেশনে ভারত, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার ও ভিয়েতনাম উৎসের চাল সংশ্লিষ্ট দেশের বন্দর থেকে বোঝাই করবে বলে উল্লেখ করেছে। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি মেট্রিক টন ৪০৮ দশমিক ২৮ মার্কিন ডলার হিসেবে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল কেনার জন্য ২ কোটি ৪ লাখ ১৪ হাজার মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রতি মার্কিন ডলার ৮৪ দশমিক ৮০ টাকা (সম্ভাব্য) হিসেবে মোট ১৭৩ কোটি ১১ লাখ ৭ হাজার টাকা প্রয়োজন হবে।

এ সংক্রান্ত দুটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য পরবর্তী সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়