ঢাকা     মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

কপ সম্মেলন সামনে রেখে নতুন কার্বন ক্রেডিটিং নির্দেশিকা প্রণয়ন

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩৪, ১৯ নভেম্বর ২০২৩  
কপ সম্মেলন সামনে রেখে নতুন কার্বন ক্রেডিটিং নির্দেশিকা প্রণয়ন

আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন জলবায়ু সম্মেলনকে (কপ-২৮) সামনে রেখে গুরুত্বপূর্ণ কার্বন ক্রেডিটিং নির্দেশিকায় সম্মত হয়েছে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা।

জাতিসংঘের সংস্থা প্যারিস চুক্তির অধীনে নতুন এই কার্বন ক্রেডিটিং প্রক্রিয়া চালু করার দায়িত্ব পালন করবে। এই সংস্থা গ্রিনহাউজ গ্যাস অপসারণ এবং প্রক্রিয়া পদ্ধতির বিষয়েও সুপারিশ দেবে।

কপ সম্মেলনকে সামনে রেখে শনিবার আর্টিকেল ৬.৪ সুপারভাইজরি বডি একটি ভার্চুয়াল মিটিং করে। এতে এসব দিকনির্দেশনা গ্রহণ করার জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছায়। দুবাইতে প্যারিস চুক্তির (সিএমএ) পক্ষগুলোর দ্বারা অনুমোদনের জন্য মূলত এটি উপস্থাপন করা হয়েছে৷

কপ সম্মেলনকে সামনে রেখে চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ ধরে জার্মানির বনে সদস্য রাষ্ট্রগুলো বিভিন্ন আলোচনায় বসে। এ সংক্রান্ত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে এবং ঐক্যমতে পৌঁছানোর জন্য একসাথে কাজ করেছিল। তারই প্রতিফলন এই কার্বন ক্রেডিটিং নির্দেশিকায় সম্মত হওয়া।

নতুন প্যারিস ক্রেডিটিং মেকানিজম চুক্তির লক্ষ্য কার্বন নির্গমন কমানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সহজতর করা। আগামী বছর থেকে এই চুক্তি বাস্তবায়ন শুরু হবে। তাই চলতি সপ্তাহে একটি ঐক্যমতে পৌঁছানো জরুরি ছিল বলে সংশ্লিষ্টরা মন্তব্য করেছেন।

জাতিসংঘের এই তদারকি কমিটি ব্যবস্থার অধীনে কার্বন ক্রেডিটিং পদ্ধতির বিকাশের জন্য নতুন একটি ব্যবহারিক মানদণ্ডে সম্মত হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রক্রিয়াটির ক্রিয়াকলাপের জন্য একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশক সেট হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

নতুন নির্দেশিকায় পরিবেশ, আয়োজক দেশ এবং ক্রেতাদের সমান সুযোগ দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

কার্বন ক্রেডিট হলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। কার্বন ক্রেডিট বলতে বোঝায় একটি ব্যবসা যে পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং অন্যান্য গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গত করার অনুমতি রয়েছে। সাধারণত, একটি ক্রেডিট এক টন কার্বন ডাই অক্সাইডের সমান ভর নির্গমনের অনুমতি দেয়। কার্বন ক্রেডিটের লক্ষ্য হলো কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন হ্রাস করা। যাতে শিল্প কর্মকাণ্ডের কারণে বিশ্ব উষ্ণায়নের সাপেক্ষে পরিবেশকে সহায়তা করা যায়। নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ এবং সরকার কোম্পানিগুলোর জন্য নির্গমনের একটি সীমা নির্ধারণ করে।

জাতিসংঘের নতুন পদ্ধতিতে বায়ুমণ্ডল থেকে গ্রিনহাউজ গ্যাস সরানোর নতুন লক্ষ্যমাত্রার কথা বলা হয়েছে। আসন্ন সম্মেলনে এই মাত্রার চূড়ান্ত নির্ধারণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই অপসারণ কার্যক্রম চলাকালে পর্যাপ্ত পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। যাতে সম্ভাব্য বিপর্যয় রোধে দৃষ্টি রাখা যায়। এই সুপারিশের সাথে, তদারকি কমিটি একটি বিপরীত ঝুঁকির বাফার পুল স্থাপন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। যাতে সম্ভাব্য ক্ষতি রোধ নিশ্চিত করা যায় এবং অপসারণ কার্যক্রম নিশ্চিতে একটি নিয়ন্ত্রক কাঠামো কার্যকর করা যায়।

জানা গেছে, এই তদারকি কমিটি বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে ৪০০টি পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ পায়। প্রতিটি প্রস্তাব পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করে সকল পক্ষের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। এই সিদ্ধান্ত প্রস্তাবনা আকারে আসন্ন কপ সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে চূড়ান্তভাবে অনুমোদনের জন্য।

এ বিষয়ে আর্টিকেল ৬.৪ সুপারভাইজরি বডির সভাপতি ওলগা গাসান-জাদে বলেন, গত ১৮ মাসের প্রচেষ্টায় অবশেষে আমরা গ্রিনহাউজ গ্যাস অপসারণ এবং নতুন কার্বন ক্রেডিটিং নির্দেশিকা প্রণয়নের একটি সর্বজনস্বীকৃত পদ্ধতি নির্ণয় করতে পেরেছি। আশা করছি, আগামী বছর থেকে বাস্তবায়নের কাজ শুরু করার ক্ষেত্রে একটি কাজের শুরু হলো।

ঢাকা/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়