ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব বাজেটের দাবি

প্রকাশিত: ২০:২৩, ৯ জুন ২০২২   আপডেট: ২০:৩৩, ৯ জুন ২০২২
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব বাজেটের দাবি

সৈয়দ আলমাস কবীর

‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় পরিবর্তন’ শীর্ষক ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ৬ লক্ষাধিক কোটি টাকার যে বাজেট ঘোষণা করেছে তার জন্য সরকারকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, বেসিস-এর প্রাক্তন সভাপতি ও এফবিসিসিআই পরিচালক সৈয়দ আলমাস কবীর।

তিনি স্টার্টআপের জন্য ট্যাক্স রিটার্নের পাশাপাশি সমস্ত ধরনের রিপোর্টিং-এর জন্য প্রস্তাবিত ছাড়ের ফলে তারা যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হয় তা সহজীকরণ করবে এজন্য অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোর জন্য টার্নওভার ট্যাক্স ০.৬% থেকে ০.১%-এ নামিয়ে আনা নতুন ব্যবসাগুলোর জন্য দারুন সহায়ক হবে বলে মনে করেন তিনি।

২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার পর আলমাস কবীর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, অর্থমন্ত্রী যে ডিজিটাল কারেন্সি’র স্টাডি শুরু করতে চেয়েছেন তা আমি স্বাগত জানাই। ব্লকচেইন নির্ভর ডিজিটাল কারেন্সি অর্থনীতিকে অনেক বেশি বেগবান করার পাশাপাশি স্বচ্ছতাও নিশ্চিত করবে।

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় আলমাস কবীর আরো বলেন, তবে এটা খুবই নিরুৎসাহজনক যে, সকল ডিজিটাল কর্মকাণ্ডের প্রাথমিক উপাদান হওয়া সত্ত্বেও ইন্টারনেট সেবাকে আইটিইএস-এর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তাব করা সত্ত্বেও বাজেট বক্তৃতায় পাওয়া যায়নি। ইন্টারনেট সেবা আইটিইএসের অন্তর্ভুক্ত হলে তা ১০% AIT সহ আইএসপিগুলোকে কর্পোরেট ট্যাক্স থেকে অব্যাহতি দেবে এবং ব্যবহারকারীদের জন্য ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটকে উল্লেখযোগ্যভাবে সস্তা করে তুলবে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সম্প্রসারণের ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাবে। সাশ্রয়ী মূল্যের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ডিজিটাল বাণিজ্য, আইসিটি ফ্রিল্যান্সিং, আইটিইএস রপ্তানি ইত্যাদি সহ নতুন নতুন ব্যবসা তৈরি করতে সহায়তা করবে।

এছাড়াও আমদানিকৃত ল্যাপটপ, কম্পিউটার প্রিন্টার এবং টোনার কার্টিজের উপর ১৫% ভ্যাট প্রবর্তন অটোমেশনের বৃদ্ধি ও প্রসারকে সীমিত করবে।

সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের চেতনায় এই বাজেট প্রণয়ন করবেন বলে তিনি আশাবাদী ছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত, মোবাইল ব্যাংকিং, রাইড-শেয়ারিং ইত্যাদি সহ মোবাইল-ভিত্তিক পরিষেবাগুলিতে অতিরিক্ত ভ্যাট এর বিপরীত বলে প্রতীয়মান। কো-ওয়ার্কিং স্পেসের উপর ৫% ভ্যাটও উদ্যোক্তা এবং স্টার্টআপদের জন্য বোঝাস্বরূপ হয়ে দাড়াবে বলে মনে করেন তিনি।

আলমাস কবীর বলেন, বিদেশি প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য টাক্স রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে তা আমি স্বাগত জানাই। একই সঙ্গে তারা যে দেশে নিবন্ধিত সেই দেশের সঙ্গে আমাদের ডাবল ট্যাক্সেশন চুক্তি থেকে থাকে তা যেন সাংঘর্ষিক না হয় সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

আলমাস কবীর আশা করেছিলেন যে, সরকার স্থানীয় আইটি শিল্পকে উত্সাহিত করতে এবং বিদেশি সফটওয়্যার ও পরিষেবাগুলোর তুলনায় প্রতিযোগিতামূলক করতে আইটিইএস-এর উপর ১০% AIT এবং সফটওয়্যারের উপর ৫% ভ্যাট মওকুফ করবে। কিন্তু এর কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি৷ ডিজিটাল পেমেন্টের উপর প্রস্তাবিত প্রণোদনা আমাদেরকে ক্যাশলেস অর্থনীতির নবদিগন্তের সূচনা করত, কিন্তু এমন কোনো প্রণোদনাও দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমে ১২% ভ্যাটের বোঝা চাপানো হয়েছে।

সরকার সত্যিকার অর্থে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের প্রত্যাশিত উন্নয়নের লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তির খাতের সংগঠনগুলোর প্রস্তাবসমূহ বাজেট অধিবেশনে আলোচনার মাধ্যমে বিবেচনা করবে এবং সত্যিকার অর্থে অন্যান্য খাতের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্যও একটি ব্যবসা ও বিনিয়োগ বান্ধব বাজেট জাতিকে উপহার দেবে বলে প্রত্যাশা তার। এ বিষয়ে সরকারের নীতিনির্ধারক মহলে বিষয়টি তুলে ধরার ব্যাপারে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের ইতিবাচক ভূমিকা ও আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বারের সভাপতি ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) প্রাক্তন সভাপতি আলমাস কবীর।

/ফিরোজ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ