ডমিঙ্গোর ভবিষ্যত কী?
বাংলাদেশের ক্রিকেটে রাসেল ডমিঙ্গো আলোচিত-সমালোচিত এক নাম। তার টিকে থাকা নিয়ে কখনো কোনো মঞ্চে আলোচনা হয় না। আলোচনা হয় তার বিদায় নিয়ে। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটে কাজ করছেন। এ পর্যন্ত অনেকবারই তাকে প্রায় বিদায় করে দিয়েছিল অনেকে। এই অনেকের মধ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালকদের একাংশও আছেন। আছে গণমাধ্যমও।
কিন্তু, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে সরিয়ে দেয়নি এখনও। উল্টো ব্যর্থতার মিছিলে থেকেও চুক্তি নবায়ন করেছে। আবার টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে অবনমনও করিয়েছে। তার বিদায় নিয়ে আলোচনাটা তখনই উঠে যখন, জাতীয় দল মাঠে নিজেদের মেলে ধরতে ব্যর্থ হয়।
ভারত সিরিজের স্মৃতি এখনো তরতাজা। ওয়ানডেতে ভারতকে ২-১ ব্যবধানে হারানোর পর কোনো টু শব্দও নেই। টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধানে হারের পর ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের কাছে প্রশ্ন যায়, ‘কোচিং স্টাফরা কী করছেন? তাদের পরিবর্তন হচ্ছে না কেন?’ দলের ব্যর্থতার সব দায় কোচিং স্টাফদের একার কি হতে পারে? সেই অবান্তর প্রশ্নের উত্তরও মিলেছে এভাবে, ‘আমাদের একজন কোচ দরকার, যে টেস্ট ক্রিকেটের জন্য ভালো। ওয়ানডেতে আমরা ভালোই করছি। সেটার দিকে তাও নজর রাখা দরকার। কারণ, বিশ্বকাপ খুবই কাছে, ২০২৩ সালে। এটির দিকে নজর রাখতে হবে। পাশাপাশি, আমরা চাই টেস্ট দলের টিম ম্যানেজমেন্টে যারা থাকবেন, তারা যেন ইম্প্যাক্ট রাখতে পারেন।’
দলের পরাজয়ে আবার কাঠগড়ায় রাসেল ডমিঙ্গো। সেজন্য তার বিদায় নিয়ে আলোচনা আবার ডালপালা মেলতে শুরু করেছে। এবার বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কোর্টে প্রশ্ন। আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানানোর আগে বোর্ড সভাপতি প্রায়ই দুই রকম কথা বলেন। তা নতুন নয়। এবারও তাই করলেন। ডমিঙ্গোকে নিয়ে শুরুতে এক প্রশ্নে বলেছেন, ‘বোর্ড সন্তুষ্ট।’ পরবর্তীতে আরেক প্রশ্নের উত্তরে মিলেছে, ‘পরিবর্তন আসবে। সামনেই দেখতে পারবেন।’ এই সন্তুষ্ট-পরিবর্তনের ফাঁকে যদি-কিন্তুর অনেক দোলাচাল।
বিসিবি সভাপতি সেসব অবশ্য ভাঙতে পারেননি। রাজধানীর ধানমন্ডিতে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ডমিঙ্গোকে প্রশংসায় ভাসিয়ে বলেছেন, ‘পারফরম্যান্স যদি দেখেন, তাহলে ডমিঙ্গোর সময় অনেক রেকর্ড হয়েছে। হাথুরুসিংহের সময় আমরা ঘরের মাঠে জেতা শুরু করেছিলাম। ডমিঙ্গোর সময় বাংলাদেশ দেশের বাইরে জেতা শুরু করেছে। আর দেশের মাটিতে নিউ জিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াকেও হারিয়েছে দল। ফলাফল চিন্তা করলে তো তার পাল্লাটা ভারী। আমরা তার পারফরম্যান্সে খুশি।’
বোর্ড সভাপতি ঠিক উল্টো, যখন পরিবর্তনের প্রসঙ্গটা আসে। তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে ভাবছি না। আমরা একটা পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি। শর্ট টার্ম নয়, লং টার্ম পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি। তিন-চার বছরের পরিকল্পনা। এটার জন্য যদি পরিবর্তন দরকার হয়, তাহলে পরিবর্তন আসবে।’
আপাতত বাংলাদেশের খেলা নেই। তাই, ডমিঙ্গোর বিদায় নিয়ে আলোচনাটা এখনই সবচেয়ে বেশি হবে। তাকে বিদায় দিয়ে নতুন কোচ খুঁজতেও পারে বোর্ড। আবার তাকে জাতীয় দলের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে অন্য কোনো পদেও রাখতে পারে।
ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশে আসবে ইংল্যান্ড। তিন ওয়ানডে ও তিন টি-টোয়েন্টির সিরিজ শুরু হবে ১ মার্চ। টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব সামলাতে এর আগেই যোগ দেবেন শ্রীধরণ শ্রীরাম। তাকে ওয়ানডের দায়িত্ব দিলেও অবাক হওয়ার থাকবে না।
ইয়াসিন/রফিক