ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘আমার ক্রিকেট ভক্তদের সবাইকে মন দিলাম’ 

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০৯, ২৮ মে ২০২৩   আপডেট: ২৩:০১, ২৮ মে ২০২৩
‘আমার ক্রিকেট ভক্তদের সবাইকে মন দিলাম’ 

সবুজ মাঠে ট্রাউজার-জার্সিতে দাপিয়ে বেড়ানো নিগার সুলতানা জ্যোতিকে পাওয়া গেল একেবারে ভিন্ন রূপে। লাল সুতি শাড়িতে আলো ছড়ালেন ঝলমলে এক অনুষ্ঠানে। শুধু আলো ছড়ালেন-ই না, ক্রিকেটের পাশাপাশি নিজের গায়কি সত্ত্বাও পরিবেশন করলেন ক্রীড়াঙ্গনের এক মিলনমেলায়।

বিএসপির বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার গাইলেন সাবিনা ইয়াসমিনের কালজয়ী গান, ‘এই মন তোমাকে দিলাম।’ গান শেষ করতেই করতালি পড়ে পুরো  অনুষ্ঠানে। এর আগে সাবিনার হাতে তুলে দেওয়া হয় বর্ষসেরা নারী ক্রিকেটারের পুরস্কার।

যে কোনো প্রাপ্তি বড় আনন্দের। সঙ্গে বড় মঞ্চে গান গেয়ে নিগার দিনটিকে করেছেন আরো রঙিন। পুরস্কার হাতে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নিজের উচ্ছ্বাসও প্রকাশ করেছেন। তার কথা শুনেছে রাইজিংবিডি,

এমন পুরষ্কারের অনুভূতি কেমন?

নিগার সুলতানা: আমি এই প্রথম পুরষ্কারটা পেয়েছি। আমি মনে করি এই পুরষ্কার প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের জন্যই বড় অর্জন অবশ্যই। আর বিএসপিএকে ধন্যবাদ আমাকে মনোনীত করার জন্য। 

গান তো সুন্দর গাইলেন?

নিগার সুলতানা: হ্যাঁ গানটা অবশ্যই মজার একটা বিষয় ছিল। গান আমি ছোটবেলা থেকে গাই। আমার আব্বু-আম্মু শিখিয়েছে। বেসিক্যালি ক্রিকেটে ঢোকার পর সেভাবে চর্চাটা হয়নি। কিন্তু উনারা...গত বছরও একটা প্রোগ্রাম ছিল ফাহিম স্যারের সাথে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেটের জন্য গানটা গাইতে পারিনি। তবে এবার উনারা অনেক জোর করে ধরলেন, গাইতেই হবে। তো চেষ্টা করেছি ভালো করে গাওয়ার জন্য।

গানের চর্চা হয়?

নিগার সুলতানা: আসলে ফেসবুকে গান গাইতাম, টুকটাক দুই একটা লাইন। তবে এবার পুরোটা গাইতে পেরেছি। আমি জানিনা কেমন লেগেছে সবার। কিন্তু আমি চেষ্টা করেছি নিজের সেরাটা দেওয়ার।

গানে গানে বললেন এই মন তোমাকে দিলাম। কারে মন দিলেন?

নিগার সুলতানা: এটা ক্রিকেটের উদ্দেশে। আমার ক্রিকেট ভক্তদের সবাইকে মন দিলাম (হাসি)। বেসিক্যালি গানটা অনেক সুন্দর, হয়তো বা আমার কণ্ঠের সাথে গিয়েছে। এ জন্য গানটা বেছে নেওয়া। আর এই গানটা সবাই গাইতে পারে। গুনগুন করে, বাসায়। তো এ জন্যই  বেছে নেওয়া, এটা কমন গান।

প্রিমিয়ার লিগ কেমন যাচ্ছে?

নিগার সুলতানা: আপনারা হয়তোবা জানেন প্রথম ম্যাচে আমার একটা সেঞ্চুরি এসেছে। তাই বলবো উইকেট ভালো। কিন্তু এখনকার যে মৌসুম, বৃষ্টি আসতেছে। যার কারণে গত ম্যাচটাও ১-১ পয়েন্ট ভাগাভাগি হয়েছে কলাবাগানের সাথে। যেটা আমার কাছে মনে হয়েছে  দুঃখজনক। কারণ এবার ম্যাচের সংখ্যা অনেক কম। দুইটা দল নাম প্রত্যাহার করায় ম্যাচের সংখ্যা খুবই কম। এখানে সুপার লিগেরও কোনো ব্যবস্থা নেই। যার কারণে সব মিলিয়ে সুযোগ সুবিধা তো ভালো পাচ্ছি কিন্তু প্রকৃতির উপর তো কারও হাত নেই। যখনই আমরা মাঠে নামি তখন যেন আমার দল রূপালী ব্যাংক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে খেলি। 

ভারত আসছে খেলতে। কি ভাবছেন?

নিগার সুলতানা: আমরা কিন্তু এখন ওয়ার্ল্ড কাপ চ্যাম্পিয়নশিপের অধীনে চলে আসছি। আমাদের প্রত্যেকটা দ্বিপাক্ষিক সিরিজ কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে যত পয়েন্ট অর্জন করতে পারবো তত ২০২৫ বিশ্বকাপ খেলা সহজ হয়ে যাবে। ২০২৫ বিশ্বকাপ খেলতে হলে আমাদের এখন থেকে অন্তত ৪ টা পয়েন্ট নিতে হবে। কারণ নিউজিল্যান্ডের সাথে খেলেছি সেখানে আমরা দুইটা পয়েন্ট পেয়েছি। পাশাপাশি শ্রীলঙ্কায় আমরা পয়েন্ট পেয়েছি দুই। ভারত তো আমাদের অবশ্যই চিন্তা ভাবনায় থাকবে। কারণ এশিয়ার দল, শক্তি আমাদের তো বরাবরই...এ ছাড়া ঘরের মাঠে খেলা অবশ্যই আমাদের এগিয়ে রাখব।

আপনার স্ট্রাইক রেট ভালো, বাকিদের কি অবস্থা?

নিগার সুলতানা: দেখেন আমরা কিন্তু বরাবরই স্ট্রাইক রেটের জন্য সংগ্রাম করি, ছেলেরা বলেন মেয়েরা বলেন।  বেসিক্যালি ক্রিকেট এখন অনেক আপডেট হয়েছে, দেখা যাচ্ছে ৫০ বলেও সেঞ্চুরি হচ্ছে টি-টোয়েন্টিতে। আমার কাছে মনে হয় ওয়ানডেতে কেন হবে না? এই দিকটা থেকে আমরা দুই একজন ব্যাটসম্যান যদি উন্নতি করতে পারি, আমার কাছে মনে হয় পুরো দলটার চরিত্র কিন্তু বদলে যাবে। ছেলেদের দলেও অনেকে মানিয়ে নিচ্ছে। এখনো পর্যন্ত আমাদের কোচিং স্টাফ থেকে যে পরিকল্পনা , আমরা যদি অন্তত ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে এই সংস্কৃতি শুরু করি। দাপট দেখিয়ে খেলি, অল্প বলে বেশি রান করার যে অভ্যাস তা এখান থেকে শুরু হলে আমার কাছে মনে হয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলাটা সহজ হবে।

ঢাকা/ইয়াসিন/রিয়াদ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়