ঢাকা     মঙ্গলবার   ২০ মে ২০২৫ ||  জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩২

কালবৈশাখী ঝড়ের পর আলোকস্বল্পতায় স্থগিত ফেডারেশন কাপের ফাইনাল

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২০, ২২ এপ্রিল ২০২৫   আপডেট: ১৯:২১, ২২ এপ্রিল ২০২৫
কালবৈশাখী ঝড়ের পর আলোকস্বল্পতায় স্থগিত ফেডারেশন কাপের ফাইনাল

ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদার আসর ফেডারেশন কাপের ফাইনাল ম্যাচে সৃষ্টি হলো এক নজিরবিহীন ঘটনা। কালবৈশাখীর তাণ্ডবের পর এবার আলোর অভাবে অসমাপ্ত রইল শিরোপা লড়াই। ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে আবাহনী লিমিটেড ও বসুন্ধরা কিংসের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচে উত্তেজনা যেমন ছিল তুঙ্গে। তেমনি বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রকৃতি ও অব্যবস্থাপনা।

ম্যাচের শুরুটা ছিল একদম ঠিকঠাক। রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়ায় জমে উঠেছিল লড়াই। প্রথমার্ধে দুই দলই একটি করে গোল করে সমতায় ছিল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র দুই মিনিটের মাথায় হঠাৎ করেই আকাশ কালো করে আসে। শুরু হয় তীব্র কালবৈশাখী ঝড়। সঙ্গে বজ্রপাতের শঙ্কা। খেলার দায়িত্বে থাকা রেফারি সায়মন হাসান সানি খেলা তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেন। ঝড়ের তীব্রতায় উড়ে যায় দুই দলের ডাগআউট টেন্ট, সাংবাদিকদের অস্থায়ী প্রেসবক্সও। গ্যালারিতে কোনো ছাউনি না থাকায় দর্শকরাও নিরাপত্তার খোঁজে মাঠে নেমে আসেন।

প্রায় এক ঘণ্টা পর খেলা আবার শুরু হলেও মাঠ তখনও কাদা-পানিতে একাকার। আধুনিক ড্রেনেজ সিস্টেম কিংবা দক্ষ গ্রাউন্ড স্টাফের অভাবে পানি সরাতে মাঠে নামেন খেলোয়াড়, কোচ, এমনকি কর্মকর্তারাও। ডাগআউট না থাকায় খেলোয়াড়দের বসতে হয় সাধারণ প্লাস্টিক চেয়ারে। মাঠের এক পাশে জমে থাকা পানিতে আক্রমণ শানাতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ে আবাহনী। আর অপর পাশে অপেক্ষাকৃত শুষ্ক স্থানে বারবার আক্রমণে উঠে আসে কিংস। তবে সেই কাদামাটিতে সবচেয়ে বড় সুযোগটি নষ্ট করেন কিংসের সোহেল রানা।

আরো পড়ুন:

নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে ১-১ গোলে সমতা থাকায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। কিন্তু এখানেই বাধে বিপত্তি। স্টেডিয়ামে নেই কোনো ফ্লাডলাইট। ফলে সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে অন্ধকারে ঢেকে যায় মাঠ। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধ শেষ হলেও আলোকস্বল্পতার কারণে দ্বিতীয়ার্ধ আর শুরু করতে পারেননি রেফারি। ম্যাচ স্থগিত ঘোষণা করা হয়। পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করবে বাফুফের লিগ কমিটি।

এই ফাইনালের নাটকীয়তায় শেষ রঙ মেশান কিংসের মিডফিল্ডার ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের একেবারে শেষ দিকে আবাহনীর এক খেলোয়াড়কে পেছন থেকে লাথি মেরে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন তিনি। এতে দশ জনের দলে পরিণত হয় কিংস। যার প্রেক্ষিতে আবাহনী আপত্তি তোলে খেলা স্থগিতের সিদ্ধান্তে।

এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ঘরোয়া ফুটবলে আবারও প্রশ্ন উঠে গেল— আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানা সত্ত্বেও কেন দিনের আলোয় ফাইনাল সম্পন্নের যথাযথ প্রস্তুতি ছিল না? কেন আজও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত দেশের মাঠগুলো?

শিরোপার নিষ্পত্তি এখন সময়ের অপেক্ষা। তবে এই ফাইনাল ম্যাচ নতুন করে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে ঘরোয়া ফুটবলের কাঠামো ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে। যা দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলার শিকার। আর দর্শকদের মনে প্রশ্ন—এভাবে কি একটানা টুর্নামেন্ট চালিয়ে যাওয়া সম্ভব?

ঢাকা/আমিনুল


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়