নারী ফুটবলে বাংলাদেশ নতুন উচ্চতায়

লড়াইটা ছিল মাঠে, কিন্তু তার প্রতিফলন দেখা গেল বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের পাতায়। আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে জোর প্রতিরোধ গড়ে তুলেই বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল পেয়েছে মর্যাদার স্বীকৃতি। ছয় বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো এতটা ওপরে উঠল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
শেষ ফিফা উইন্ডোতে ত্রিদেশীয় এক টুর্নামেন্টে অংশ নেয় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। শক্তিমত্তার বিচারে যারা অনেক ওপরে সেই ইন্দোনেশিয়া ও জর্ডানের বিপক্ষে ড্র করে প্রমাণ দেয় তাদের বিকাশমান ফুটবল সামর্থ্যের। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, এই সাহসী পারফরম্যান্সই দারুণ প্রাপ্তির সূত্রপাত।
ফিফার সদ্য প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ উঠে এসেছে ১২৮তম স্থানে। আগের তুলনায় পাঁচ ধাপ এগিয়ে। ১০৯৯.৩৬ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে এবার যেন নিজেদের নতুন উচ্চতায় খুঁজে পাচ্ছে তারা। ৭.৫৫ পয়েন্ট বাড়ানো রেটিংয়ের মাধ্যমে ফুটবলের মহাকাব্যে নিজের শক্ত অবস্থান জানান দিয়েছে এই দলটি।
জর্ডানে অনুষ্ঠিত ম্যাচ দুটো ছিল পরীক্ষার। আর সেখানেই উত্তীর্ণ আফঈদা খন্দকার, মাসুরা পারভীনরা। প্রথমে ৩১ মে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ১-১ গোলের ড্র এবং পরে ৩ জুন জর্ডানের বিপক্ষে ২-২ সমতা। দুই ম্যাচেই দেখা গেছে প্রতিরোধের পরিণত রূপ। কোচ পিটার বাটলারের পরিকল্পনায় এ এক নতুন বাংলাদেশ।
২০১৯ সালে ১২৭তম স্থানে থাকলেও সময়ের সঙ্গে রেটিংয়ে নেমে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ২০২২ সালে একসময় নেমে যায় ১৪৭ নম্বরে। যা ছিল নারী ফুটবলের ইতিহাসে তাদের সর্বনিম্ন অবস্থান। তবে অতীতের ঘুরে দাঁড়ানোর চিত্রও আছে। ২০১৩ ও ২০১৭ সালে একবার করে বাংলাদেশ উঠেছিল ১০০ নম্বরে, যা এখনও রয়ে গেছে সর্বোচ্চ র্যাঙ্ক হিসেবে।
বাংলাদেশের সঙ্গে ড্র করা ইন্দোনেশিয়া এবার পিছিয়ে গেছে এক ধাপ, অবস্থান এখন ৯৫। একইভাবে জর্ডানও নেমে গেছে ৭৫ নম্বরে। অথচ দুটো দেশই র্যাঙ্কিংয়ে অনেকটা এগিয়ে থাকা দল। এভাবে বাংলাদেশ কেবল পয়েন্টই বাড়ায়নি, দেখিয়ে দিয়েছে তারা এখন ছোট কোনো প্রতিপক্ষ নয়।
এই র্যাঙ্কিংয়ের উত্থান বাংলাদেশকে দিচ্ছে আত্মবিশ্বাসের টনিক। সামনে রয়েছে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের বড় পরীক্ষা। ২৩ জুন থেকে মিয়ানমারে শুরু হচ্ছে এই আসর। যেখানে বাংলাদেশ খেলবে মিয়ানমার, বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে। থুউনা স্টেডিয়ামে আয়োজিত প্রতিটি ম্যাচে একটাই লক্ষ্য গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে মূল পর্বে জায়গা করে নেওয়া।
ঢাকা/আমিনুল