ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বাংলাদেশ সফরে রহস্যময় অসুস্থতার কথা জানালেন তিলক

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২৪, ২৪ অক্টোবর ২০২৫   আপডেট: ১৮:৩০, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
বাংলাদেশ সফরে রহস্যময় অসুস্থতার কথা জানালেন তিলক

ক্রিকেট মাঠে কখনও কখনও এমন কিছু ঘটে, যা কেবল খেলার গল্প নয়, একজন মানুষের জীবনের গল্প হয়ে ওঠে। ভারতের তরুণ ব্যাটার তিলক ভার্মার জীবনে এমনই এক অধ্যায় রচিত হয়েছিল ২০২২ সালের বাংলাদেশ সফরে। ম্যাচ চলাকালীন হঠাৎই শরীর সাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেয়, আঙুল নাড়ে না, ব্যাট ধরতে পারেন না। সেই মুহূর্তে কেউ জানত না, তিনি এমন এক বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, যা সময়মতো চিকিৎসা না হলে প্রাণঘাতী হতে পারত।

বাংলাদেশে ভারত ‘এ’ দলের হয়ে খেলছিলেন তিলক। কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত চার দিনের ম্যাচে শতরানের লক্ষ্যে এগোচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ চোখ ঝাপসা হয়ে যায়, শরীর অবশ হয়ে আসে। আঙুল নড়াতে না পারায় মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে। পরে জানা যায়, তার দেহে ধরা পড়েছে র‌্যাবডোমায়োলাইসিস নামের এক বিরল রোগ। যেখানে শরীরের পেশি ভেঙে ক্ষতিকর উপাদান রক্তে মিশে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি ঘটাতে পারে।

আরো পড়ুন:

পরিস্থিতির ভয়াবহতা বুঝে দ্রুত পদক্ষেপ নেন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের মালিক আকাশ আম্বানি ও বিসিসিআই সচিব জয় শাহ। তাদের ব্যবস্থাপনাতেই তিলককে জরুরি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানান আর কয়েক ঘণ্টা দেরি হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারত। ইনজেকশন দেওয়ার সময় সুচ ভেঙে যাওয়ায় অবস্থা আরও জটিল হয়েছিল। তবে মায়ের উপস্থিতিই তাকে মানসিকভাবে ভরসা দিয়েছিল।

সম্প্রতি ভারতীয় সঞ্চালক গৌরব কাপুরের ইউটিউব শো ‘ব্রেকফাস্ট অব চ্যাম্পিয়ন্স’-এ উপস্থিত হয়ে সেই ভয়ংকর সময়ের স্মৃতি শেয়ার করেন তিলক ভার্মা। তিনি বলেন, “আইপিএলের প্রথম মৌসুম শেষে আমি ফিট থাকতে চাইছিলাম। কিন্তু হঠাৎ শরীরে সমস্যা দেখা দিল। বাংলাদেশে ব্যাট করছিলাম, তখন মনে হচ্ছিল শরীরটা জমে যাচ্ছে। আঙুল নড়ছিল না, ব্যাটও তুলতে পারছিলাম না। গ্লাভস পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়েছিল।”

চিকিৎসা ও বিশ্রামের দীর্ঘ সময় পার করে এখন সম্পূর্ণ সুস্থ তিলক। আবারও নিয়মিত ক্রিকেট খেলছেন, মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে আইপিএলেও আলো ছড়াচ্ছেন। তবে সেই বাংলাদেশ সফরের অভিজ্ঞতা তাকে জীবন সম্পর্কে নতুন উপলব্ধি দিয়েছে, “ওই সময়টা না কাটালে হয়তো বুঝতামই না, শরীর ও মানসিক শক্তি কতটা মূল্যবান।”

কী এই র‌্যাবডোমায়োলাইসিস?
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, এই রোগে পেশির টিস্যু দ্রুত ভেঙে ক্ষতিকর উপাদান রক্তে মিশে যায়, যা কিডনির জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। অতিরিক্ত গরমে খেলা, পানিশূন্যতা ও অতিরিক্ত পরিশ্রম এই রোগের প্রধান কারণ।

বাংলাদেশ সফরে মাঠে অজ্ঞান হওয়ার সেই দিনটি হয়তো চিরকাল মনে থাকবে তিলক ভার্মার জীবনে। যে দিন এক তরুণ ক্রিকেটার ব্যাট হাতে নয়, জীবনের বিপক্ষে লড়েছিলেন সাহসিকতার সঙ্গে। 

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়