বল হাতে অ্যালানার ইতিহাস, দ. আফ্রিকাকে উড়িয়ে শীর্ষেই রইল অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ার লেগ স্পিনার অ্যালানা কিং গড়লেন নারী বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেরা বোলিং রেকর্ড। ইন্দোরে আজ শনিবার (২৫ অক্টোবর) দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিনি মাত্র ১৮ রানে নেন ৭ উইকেট। যা বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথম কোনো সাত উইকেটের কীর্তি। তার ঘূর্ণি তোপে ২৪ ওভারে মাত্র ৯৭ রানেই গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ১৬.৫ ওভারেই ৩ উইকেটে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া।
এই কীর্তির মধ্য দিয়ে কিং ভেঙে দেন নিউ জিল্যান্ডের জ্যাকুলিন লর্ডের ১৯৮২ সালে ভারতের বিপক্ষে করা ৬ উইকেটের পুরনো রেকর্ডটি। ম্যাচ সেরার পুরস্কার হাতে নিয়ে কিং বলেন, “উইকেট থেকে কিছুটা টার্ন আশা করেছিলাম। কিন্তু যতটা আদায় করতে পেরেছি, তাতে আমি খুশি। সবসময় উইকেট না পেলেও আমি জানি, দলে ভিন্ন ভূমিকা রাখতে পারি। শেষ কয়েক ম্যাচে শুধু প্রান্ত ধরে রাখার কাজ করেছি, আজ অস্ট্রেলিয়ার জন্য কাজটা সম্পন্ন করতে পেরে দারুণ লাগছে।”
এটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর। তাদের হয়ে অধিনায়ক লরা উলভ্যার্ট করেন সর্বোচ্চ ৩১ রান।
জবাবে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের মেরুদণ্ড ছিলেন বেথ মুনি (৪২) ও জর্জিয়া ভল (৩৮ অপরাজিত)। তাদের ব্যাটে সহজ জয় তুলে নেয় সাতবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। যাদের ঝুলিতে এখন রয়েছে টানা ১৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড।
এই জয়ে অস্ট্রেলিয়া লিগ পর্ব শেষ করল ছয় জয় ও এক ‘নো রেজাল্ট’ নিয়ে শীর্ষে থেকে। তারা সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক ভারতের, নাবি মুম্বাইয়ে আগামী বৃহস্পতিবার।
দক্ষিণ আফ্রিকা আপাতত দ্বিতীয় স্থানে আছে পাঁচ জয় নিয়ে। তবে ইংল্যান্ড যদি রোববার বিশাখাপত্তনমে নিউ জিল্যান্ডকে হারাতে পারে, তবে প্রোটিয়ারা নেমে যেতে পারে তৃতীয় স্থানে। সেদিনই বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের মধ্য দিয়ে শেষ হবে লিগ পর্বের খেলা।
ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খারাপ ছিল না দক্ষিণ আফ্রিকার। ওপেনার তাজমিন ব্রিটস ও অধিনায়ক উলভ্যার্ট যোগ করেন ৩২ রান। কিন্তু এরপরই শুরু হয় ধস।
মেগান শুট ফেরান উলভ্যার্টকে, আর কিম গার্থ বোল্ড করেন ব্রিটসকে (৬)। এরপর নামেন অ্যালানা কিং এবং শুরু হয় প্রোটিয়াদের পতন। ৪২-২ থেকে ৬ ওভারে দল নেমে যায় ৬০-৬-এ! কিং সেই সময়টায় নেন টানা চার উইকেট, তাও বিনা রানে!
১২তম ওভারে তিনি এক ওভারেই ফেরান সুনে লুয়েস (৬) ও মারিজান ক্যাপকে (০)। এরপর ১৬তম ওভারে আরও দুটি পরপর বলে। আনরি ডের্কসেনকে বোল্ড আর ক্লোয়ি ট্রায়নকে শূন্যতে ক্যাচ করান। হ্যাটট্রিক হাতছাড়া হলেও ১৮তম ওভারে ফেরান সিনালো জাফতাকে (১৭ বলে ২৯)। ২০তম ওভারে মসাবাতা ক্লাসকে বোল্ড করে তিনি হয়ে যান প্রথম অস্ট্রেলীয় নারী ক্রিকেটার, যিনি বিশ্বকাপে ছয় উইকেট নিয়েছেন। শেষ উইকেট হিসেবে নাদিন ডি ক্লার্ককে (১৪) ফেরান তিনি। আর তাতেই শেষ হয় প্রোটিয়াদের ইনিংস। আর এ স্পেলের মাধ্যমে কিং ভেঙে দেন সতীর্থ এলিস পেরির ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করা ৭-২২ রেকর্ডও।
মাত্র ৯৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে লিচফিল্ড (৫) ও পেরি (০) দ্রুত ফিরলেও ভল ও মুনি ৬৫ বলে ৭৬ রানের জুটি গড়ে অস্ট্রেলিয়াকে পৌঁছে দেন জয়ভূমিতে।
এই জয় অস্ট্রেলিয়ার কাছে দক্ষিণ আফ্রিকার টানা নবম পরাজয়। এখনো পর্যন্ত প্রোটিয়ারা একবারও হারাতে পারেনি বিশ্বকাপের সাতবারের চ্যাম্পিয়নদের।
ঢাকা/আমিনুল