ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

হুমায়ূনের হিমু, মিসির আলি, শুভ্র (সমাপ্তি পর্ব)

মুম রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০১, ১৬ নভেম্বর ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হুমায়ূনের হিমু, মিসির আলি, শুভ্র (সমাপ্তি পর্ব)

মুম রহমান : শুভ্র চরিত্রটি পাঠক প্রথম দেখতে পায় ‘দারুচিনি দ্বীপ’ উপন্যাসের মাধ্যমে। ১৯৯১ সালে অনুপম প্রকাশনী উপন্যাসটি প্রকাশ করে। ‘রূপালী দ্বীপ’ উপন্যাসে বলা আছে, ‘মানুষের প্রোগ্রাম ছাড়া কিছু অংশ থাকা দরকার। যে অংশে আগেভাগে কিছু ভাবা হবে না- যা হবার হবে।’ শুভ্র সংক্রান্ত হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় উপন্যাসের এই লাইনটি শুভ্র উপন্যাসের জন্য প্রযোজ্য। শুভ্রকে নিয়ে লেখা ছয়টি উপন্যাসেই এমন কিছু বিচ্ছিন্নতা বা অসংগতি লক্ষ্য করা যায় যা পূর্ব পরিকল্পনার অভাবই মনে হয়।

 

শুভ্রকে লেখক সৃষ্টি করেছেন শুদ্ধতম মানুষ হিসেবে। এটুকু পরিস্কার বোঝা যায় শুভ্র প্রতিটি উপন্যাসে পড়ুয়া মানুষ, সে কোনো পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়নি। তার চোখ ক্রমশ অন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সে ভীষণ সুদর্শন তরুণ! বাবার অঢেল সম্পত্তি আছে। মানুষ হিসেবে শুভ্র যে কোনো সময় যে কারো সহায়তার জন্য প্রস্তুত।

 

‘দারুচিনি দ্বীপ’ উপন্যাসে শুভ্র তার বাবাকে জানায়, ‘বন্ধু-বান্ধবরা আমাকে ডাকে কানা-বাবা। চোখে কম দেখি তো এই জন্যে।’ জরীর ভাষ্য থেকে অবশ্য জানা যায় মেয়েরা তাকে ডাকে ‘The learned blind father.’ শুভ্র তার আগত অন্ধত্বকে সহজভাবেই গ্রহণ করেছে। সে প্রায়শই ভারী চশমা খুলে এলোমেলো ঝাপসা ছবি দেখে। চশমা ছাড়া চলাফেরা এমনকি কফি বানানোর চেষ্টা করে।

 

দারুচিনি দ্বীপ উপন্যাস যেখানে শেষ হয়েছে সেখান থেকেই ‘রূপালী দ্বীপ’ উপন্যাসের শুরু। প্রস্তাবনা অংশে লেখক হুমায়ূন আহমেদ বলছেন, ‘চার বছর আগে জানুয়ারি মাসের এক প্রচণ্ড শীতের রাতে একুশ বছর বয়েসী একদল ছেলেমেয়ে নিয়ে একটা উপন্যাস লিখতে বসেছিলাম। উপন্যাসের নাম ‘দারুচিনি দ্বীপ।’ সেই উপন্যাসে একদল ছেলেমেয়ে ঠিক করল, তারা দল বেঁধে বেড়াতে যাবে প্রবাল দ্বীফ সেন্ট মার্টিনে। সেখানে কাটাবে পূর্ণচন্দ্রের একটি অপূর্ব রাত। আমি উপন্যাসের শেষ করব জোছনার সুন্দর একটা বর্ণনা দিয়ে।

 

পাত্র-পাত্রীদের আমি কিন্তু প্রবাল দ্বীপে নিতে পারিনি। তার আগেই উপন্যাস শেষ করতে হয়েছে। কারণ আমি নিজে তখনো দ্বীপে যাইনি। স্বপ্নের সেই দ্বীপ কেমন আমি জানতাম না। এখন জানি সেই অপূর্ব দ্বীপে আমি নিজে এক টুকরো জমি কিনে কাঠের একটা ছোট্ট ঘর বানিয়েছি। তার নাম দিয়েছি- ‘সমুদ্র বিলাস।’ ফিনাক ফোটা জোছনায় আমি দেখেছি জ্বলন্ত সমুদ্র-ফেনা। আহা, কী দৃশ্য! সেই প্রায় পরাবাস্তব ছবি দেখতে দেখতে মনে হয়েছে, ঐ তরুণ-তরুণীদের শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাই না সমুদ্রের কাছে।’

 

উল্লেখ্য শুভ্র ও তার বন্ধুদের সেন্ট মার্টিনস আইল্যান্ডে যাওয়ার প্রস্তুতি ও যাত্রা শুরু দিয়ে দারুচিনি দ্বীপ এবং যাত্রা পথে নানা বিপত্তি পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত দ্বীপে পৌঁছানো নিয়ে ‘রূপালী দ্বীপ’ রচিত। এই দুটো উপন্যাসকে ধারাবাহিক উপন্যাস বলা যায়। উপন্যাসটি যেখানে শেষ হয়েছে তাতে মনে হতে পারে চাইলে এই উপন্যাসের ট্রিলোজি করা যেতো, হুমায়ূনের তেমন ইচ্ছা ছিলো কি-না তা জানা আজ অসম্ভব। দুটো উপন্যাসেই জরীর প্রতি শুভ্রর টান লক্ষ্য করি। শুভ্রর পরবর্তী উপন্যাসগুলোতে জরী কিংবা অন্য বন্ধুদের আর দেখতে পাই না।

 

‘এই শুভ্র! এই’ উপন্যাসে শুভ্রর মা জাহানারা বলেন, ‘শুভ্র’র বয়স চব্বিশ হয়েছে, বিয়ে তো এখন দেয়া যায়। যায় না?’ ‘শুভ্র গেছে বনে’ উপন্যাসের উৎসর্গে বলা আছে, ‘শুভ্রর মতো কাউকে কি আমি চিনি, যাকে এই বই উৎসর্গ করা যায়? না, চিনি না। প্রকৃতি শুদ্ধতম মানুষ তৈরি করে না। কিছু-না-কিছু খাদ ঢুকিয়ে দেয়। এই বই আমার অচেনা সেইসব মানুষের জন্যে, যারা জানেন তাদের হৃদয় শুভ্রর মতোই শুভ্র।’

 

এই বইয়ের ভূমিকা অংশটি খুবই ছোট। ছোট্ট এই ভূমিকা থেকেও আমরা শুভ্রকে চিনতে পারে। ছোট অথচ অর্থপূর্ণ পুরো ভূমিকাটি পাঠকের জন্য তুলে দিলাম, ‘বিজ্ঞানী স্যার আইজাক নিউটনকে পার্লামেন্ট সদস্যপত্র দেওয়া হয়েছিল। তিনি এই দায়িত্ব পালনকালে একটি মাত্র বাক্য উচ্চারণ করেছিলেন- জানালাটা খুলে দিন। তিনি দ্বিতীয় কোনো বাক্য উচ্চারণ করেন নি। শুভ্র সারা জীবন বন্ধ জানালা খুলতে চেয়েছে।’

 

‘মেঘের ছায়া’ উপন্যাসে শুভ্র’র বর্ণনা পাই, ‘তার মাথাভর্তি চুল। চোখে চশমা নেই বলে শুভ্রর বড়-বড় কালো চোখ দেখা যাচ্ছে। রেহানা মনে মনে বললেন, ‘আমার এই ছেলেটা এত সুন্দর হল কেন? ছেলেদের এত সুন্দর হতে নেই। শারীরিক সৌন্দর্য ছেলেদের মানায় না।’ ‘মেঘের ছায়া’ উপন্যাসের ইয়াজউদ্দিন শুভ্রর বয়স কতো জানতে চাইলে রেহানা জানান, ‘সাতশ বছর তিন মাস।’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছে ১৯৯৩ সালে সেখানে শুভ্র ২৭ বছর ৩ মাসের যুবক আর ‘এই শুভ্র! এই’ প্রকাশিত হয়েছে ২০০৩ সালে, সেখানে শুভ্রের বয়স ২৪ বছর।

 

শুভ্রর বয়সের বিষয়ে কোনো গ্রন্থেই ধারাবাহিক হিসাব রাখা হয়নি। তাতে অবশ্য শুভ্রর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য রদবদল হয়নি। বয়স ২৪ কি ২৭ যাই হোক শুভ্র সদাই ছেলেমানুষ। মা বাবার চোখে শিশু। সে ঘর থেকে বের হয় না। সারাদিন বই পড়ে। শুভ্র তার প্রতিটি উপন্যাসে ভীষণ ভালো ছাত্র। ‘শুভ্র’ উপন্যাসে সে রেকর্ড নাম্বার পেয়ে কালি নারায়ণ স্কলার পায়, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেদিন পাশ করে সেদিনই সেখানে শিক্ষক হওয়ার দূর্লভ সুযোগ পায়। কিন্তু সে এ সব সুযোগ গ্রহণ না-করে পৈত্রিক ব্যবসার হাল ধরে। উল্লেখ্য তার পিতার ব্যবসা খুব শোভন কিছু ছিলো না।

 

শুভ্রকে নিয়ে লেখা প্রথম উপন্যাস ‘দারুচিনি দ্বীপ’এ তার বাবার নাম ইয়াজউদ্দিন, মার নাম রেহানা। ‘মেঘের ছায়া’ এবং ‘রুপালী দ্বীপ’ উপন্যাসেও শুভ্রর মা-বাবার নাম রেহানা, ইয়াজউদ্দিন আছে। ‘মেঘের ছায়া’ উপন্যাসের শেষে শুভ্রর বাবা ইয়াজউদ্দিনের মৃত্যু হয়। প্রায় সবগুলো উপন্যাসে শুভ্রর বাবা একজন অভিজাত ব্যক্তি, বিরাট ধনী। ‘শুভ্র’ উপন্যাসে তার বাবার নাম মোতাহার সাহেব, মা এখানে জাহানারা। এই উপন্যাসের শুরুতেই মোতাহার সাহেবের মৃত্যু হয়। এই উপন্যাসে মোতাহার সাহেব ধনী, কিন্তু তার সম্পদের একটা বড় অংশ আসে পতিতালয়ের তিনটা বাড়ির বায়ান্নটি মেয়ের দেহব্যবসার আয় থেকে। দারুচিনি দ্বীপ, রূপালী দ্বীপ ও মেঘের ছায়া পর্যন্ত শুভ্রর পরিবার ও বন্ধুজনের মধ্যে একটা ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু ‘শুভ্র’ উপন্যাস থেকে এ ধারাবাহিকতা ভঙ্গ হয়।

 

‘এই শুভ্র! এই’ উপন্যাসে জানতে পারি শুভ্র আসলে মোতাহার হোসেন বা জাহানারার আসল সন্তান নয়। ‘শুভ্র আগ্রহের সঙ্গে বলে, আমার মনে হয় প্রথম ছেলেটি জন্মের পর মারা যাওয়ায় মা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরেরটির মৃত্যুর পর তার অসুস্থতা প্রচণ্ড বেড়ে গেলে, তখন তুমি কোনো জায়গা থেকে আমাকে যোগাড় করে মা’র কাছে নিয়ে এলে।’ এই কথাতে বোঝা যায় শুভ্র তাদের সন্তান নয়। তবে সব জেনেও শুভ্র শান্ত আচরণ করে। এক পর্যায়ে, ‘শুভ্র বাবার কাছে এগিয়ে এলো। আগ্রহ নিয়ে বলল, ... মানবজাতি তার অস্তিত্বের কারণ না জেনেই এতদূর এসেছে, আরো অনেক দূর যাবে। তাকে ঘিরে থাকবে প্রচণ্ড সংশয়। সে কে? সে কোথা থেকে এসেছে? সে কোথায় যাচ্ছে? এই সংশয়ের তুলনায় আমার ব্যক্তিগত সংশয়টা কি খুবই তুচ্ছ না?’

 

শুভ্র’র এই প্রশ্নের আড়ালে ব্যক্তির চেয়ে সমষ্টিক মানুষের বিকাশ জরুরি হয়ে ওঠে। ক্রমাগত পঠন আর চরিত্র শুদ্ধি তাকে দিয়েছে সব কিছু শান্তভাবে ব্যাখ্যা করার সক্ষমতা। নিজের বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে শুভ্র নিজেকে দশে দশ দেয়। বাবা তার প্রমাণ চাইলে সে বলে, ‘যে আমাকে যে-রকম দেখতে চায়, আমি তার কাছে সে-রকম থাকি। মা আমাকে একটা অসহায় ছেলে হিসেবে দেখতে চায়, যে ছেলে নিজের কোনো কাজই গুছিয়ে করতে পারে না। দাঁত ব্রাশ করে টুথপেস্টের মুখ লাগাতে ভুলে যায়। বাইরে বের হবার সময় চুল আঁচড়াতে ভুলে যায়। রোজ শেভ করার কথা ভুলে যায়। মা’কে খুশি করার জন্যই কাজগুলি আমি ইচ্ছা করে করি। আর তুমি আমাকে একজন সুপার ইন্টেলিজেন্ট ছেলে হিসেবে দেখাতে চাও। এখন তুমিই বলো, তোমার কাছে কি আমি সুপার ইন্টেলিজেন্ট ছেলে হিসেবে নিজেকে উপস্থিত করি কি না?’

 

শুভ্রকে সৃষ্টি করা হয়েছে শুদ্ধতম মানুষ হিসেবে। হুমায়ূন ‘শুভ্র’ বইয়ের ভূমিকায় লিখছেন, ‘শুদ্ধতম মানুষ কেমন হবে?

 

অনেক প্রশ্নের মতো এই প্রশ্নটা আমার প্রায়ই আসে। আমি আমার চারপাশের মানুষজন খুব যত্ন দিয়ে দেখি। এক ধরনের গোপন অনুন্ধান চলতে থাকে- যদি কোনো শুদ্ধ মানুষের দেখা পেয়ে যাই। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে তো আমি শুদ্ধতম মানুষ খুঁজে বের করতে পারব না। আমাকে খুঁজতে হবে আমার পরিচিতজনদের মধ্যে। দীর্ঘ দিনের অনুসন্ধানে কোনো লাভ হয় নি। শুদ্ধ মানুষ আমাকে সৃষ্টি করতে হয়েছে। কল্পনায়। শুভ্র সে রকম একজন। বেচারার চোখ মুখ খুব খারাপ। চোখ থেকে চশমা খুলে ফেললে সে প্রায় অন্ধ। তার ক্লাসের বন্ধূরা তাকে ডাকে কানাবাবা! শুদ্ধ মানুষের চোখ খারাপ হতে হবে এমন কোনো কথা নেই। তাকে চোখ খারাপ দেখানোর পেছনের প্রধান যুক্তি সম্ভবত আমি, আমার নিজের চোখও ভয়ংকর খারাপ (পাঠক দয়া করে ভাববেন না যে আমি নিজেকে খুব সূক্ষ্মভাবে শুদ্ধতম মানুষ বলার চেষ্টা করছি। কোনো শুদ্ধ মানুষের একশ’ গজের ভেতর যাবার যোগ্যতা আমার নেই)। যাই হোক, শুভ্র চরিত্রটি তৈরি হলো। বেশ কিছু উপন্যাস লিখলাম শুভ্রকে নিয়ে, যেমন রূপালী রাত্রি, দারুচিনি দ্বীপ। তারপর হঠাৎ করেই শুভ্রকে নিয়ে লেখা বন্ধ করে দিলাম। আমার কাছে মনে হলো আমি ভুল করছি, শুদ্ধতম মানুষ বলে কিছু নেই। শুভ্র চরিত্রটি নতুন করে লিখতে হবে।

 

শুভ্রকে নিয়ে হুমায়ূন আহমেদ মাত্র ৬টি উপন্যাস লিখেছেন। অন্যদিকে হিমুকে নিয়ে ২২টি আর মিসির আলিকে নিয়ে ২০টি। সেই বিবেচনায় বলা যায়, শুভ্র চরিত্রকে সে অর্থে তিনি বিকশিত করার সুযোগ পাননি। তবু হিমু, শুভ্র আর মিসির আলির মধ্যে আমরা বেশ কিছু মিল লক্ষ্য করি। প্রথমত এরা সবাই কিছুটা খামখেয়ালি, ক্ষেপাটে কিন্তু ভীষণ ভালো মানুষ। মেধা ও বুদ্ধির দিক থেকে হিমু, শুভ্র, মিসির আলিরা উঁচু শ্রেণীর। এরা কেউ-ই একঘেয়ে বা ফ্লাট চরিত্রের নয়, সাহিত্যের ভাষায় যে রাউন্ড ক্যারেক্টার বা বহুতল বিশিষ্ট চরিত্রের কথা বলা হয় শুভ্র, হিমু ও মিসির আলি তার আদর্শ উদাহরণ হতে পারে। তারা তিনজনই শারীরিকভাবে দূর্বল কিন্তু মানসিকভাবে প্রবল শক্তিধর। হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয়তম এই তিন চরিত্র নিয়ে আরো আলোচনার অবকাশ রয়ে যায়।

 

কালক্রমিকভাবে হুমায়ূন আহমেদের শুভ্র উপন্যাসের প্রকাশকাল নিম্নরূপ :
১.    দারুচিনি দ্বীপ, অনুপম প্রকাশনী, ফেব্রুয়ারি ১৯৯১
২.    মেঘের ছায়া, প্রতীক প্রকাশনা সংস্থা, ফেব্রুয়ারি ১৯৯৩
৩.    রূপালী দ্বীপ, অনুপম প্রকাশনী, জানুয়ারি ১৯৯৪
৪.    শুভ্র, ২০০০
৫.    এই শুভ্র! এই, অন্যপ্রকাশ, অক্টোবর ২০০৩
৬.    শুভ্র গেছে বনে, অন্যপ্রকাশ, একুশের বইমেলা ২০১০






রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ নভেম্বর ২০১৫/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়