নতুন আঙ্গিকে ‘চিত্রাঙ্গদা’

বিনোদন ডেস্ক : ২০১১ সালে নাট্যসংগঠন স্বপ্নদল মঞ্চে নিয়ে আসে দর্শকপ্রিয় প্রযোজনা ‘চিত্রাঙ্গদা’। এরপর নাটকটির ৫০টি সফল প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। তারপর নানা কারণে নাটকটির প্রদর্শনী দীর্ঘ এক বছর বন্ধ ছিল।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিরায়ত সৃষ্টি চিত্রাঙ্গদার গবেষণাগার নাট্যরীতিতে নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন জাহিদ রিপন। স্বপ্নদলের এ প্রযোজনাটি নির্মিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথের কাব্যনাট্য চিত্রাঙ্গদা পাণ্ডুলিপি অবলম্বনে। পুনর্নির্মাণের পর বিরতি ভেঙে অনেকটা নতুন আঙ্গিকে মঞ্চে আসছে নাটকটি। রাইজিংবিডিকে এ তথ্য জানিয়েছেন জাহিদ রিপন।

নাটকটি পুনর্নির্মাণের কারণ ব্যাখ্যা করে জাহিদ রিপন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘নাটকটির প্রধান দুই চরিত্র রূপায়নকারী আর প্রদর্শনী করতে পারছিল না। ওদের কারণে প্রায় এক বছর বন্ধ ছিল দর্শকপ্রিয় এ প্রযোজনাটি। এছাড়া সরকারি অনুদানে অর্থাৎ জনগণের অর্থে করা প্রযোজনা এটি। ইচ্ছে করলেই এই প্রযোজনা বন্ধ করা যায় না। এটা দায়িত্বহীনতার মধ্যে পড়ে। তাছাড়া রবীন্দ্রনাথের এই কাব্যনাট্য সংস্করণ 'চিত্রাঙ্গদা' স্বপ্নদলের আগে কেউ নিয়মিত মঞ্চায়ন করেনি। সম্ভবত এটি ইতিহাসের অংশ হিসেবে বিবেচ্যে।’



নাটকের পরিবর্তন বিষয়ে জাহিদ রিপন বলেন, ‘এবার প্রধান তিনটি চরিত্র নতুনভাবে তৈরি করে পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। যাতে প্রযোজনাটি নিয়মিত মঞ্চায়ন সম্ভব হয়। গল্প ঠিক রেখে অভিনেতা-অভিনেত্রী পরিবর্তন করা হয়েছে। এছাড়া কিছু ব্লকিং ও কোরিওগ্রাফিতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।’

৩১ জুলাই (সোমবার) সন্ধ্যা সাতটায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হবে নাটকটি। উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন ভারতের নাট্যগবেষক, সমালোচক ড. আশীষ গোস্বামী।

নির্দেশক জাহিদ রিপন নাটকের গল্প প্রসঙ্গে জানান, মহাবীর অর্জুন সত্যপালনের জন্য একযুগ ব্রহ্মচার্যব্রত গ্রহণ করে মণিপুর বনে আসেন। মণিপুরের রাজকন্যা চিত্রাঙ্গদা অর্জুনের প্রেমে উদ্বেলিত হলেও অর্জুন রূপহীন চিত্রাঙ্গদাকে প্রত্যাখ্যান করেন। অপমানিত চিত্রাঙ্গদা প্রেমের দেবতা মদন এবং যৌবনের দেবতা বসন্তের সহায়তায় এক বছরের জন্য অপরূপ সুন্দরীতে রূপান্তরিত হন। অর্জুন এবার যথারীতি চিত্রাঙ্গদার প্রেমে পড়েন। কিন্তু অর্জুনকে লাভ করেও চিত্রাঙ্গদার অন্তর দ্বন্দ্বে ক্ষতবিক্ষত হতে থাকে, অর্জুন প্রকৃতপক্ষে কাকে ভালোবাসেন, চিত্রাঙ্গদার বাহ্যিক রূপ নাকি তার প্রকৃত অস্তিত্বকে?



এভাবে চিত্রাঙ্গদা পৌরাণিক কাহিনির আড়ালে যেন এ কালেরই নর-নারীর মনোদৈহিক সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং পাশাপাশি পারস্পরিক সম্মানাবস্থানের প্রেরণারূপে উপস্থাপিত হয়। একইসঙ্গে এতে প্রকাশিত হয় সেই অনিবার্য সত্য, যা বাহ্যিক রূপের চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান নারী-পুরুষের চারিত্রিক শক্তি। এতেই প্রকৃতপক্ষে আত্মার স্থায়ী পরিচয়!

পুনর্নির্মাণে ‘চিত্রাঙ্গদা’ নাটকটির বিভিন্ন চরিত্র রূপায়ন করবেন- সোনালী, জুয়েনা, শিশির, শ্যামল, রানা, সামাদ, জেবু, তানভীর, অমর, সম্রাট, ঊষা, তানিয়া, আঁচল, অপু, সুমাইয়া, বিপুল, আলী, বিমল প্রমুখ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ জুলাই ২০১৭/শান্ত/মারুফ