ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

এমপি রানার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

শাহরিয়ার সিফাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এমপি রানার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা ও তার তিন ভাইসহ ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।

আজ বুধবার টাঙ্গাইলের ১ নম্বর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবুল মনসুর মিয়া এই অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে আগামী ১৮ অক্টোবর সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে। এ ঘোষণার ফলে ফারুক হত্যার বিচার কাজ শুরু করার আর বাধা থাকল না।

আজ সকাল ৯টায় সংসদ সদস্য রানাকে কাশিমপুর-১ কারাগার থেকে টাঙ্গাইল আদালতে হাজির করা হয়। দীর্ঘ পৌনে ৩ ঘণ্টা শুনানি শেষে আদালত দুপুর পৌনে ১২টায় অভিযোগ গঠনের নির্দেশ দেন। শুনানিতে মামলায় কারাগারে বন্দি চার আসামি এবং জামিনে থাকা তিন আসামিকে হাজির ছিলেন।

আসামিদের পক্ষ থেকে মামলা পুনঃতদন্ত এবং অভিযোগ গঠন না করার আবেদন করা হলে আদালত আবেদন দুটি খারিজ করে দেন। রাষ্ট্রপক্ষ ও বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে যুক্তিতর্ক শেষে আদালত অভিযোগ গঠন করেন। এর আগে এ হত্যা মামলায় আটবার দিন পড়লেও অসুস্থতার কারণে আদালতে হাজির হননি এমপি রানা।

বাদী পক্ষের আইনজীবী ও অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম বলেন, এর আগের শুনানিতে সংসদ সদস্য রানা অসুস্থতাজনিত কারণে আদালতে হাজির না হওয়ায় আজ তিনি হাজির হলে আদালত ফারুক হত্যা মামলার চার্জ গঠনের নির্দেশ দেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী আদালতে মামলা পুনঃতদন্ত এবং অভিযোগ গঠন না করা, এমপি রানাকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা ও মামলা চার্জ গঠন করা হলে উচ্চ আদালতে যাওয়াসহ মোট তিনটি দরখাস্ত দেন। আদালত রানাকে চিকিৎসা করানোর আবেদন ছাড়া বাকি দুটি আবেদন খারিজ করে দেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুল বাকী বলেন, ‘‘এমপি রানা অসুস্থ থাকায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল বা অন্য কোনো ভালো হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আমরা আবেদন করেছি। ফারুক হত্যা ঘটনার দিন এমপি রানা ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তাই আমরা উচ্চ আদালতে এই চার্জের বিরুদ্ধে আপিল করব।’’

এমপি রানাকে আদালতে হাজির করার পর জেলা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো আদালত চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর রানা গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন। এর আগে উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালতে বেশ কয়েক দফা আবেদন করেও জামিন পাননি তিনি।

২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ টাঙ্গাইলে তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার সামনে পাওয়া যায়। ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।

গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার ছোট ভাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা, হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত হিসেবে অপর দুই ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন, তাদের দেহরক্ষী আনিসুর রহমান রাজা, মোহাম্মদ আলী, রানার ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবির হোসেন, সমীর, ফরিদ আহমেদ, দারোয়ান বাবু, যুবলীগের তৎকালীন নেতা আলমগীর হোসেন (চাঁনে), নাসির উদ্দিন (নুরু), ছানোয়ার হোসেন ও সাবেক পৌর কমিশনার মাছুদুর রহমানসহ ১৪ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এদের মধ্যে সংসদ সদস্য রানা, সমীর, আনিসুর রহমান রাজা ও মোহাম্মদ আলী গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। আর ফরিদ আহমেদ, নাসির উদ্দিন (নুরু), সাবেক পৌর কমিশনার মাছুদুর রহমান জামিনে রয়েছে। বাকি সাত আসামি পলাতক রয়েছেন।




রাইজিংবিডি/টাঙ্গাইল/৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭/শাহরিয়ার সিফাত/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়