ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

‘মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় জঘন্য ঘটনা’

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২২, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় জঘন্য ঘটনা’

নিজস্ব প্রতিবেদক : শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিচালিত ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতেই নিরীহ জজ মিয়াকে দিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়। যা একটি জঘন্য ঘটনা।

বুধবার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলী সৈয়দ রেজাউর রহমান ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০তম দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে এ কথা বলেন।

রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে এ মামলার বিচার চলছে।

রেজাউর রহমান বলেন, খেটে খাওয়া নিরীহ জজ মিয়াকে দিয়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট হামলার ঘটনায় মিথ্যা ও সাজানো স্বীকারোক্তি আদায় একটি জঘন্য ঘটনা। তৎকালীন সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের দ্বারা এ অপকর্ম রক্ষক হয়ে ভক্ষক হওয়ার উদাহরণ। ২১ আগস্ট হামলা পরিকল্পনায় প্রশাসনিক সহায়তার আশ্বাস বাস্তবায়নে এ অপকর্ম আইনের শাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন।

জজ মিয়ার জবানবন্দি তুলে ধরে তিনি বলেন, জজ মিয়াকে ভয়-ভীতি, প্রলোভন দেখিয়ে মিথ্যা-বানোয়াট স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে হত্যা ও দেশে জঙ্গিবাদের বিস্তৃতি ঘটাতে জড়িতদের আড়াল করতে জজ মিয়াকে দিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তির নাটক তৈরির অপচেষ্টা হয়।

জজ মিয়া এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হিসেবে সাত আসামিকে সম্পৃক্ত করে আদালতে জবানবন্দি পেশ করেন। আসামিরা হচ্ছেন- প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, প্রাক্তন আইজিপি শহুদুল হক, আশরাফুল হুদা ও খোদা বক্স চৌধুরী, মামলার প্রাক্তন তিন তদন্ত কর্মকর্তা- সিআইডির প্রাক্তন এসপি রুহুল আমিন, প্রাক্তন এএসপি আতিকুর রহমান ও আবদুর রশিদ। এদিন রাষ্ট্রপক্ষের ১০২ থেকে ১২০ নম্বর সাক্ষীর সাক্ষ্যের আলোকে জবানবন্দি তুলে ধরা হয়।

এরপর আগামী ১৮, ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়।

গত ১১ অক্টোবর মামলাটিতে আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষ্য শেষ হয়। মামলাটিতে বিভিন্ন সময়ে ২০ জন সাফাই সাক্ষ্য দেন।

এর আগে মামলাটিতে গত ১২ জুন জামিনে ও কারাগারে থাকা ৩১ আসামির আত্মপক্ষ শুনানি হয়। আত্মপক্ষ শুনানিতে ৩১ আসামির সকলেই নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। মামলাটিতে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৮ জন আসামি পলাতক থাকায় তারা আত্মপক্ষ শুনানির সুযোগ পাননি।

মামলাটিতে আসামি খালেদা জিয়ার ভাগ্নে অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সাইফুল ইসলাম ডিউক, প্রাক্তন আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী, মামলার তিন তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও প্রাক্তন ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম জামিনে আছেন।

অন্যদিকে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, প্রাক্তন উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ১৯ জন পলাতক। এ মামলার আসামি হুজি নেতা মুফতি হান্নান ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদের অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভায় গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জনের মৃত্যু হয়। গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন কয়েক শ’ মানুষ। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন অল্পের জন্য বেঁচে যান।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ ডিসেম্বর ২০১৭/মামুন খান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়