ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

এটিএন কমিউনিকেশনের ৫৮ লাখ টাকার শুল্ক ফাঁকি

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৩, ২২ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এটিএন কমিউনিকেশনের ৫৮ লাখ টাকার শুল্ক ফাঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক: মিথ্যা ঘোষণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে মোবাইল ফোন আমদানি করে এটিএন কমিউনিকেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫৮ লাখ টাকার শুল্ক ফাঁকির ঘটনা উদঘাটন করেছে শুল্ক মূল্যায়ন ও অডিট বিভাগের (সিভিএ) অডিট টিম।

মঙ্গলবার রাজধানীর মোতালিব প্লাজায় প্রতিষ্ঠানটিতে অডিটকালে ওই ফাঁকির বিষয়টি উদঘাটিত হয়। শুল্ক মূল্যায়ন ও অডিট বিভাগের কমিশনার ড. মইনুল খান রাইজিংবিডিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

শুল্ক মূল্যায়ন ও অডিট বিভাগ জানায়, শুল্ক মূল্যায়ন ও অডিটের একটি দল অভিনব পদ্ধতিতে ব্যাংকের কাগজ জালিয়াতির মাধ্যমে একটি মোবাইল আমদানিকারকের আমদানি ও শুল্ক খালাস করার অপকৌশল উদঘাটন করেছে। আমদানিকারকের নাম এটিএন কমিউনিকেশন। প্রতিষ্ঠানটি মোবাইল ফোনের আমদানিকারক ও সরবরাহকারী হিসেবে নিবন্ধিত।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, আমদানিকারক নিউ এ্যালিফ্যান্ট রোডের আল আরাফা ব্যাংকের শাখায় ৪ টি এলসি খোলে। এ গুলোর মাধ্যমে সেলুলার ফোন আমদানির কথা বলা হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা কাস্টমস হাউসের এয়ারফ্রেইটে ৭টি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে ক্যাপিটাল মেশিনারি ও ফার্মা কাঁচামাল ঘোষণা দিয়ে খালাস নিয়েছেন। এতে ব্যাপক হারে শুল্ক ফাঁকির বিষয়টি উদঘাটিত হয়েছে। এলসিসমুহের ৩টি বিল অব এন্ট্রিতে আমদানিকারক মোবাইল ফোনের পরিবর্তে ক্যাপিটাল মেশিনারি এক শতাংশ  হারে খালাস নিয়েছেন। অন্য ২টিতে ফার্মাসিউটিক্যালস এর কাঁচামাল দেখিয়ে শূণ্য শতাংশ হারে শুল্ক সুবিধা নিয়েছেন। বাকি ২টি বিল অব এন্ট্রিতে মোবাইলের প্রকৃত সংখ্যা কম দেখিয়েছেন। সবগুলো বিল অব এন্ট্রিতে আমদানিকারক কর্তৃক ভুয়াকাগজ দাখিল করে শুল্ক জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে।
ব্যাংকের মূল দলিল পর্যালোচনায় দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটি কেবল মোবাইল  ফোন সেটের জন্যই এলসি খুলেছেন। এসব এলসিতে প্রতি পিস মোবাইল ৬.৫ ও ৬.২৫ মার্কিন ডলার হিসেবে দেখিয়েছেল। তিনি ব্র্যান্ড দেখিয়েছেন স্পোর্টস মোবাইল, মডেল এসপি - ৯ ও ডব্লিউ - ৭। কিন্তু ঢাকা কাস্টম হাউসের তথ্যে দেখা যায় তিনি ভিন্ন পণ্য শুল্কায়ন করে খালাস করেছেন। এক্ষেত্রে ভিন্ন পণ্য ও পরিমাণে কম দেখিয়ে শুল্ক কম পরিশোধ করেছেন।

অন্যদিকে ঔষধের জন্য কোন এলসি খোলা না হলেও তিনি অসত্য কাগজ দাখিল করেন এবং ঔষধ প্রশাসনের বৈধ কাগজ না থাকলেও তা ০ শতাংশ হারে খালাস নিয়েছেন। তিনি সবগুলোতেই মোবাইল ফোন আমদানি করেছেন এবং শুল্ক জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। এজন্য তিনি বিটিআরসির বাধ্যতামূলক ছাড়পত্র নেননি। ফলে মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর অনুমোদিত নয়।

এখানে উল্লেখ্য যে, ঔষধের কাঁচামালে শূণ্য শুল্ক, ক্যাপিটাল মেশিনারি ১ শতাংশ এবং মোবাইলে মোট ২৯.৫ শতাংশ শুল্ক প্রযোজ্য। মোবাইল ফোনের ৪টি এলসি মূল্য ৩ দশমিক ৩৫ লাখ মার্কিন ডলার। আলোচ্য ৭টি বিল অব এন্ট্রিতে মোবাইল ফোন হিসেবে জালিয়াতির মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হয়েছে প্রায় ৫৮ লাখ টাকা। এ বিষয়ে শুল্ক আইনে ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ মে  ২০১৮/এম এ রহমান/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়