ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

‘পুলিশ অফিসার নিরাপত্তা বোধ করেন না!’

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৪, ১৭ জুন ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘পুলিশ অফিসার নিরাপত্তা বোধ করেন না!’

নিজস্ব প্রতিবেদক : মোয়াজ্জেম হোসেনের পক্ষে তার আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, মামলায় পলাতক ছিলেন। জানতে পেরেছিলেন তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। নিরাপত্তা পাননি এ কারণে আদালতে আসেননি।

তখন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, পুলিশ অফিসার নিরাপত্তা বোধ করেন না!

সোমবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার ফেনীর সোনাগাজী থানার প্রাক্তন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন শুনানিকালে এ কথা বলেন বিচারক।

এর আগে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রিজনভ্যানে করে দুপুর ১২টা ২৬ মিনিটে মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে হাজির করে পুলিশ। ওই সময় বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার ক্যামেরা উপস্থিতির জন্য তাকে প্রিজনভ্যান থেকে না নামিয়ে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

পরে সিএমএম কোর্টের হাজতখানা থেকে আবার মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে প্রিজনভ্যানে করে আনা হয়। এরপর তাকে হাতকড়া ছাড়াই প্রিজনভ্যান থেকে নামিয়ে লিফটে করে মহানগর দায়রা জজ আদালত ভবনের ৬ তলায় অবস্থিত সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে ওঠানো হয়। প্রিজনভ্যান থেকে আদালতে ওঠানোর সময় প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা ছবি তুলতে ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। মোয়াজ্জেমকে আদালতে ওঠানোর পর তিনি কাঠগড়ার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

শুনানিতে মামলার বাদী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক বলেন, আদালত ২০ দিন আগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আসামি একজন আইনের রক্ষক। তিনি যদি নির্দোষ হতেন, তবে আইনের লোক হিসেবে ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি, পালিয়ে ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, আসামি পলাতক ছিলেন। আইনের লোক হয়েও আদালতে আসেননি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। জামিন পেলে পলাতক হবেন।

আসামিপক্ষে আইনজীবী ফারুক আহমেদ জামিনের আবেদন করে বলেন, ওনি পলাতক ছিলেন না। তিনি আইনের আশ্রয়ের জন্য হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন।

তিনি বলেন, আসামি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইনের আশ্রয় গ্রহণ করতে যাওয়ার পথে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তখন বিচারক বলেন, পুলিশ অফিসার নিরাপত্তা বোধ করেন না!

এরপর মামলার অভিযোগ সম্পর্কে এ আইনজীবী বলেন, মামলায় বলা হয়েছে, তার (আসামি মোয়াজ্জেম) আইডি থেকে ভিডিওটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তার আইডি থেকে ভিডিও ছড়ানো হয়নি। ছড়ানো হয়েছে মো. আতিয়ার হাওলাদার সজল নামে এক সাংবাদিকের আইডি থেকে। অথচ তাকে এ মামলায় আসামি করা হয়নি। যা রহস্যজনক। বরং সজলের আইডি থেকে ভিডিও ছড়ানোর কথা জানতে পেরে তিনি গত ১৪ এপ্রিল থানায় একটি জিডি করেন। তাই মোয়াজ্জেম হোসেন এ মামলায় আসামি হতে পারেন না। তিনি জামিন পেতে পারেন। ওই সময় বিচারক আইনজীবীকে জিজ্ঞাসা করেন, মোয়াজ্জেম হোসেন ভিডিওটি করেছিলেন কি না? এ প্রশ্নের বিষয়ে আইনজীবী সরাসরি কোনো উত্তর দেননি।

প্রসঙ্গত, সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন গত ১৫ এপ্রিল আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় গত ২৭ মে তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানা মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদন আমলে গ্রহণ করে ওই দিনই মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরোয়ানা জারির ২০ দিন পর রাজধানীর শাহবাগ থেকে রোববার মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ জুন ২০১৯/মামুন খান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়