ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

কতটা গুরুত্বপূর্ণ তাইজুল?

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০১, ৫ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কতটা গুরুত্বপূর্ণ তাইজুল?

ক্রীড়া প্রতিবেদক, সিলেট থেকে : খুব সাদামাটা জীবন তাইজুল ইসলামের। সহজ, সরল মানুষ। নেই কোনো তারকা-খ্যাতি। নেই বড় চাওয়া।

সাদা পোশাকে বাংলাদেশ দল যখন মাঠে নামার প্রস্তুতি নেয়, ঠিক তখনই তার নাম চলে আসে। অথচ ওয়ানডে অভিষেকে হ্যাটট্রিকসহ পেয়েছিলেন ৪ উইকেট! পরবর্তীতে কার্যকরী না হওয়ায় রঙিন জার্সিতে আর বিবেচনায় আসেননি। কিন্তু টেস্ট স্কোয়াডের নিয়মিত সদস্য।

কারণটা স্পষ্ট। লাল বলে তার থেকে ভালো স্পিনার কেউ নেই! হয়তো সাকিব আল হাসানের নাম আসবে। পরিসংখ্যান তো তাইজুলের পক্ষে। সাকিব যে অকার্যকরী তা নয়, কিন্তু তাইজুল সবার থেকে এগিয়ে।

২০১৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তার অভিষেক। ১৯টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে জাতীয় দলের টেস্ট ক্যাপ অর্জন করেন। তখন সাকিব খেলে ফেলেছেন ৩৪ টেস্ট ম্যাচ। নামের পাশে অনেক অর্জন, অনেক সাফল্য। তাইজুলের অভিষেকের পর বাংলাদেশ খেলেছে মোট ২৬ টেস্ট। এর মধ্যে তাইজুল খেলেছেন ২০টি, সাকিব খেলেছেন ১৯ টেস্ট। ১৯ টেস্টে সাকিব উইকেট পেয়েছেন ৭৪টি। আর তাইজুল এক ম্যাচ বেশি খেলে পেয়েছেন ৮০ উইকেট। আর অভিষেকের পর মিরাজ ১৫ টেস্টে পেয়েছেন ৬১ উইকেট।



সেই অর্জনের তালিকায় যোগ হবে সিলেট টেস্টের অর্জন। ২৬ বছর বয়সি তাইজুল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ইনিংসে পেয়েছেন ১১ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ছয় উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে তার পকেটে ঢুকেছে পাঁচটি। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট আর ম্যাচে দশ উইকেট নেওয়ার স্বাদ পেয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার।

তাইতো কোচ তাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন এভাবে, ‘এ ধরনের পিচে ১১ উইকেট পাওয়ায় তার বিশাল প্রশংসা করা উচিত। অসাধারণ সামর্থ্য দেখিয়েছে ও। আন্তর্জাতিক বোলার হিসেবে ও অনেক পরিণত এবং সামনে এগিয়ে গেছে।’

সাকিব হিরো, তা নিয়ে দ্বিমত থাকার কথা নয় কারও। টেস্টে বাংলাদেশের সেরা পারফরমার এবং বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা অলরাউন্ডার। ঘোষিত নায়ক। কিন্তু পর্দার আড়ালের নায়ক থেকে যান তাইজুল। কার্যকারিতার দিক থেকেও সাকিবের মতো সেরা। তার অসাধারণ, মায়াবী জাদু শুধু উইকেট এনে দেয় না, চাপ কমায় সাকিবের ওপরও।



তাইজুলের অভিষেকের পর বাংলাদেশ যে ৬ টেস্ট জয় ও ৫টি ড্র করেছে তাতে সাকিবের অবদান সবচেয়ে বেশি। এ সময়ে ১০ ম্যাচে সাকিব পেয়েছেন ৪৫ উইকেট। সমান ম্যাচে তাইজুলের পকেটে গেছে ৩৭ উইকেট। মিরাজ এ সময়ে ৪ ম্যাচে পেয়েছেন ২৪ উইকেট। টেস্ট সাফল্যে কোনো অংশে যে তাইজুল পিছিয়ে নেই, তা পরিসংখ্যানই বলছে।

বিদেশে তিন স্পিনার নিয়ে খেলা বিলাসিতা। তাইতো সেরা পছন্দ থাকেন সাকিব ও মিরাজ। ওখানেও আড়ালে থেকে যান তাইজুল। কিন্তু পিছিয়ে থাকেন না। সুযোগ পেলেই তার গুরুত্ব, উপস্থিতি বুঝিয়ে দেন। ঠিক যেমনটা সিলেটে করে দেখালেন। ২০১৪ সালে তার মাথায় যখন টেস্ট ক্যাপ পরানো হয়, তখন বলা হয়েছিল, সাকিবের ‘বিকল্প’ তাইজুল। বিকল্প হিসেবে তাইজুল সফল। উইকেটের ক্ষুধা দিনকে দিন বাড়ছে। এখন শুধু সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা।



রাইজিংবিডি/সিলেট/৫ নভেম্বর ২০১৮/ইয়াসিন/পরাগ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়