ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

রাইজিংবিডি পরিদর্শনে ফুটবলার আসলাম

শামীম হোসেন পাটোয়ারি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১৪, ১৭ জুন ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাইজিংবিডি পরিদর্শনে ফুটবলার আসলাম

ক্রীড়া ডেস্ক : প্রতিপক্ষ ফুটবল দলের গোলপোস্টে ত্রাসসৃষ্টিকারী ছিলেন বাংলাদেশের নামকরা ফুটবলার শেখ মোহাম্মদ আসলাম। আজকের তরুণদের অনেকেই ফুটবল মাঠে আবাহনী ক্রীড়াচক্রের এই স্ট্রাইকারের তাণ্ডব না দেখলেও প্রবীণরা দেখেছেন নিশ্চয়ই। দুর্দান্ত হেডিং আর পায়ের জাদুতে প্রতিপক্ষের জালে মুড়ি-মুড়কির মতো গোল করতে পারতেন আসলাম। তাই আশির দশকের ডাচ ফুটবলার রুড গুলিতের সঙ্গে তুলনা করে তাকে বলা হতো বাংলার রুড গুলিত।

ঢাকার ঘরোয়া ফুটবলের গোলমেশিন ছিলেন আসলাম। জাতীয় দলে স্ট্রাইকার পজিশনে খেলা এ তারকা কয়েকবার ঢাকা ফুটবল লীগের সর্বোচ্চ গোলদাতার সম্মান অর্জন করেন। ১৯৯৭ সালের আগস্টে পেশাদার ফুটবলার হিসেবে অবসর নেন তিনি। এরপর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের স্কুল কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বাংলাদেশ ফুটবলের সোনালী যুগের এ তারকা আজ দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি পরিদর্শনে আসেন। সোমবার সকালে রাজধানীর মিরপুরে রাইজিংবিডি কার্যালয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান পত্রিকাটির উপদেষ্টা সম্পাদক উদয় হাকিম। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সম্পাদক নওশের আলী, সাহিত্য ও ফিচার সম্পাদক তাপস রায় প্রমুখ।

শেখ মোহাম্মদ আসলাম রাইজিংবিডির বার্তা, ফিচার, স্পোর্টস, ওয়েব ইত্যাদি বিভাগ ঘুরে দেখেন। এরপর তিনি স্পোর্টস বিভাগের সঙ্গে বাংলাদেশ ফুটবলের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন।

মানসম্মত খেলোয়াড় ও নীতিনির্ধারণ
শেখ মোহাম্মদ আসলাম বলেন, ‘আশি ও নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশে ফুটবলের সোনালী যুগ ছিল। তখন প্রতিটি ক্লাবেই মানসম্মত খেলোয়াড় ছিলেন। এখন এর বেশ অভাব রয়েছে। পরিপক্ক ফুটবলার না হয়ে সে সময় কেউ মাঠে নামতে পারতেন না। আমাদের সময়ে সাইড বেঞ্চে বসে থাকা খেলোয়াড়গুলোও জাতীয় দলে খেলার যোগ্যতা রাখত। নব্বইয়ের দশকের পর থেকে দর্শক হারাতে থাকে ফুটবল। দর্শকদের আবারো মাঠে ফেরাতে যথাযথ নীতি তৈরিতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। যার ফলে মানসম্মমত খেলোয়াড় আর তৈরি হয়নি।’



পাইপলাইন ও মাঠ পর্যায়

তিনি বলেন, ‘পাইপলাইন যত শক্তিশালী হবে ততই মানসম্মত খেলোয়াড় তৈরি হবে। দশটা মানসম্মত খেলোয়াড় তৈরি হলে একটা ম্যারাডোনা বের হবেই। আমি মাঠপর্যায়ে কাজ করে দেখেছি- আমাদের ছেলেদের মেধার কোনো কমতি নেই। সঠিক দিকনির্দেশনা পেলে ওরা অনেক ভালো করবে। মেধাবীদের তুলে আনার জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা দরকার। ভালো পরিকল্পনা হলে এসব ছেলে জাতীয় পর্যায়ে ভালো করবে।

সুদিন ফেরাতে স্থানীয় লিগ
খ্যাতিমান এ ফুটবলারের মতে, স্থানীয় লিগগুলোতে জোর দিলে ভালো খেলোয়াড় আসবে। একমাত্র ক্লাবই পারে খেলোয়াড় তৈরি করতে। প্রতিটি জেলায় লিগগুলো সঠিক সময়ে শুরু হলে সেখানে থেকে কিছু কিছু ফুটবলার বের হবে। তখনই আমাদের দেশ ফুটবলে আবার ঘুরে দাঁড়াবে।

অদূরদর্শিতা ও পরিকল্পনা
তিনি মনে করেন, ক্রিকেট যেখানে এগিয়ে যাচ্ছে ফুটবল সেখানে পিছিয়ে যাওয়ার কারণ হলো এ সেক্টরে আমাদের অদূরদর্শিতা। দর্শক ফেরানোর জন্য আপনাকে ক্যারিশমাটিক চরিত্র তৈরি করতে হবে। তারকা খেলোয়াড়দের নামের ওপর ভিত্তি করে দর্শক খেলা দেখতে যাবে। আমাদের ব্যক্তিগত একটা প্রভাবের জন্যও দর্শকরা মাঠে আসত। ফুটবল জড় পদার্থ, এটাকে যারা সৌন্দর্য দেয় তারাই বড় শিল্পী। এই শিল্পীকে বাঁচাতে হলে মাঠ পর্যায়ে যেতেই হবে। মাঠ পর্যায়ের মেধাকে পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগালে বাংলাদেশের ফুটবল ঘুরে দাঁড়াবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ জুন ২০১৯/শামীম/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়