ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

যে হোটেলে নেই ছাদ, নেই কোনো দেয়াল

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যে হোটেলে নেই ছাদ, নেই কোনো দেয়াল

আলী নওশের : ছুটি কাটাতে দূরে কোথাও গেছেন। হোটেলে উঠেছেন রাত যাপনে। সকালে ঘুম ভেঙে যখন চোখ মেলে তাকালেন দেখলেন চোখের সামনে পাহাড়ের কোল থেকে আড়ামোড়া ভাঙছে সুয্যি মামা।

দূরে সবুজ পাহাড়ের গায়ে হাল্কা আদর মাখিয়ে দিচ্ছে সকালের নরম রোদ। সাদা তুলোর মতো ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘের স্তর উড়ে চলেছে আপনার গা ঘেঁষে। মাথার ওপরে নীল আকাশ, আশপাশে সবুজ ঘাস।

কী চমকে গেলেন? আর ভাবছেন হোটেলের ঘরে এ সব এল কোথা থেকে? অবাক হলেও সত্যি এরকমই হোটেল রয়েছে যেখানে খোলা আকাশে উন্মুক্ত স্থানে বেড।

মাথায় ওপর নেই ছাদ। চারপাশে নেই কোনো দেয়াল। অথচ আপনি আরামে সেই হোটেলের সুসজ্জিত বিছানায় রাত যাপন করছেন।

 

 

আজব এরকম হোটেল রয়েছে সুইজারল্যান্ডের আল্পস পর্বতের কোলে। চারপাশে সবুজ গালিচায় ঢাকা ঢেউ খেলানো আল্পসের অপরূপ শোভা। তার মধ্যে চমৎকার এই হোটেল। নাম ‘নাল স্টার্ন’।

এই হোটেলে কোনো ছাদ, দেওয়াল, দরজা-জানালা কিছুই নেই। তবে বাঁধানো মেঝে রয়েছে। আর মেঝের ওপর দুধ সাদা চাদরে ঢাকা তুলতুলে বিছানা। যেখানে শরীর এলিয়ে দিয়ে আপনি তারা ভরা আকাশ দেখতে দেখতে নিস্তব্ধ প্রকৃতির রূপ উপভোগ করতে পারবেন।

 

 

আল্পস পর্বতের কোলে সমুদ্র সমতল থেকে ৬ হাজার ৪৬৩ ফুট উচ্চতায় এই নাল স্টার্ন হোটেল। উন্মুক্ত আকাশের এই হোটেলে একটি রাত থাকতে গেলে আপনাকে গুনতে হবে ২৫০ সুইস ফ্রাংক। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২০ হাজার টাকা।

এ বছরের জুলাইয়ে এই হোটেলের যাত্রা শুরু। এটি প্রতিষ্ঠা করেন ফ্রাংক ও প্যাট্রিক রিকলিন নামের দুই ভাই এবং তাদের এক ব্যবসায়িক পার্টনার ড্যানিয়েল চারবনিয়ার। নাল স্টার্ন মানে হচ্ছে ‘জিরো স্টার’। তাদের বক্তব্য হচ্ছে এখানে রাত যাপনে আসা অতিথিই হচ্ছেন প্রকৃত স্টার, অন্য কেউ নয়।

এই হোটেলের একটিই মাত্র বেড। তবে এই হোটেলের একটি সমস্যা হচ্ছে থাকার স্থানের সঙ্গে বা পাশে বাথরুম নেই। এ কাজের জন্য যেতে হবে পাঁচ থেকে ১০ মিনিটের দূরত্বে পায়ে হেটে।

 

 

এ বিষয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, পাবলিক টয়লেট হোটেল থেকে মাত্র পাঁচ মিনিটের হাঁটা পথ। কিন্তু এই পথটুকুতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। আগত অতিথিরা যাতে এই দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন তাই এই ব্যবস্থা।

অবশ্য বাথরুম না থাকলেও এখানে খাওয়ার ব্যবস্থা বেশ পরিপাটি। কিছু দূরেই একটি কেবিনের মধ্যে রয়েছে রান্নাঘর। পাওয়া যায় রুম সার্ভিসও। সকালে অতিথিদের স্যান্ডউইচ ও কফি দেওয়া হয়।

 

 

এখানে রাত যাপনের উপযুক্ত সময় হচ্ছে বসন্ত ও শরৎ ঋতুতে। এ জন্য অবশ্যই আগেভাগে বুকিং দিতে হবে আপনাকে। তবে আবহাওয়া খারাপ থাকলে শেষ মূহুর্তে বুকিং বাতিল করা যায়। কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে ইতোমধ্যে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তাদের বুকিং সম্পন্ন। চাহিদা বেশি থাকায় তারা আল্পস পর্বতে এ ধরনের আরো বেড স্থাপনের পরিকল্পনা করছেন।



রাইজিংবিডি/১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬/এনএ/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়