ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

‘লাইটিং এক্সপো’-তে প্রশংসা পাচ্ছে ওয়ালটন পণ্য

শারমিনা আজিজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩৭, ২৮ অক্টোবর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘লাইটিং এক্সপো’-তে প্রশংসা পাচ্ছে ওয়ালটন পণ্য

শারমিনা আজিজ : দেশীয় কোম্পানি ওয়ালটন দেশেই আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিভিন্ন লাইটিং পণ্য সামগ্রী তৈরি করছে তা জানা ছিল না। মেলায় না আসলে হয়তো এ বিষয়টি সর্ম্পকে কোনো ধারণাই পেতাম না।

 

আজ শুক্রবার রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় ‘বাংলাদেশ লাইটিং এক্সপো-২০১৬’ এর দ্বিতীয় দিনে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে এসে এমন মন্তব্য করেছেন মিরপুরের কামাল হোসেন নামে এক প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ব্যবসায়ী।

 

তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, মেলায় আসলে সাধারণত যে কোনো পণ্য সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা লাভ করা যায়। মেলায় সমজাতীয় পণ্যের বিভিন্ন কোম্পানি অংশ নেয়। এতে করে, কোন ব্র্যান্ডের পণ্যের গুণগতমান কত ভাল এবং দামেও সাশ্রয়ী তা সহজেই জানা যায়। এ কারণেই আজ ছুটির দিনে বাড়তি অভিজ্ঞতা নিতে মেলায় এসেছি। চার পাঁচটি স্টল ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন ধরনের লাইটিং পণ্য সামগ্রী দেখছি। এরমধ্যে দেশীয় কোম্পানি ওয়ালটনকে দেখলাম একটু ব্যতিক্রম। তারা বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শনীর পাশাপাশি উৎপাদন প্রক্রিয়ার ভিডিও চিত্রও প্রদর্শন করছে। তবে সবচেয়ে ব্যতিক্রমি  ব্যাপারটি হলো- লাইটিং টেস্টিং ইক্যুইপমেন্টের মাধ্যমে ক্রেতাদের পণ্যের গুণগত মান সরাসরি দেখাচ্ছে। যা আমার এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা।

 

কামাল হোসেন আরো বলেন, আমি এ স্টলে প্রায় একঘণ্টা ধরে ওয়ালটন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন পণ্যের গুণগত মান, মডেল এবং দাম সম্পর্কে ধারণা নিয়েছি। দেখলাম ওয়ালটনের এলইডি লাইটিং পণ্যের মান মেলায় অন্যান্য ব্র্যান্ডের পণ্যের চেয়ে উন্নত এবং দামেও অনেক সাশ্রয়ী।

 

ওয়ালটন স্টলে আরো এক দর্শনার্থী ও পেশায় ঠিকাদারি  ব্যবসায়ী মো. সারোয়ার জামাল বলেন, দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন যে এতো সুন্দর ডিজাইনের এলইডি ও প্যানেল লাইট, রিমোর্ট কন্ট্রোল লাইট ও ফ্যান উৎপাদন  ও বাজারজাত করছে তা আমার জানা ছিল না। এখানে এসে ওয়ালটনে কর্মকর্তাদের থেকে আরো জানতে পারলাম- তারা ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইনের পণ্যও তৈরি করে দিতে সক্ষম। যা আমার জানা মতে অন্য কোম্পানির ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। আসলে দেশেই করছে বিধায় ওয়ালটনের পক্ষে এটা সম্ভব হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।

 

মো. সারোয়ার জামালের মতো ওয়ালটনের প্যাভিলিয়নে এসে হাসিমুখে বিদায় নেন প্রকৌশলী আয়শা আক্তার। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আছে। প্রতিমাসে প্রচুর লাইট, ফ্যান ও ব্যাটারিসহ অনেক পণ্য লাগে।  সাধারণত বিদেশি ব্র্যান্ডের পণ্যগুলোই আমি কিনে থাকি। অবশ্য কিছুদিন আগে আমি জানতে পেরেছি, দেশীয় কোম্পানি ওয়ালটন ব্র্যান্ডেরও নাকি ইলেকট্রিক্যাল পণ্য বাজারে পাওয়া যায়। কিন্তু, সত্যি বলতে ওয়ালটন পণ্যের গুণগতমান নিয়ে এতদিন কিছুটা দ্বিধায় ছিলাম। মেলায় ওয়ালটনের স্টলে এসে আমার দ্বিধা কেটে গেছে। এখানে এসে ওয়ালটন পণ্যের উচ্চ গুণগতমান সম্পর্কে সরাসরি ধারণা পেলাম। পাশাপাশি, নিজেই যাচাই করে দেখলাম, একই মানের বিদেশি অন্যান্য ব্র্যান্ডের পণ্যের দামের তুলনায় ওয়ালটন পণ্য অনেক সাশ্রয়ী। আগামী দিনগুলোতে ঠিকাদারি কাজে ওয়ালটন পণ্যকেই প্রাধান্য দিবেন বলে জানান তিনি।

 

মেলায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, আজ ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই বিভিন্ন কোম্পানির সাপ্লাই ম্যানেজার, কমার্শিয়াল অফিসার, কনসালটেন্টসহ বিভিন্ন ধরনের ক্রেতারা মেলা পরিদর্শনে এসেছে। তারা বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেছেন। তবে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে  ক্রেতাদের বেশি ভিড় দেখা গেছে। বিশেষ করে, ওয়ালটনের এলইডি বাল্ব, টিউব লাইট, ডেকোরেটিভ টিউব লাইট, প্যানেল লাইট, ফ্লাড লাইট, স্ট্রিট লাইট, ইলেকট্রিক সুইস-সকেট, সিলড এসিড লেড রিচার্জেবল ব্যাটারি, রিচার্জেবল ফ্যান, রিমোর্ট কন্ট্রোল ফ্যান, দেয়াল ও সিলিং ফ্যান মেলায় আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

 

 

মোতাহার নামে এক দর্শনার্থী সপরিবারে মেলার এসেছেন। ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন পণ্য দেখেন। ওয়ালটন স্টলে এসে তাদের নজরে পড়ে রিমোর্ট কন্ট্রোল দেয়াল ফ্যানের দিকে। ফ্যানটি রিমোটের মাধ্যমে বিভিন্ন দিকে ঘুরানো যায়। এতে কোনো রশি টানার দরকার হয় না। জায়গায় বসেই রিমোর্টের মাধ্যমে ওয়ালটনের দেয়াল ফ্যান চালিয়ে দেখলেন তিনি। সুন্দর ডিজাইন, উচ্চ গুণগত মান এবং দামও মাত্র ৩ হাজার ৭০০ টাকা হওয়ায় ওয়ালটনের দেয়াল ফ্যানটি কিনতে আগ্রহ দেখান তিনি। যেহেতু প্রদর্শনীতে সরাসরি পণ্য বিক্রি হচ্ছে না, তাই ফ্যানটি কিনতে কুড়িল ওয়ালটন প্লাজায় চলে যান মোতাহার।

 

ওয়ালটনের সহকারী পরিচালক এবং মেলার ইনচার্জ মুক্তাদির বিল্ল্যাহ এ প্রতিবেদককে বলেন, মেলার প্রথম দিন থেকেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের কাছ থেকে বেশ সাড়া পাচ্ছি। আজ দ্বিতীয় দিনে বিভিন্ন কোম্পানির কর্মকর্তাসহ সব ধরনের ক্রেতা ভিড় জমাচ্ছে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে। মেলায় দেড় শতাধিক মডেলের বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রিক্যাল পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। সুন্দর ডিজাইন, বিশ্বমান সম্পন্ন, দেশব্যাপী বিস্তৃত বিশাল সার্ভিস নেটওয়ার্ক থেকে সর্বোত্তম ও দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবার নিশ্চয়তা, সহজ কিস্তি সুবিধা এবং দামেও সাশ্রয়ী হওয়ায় সহজেই ক্রেতাদের দৃষ্টি কেড়েছে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের পণ্য।

 

তিনি জানান, মেলার প্রথম ও দ্বিতীয় দিন মিলে মোট ২৪টি গ্রুপ অব কোম্পানিজ ওয়ালটন পণ্য ক্রয়ের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছে। ইতিমধ্যে, প্যারাগণ গ্রুপের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ এলইডি লাইটের অর্ডার পাওয়া গেছে। অন্য কোম্পানির তুলনায় ওয়ালটনের লাইটসহ সব ধরনের পণ্যের সুবিধা এবং গুণগত মান সরাসরি ক্রেতাদের কাছে উপস্থাপন করছি। ভবিষ্যতের জন্য এটি ব্যান্ড হিসেবে কাজ করছে।

 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত তিন দিনব্যাপী লাইটিং এক্সপোতে এলইডি লাইট, সিএফএল লাইট, এলইডি প্যানেল রাইট, লাইটিং অ্যাকসেসরিজ, ডেকোরেটিভ সুইচ ও সকেট, রুম হিটার, গিজার ও ওয়াটার হিটার, ডেকোরেটিভ লাইটিং ও ঝাড়বাতি, এয়ার-কন্ডিশনার, কার্পেট, সোলার প্যানেল, সোলার চালিত লাইট, ইমার্জেন্সি লাইট, স্ট্রিট লাইট, লাইট শেড, ল্যান্ডস্ক্যাপ এবং বাগানের জন্য বিভিন্ন ধরনের লাইট প্রদর্শন করা হচ্ছে।

 

ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য মেলার গেট সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত উম্মুক্ত থাকবে। আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত চলবে এই মেলা।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ অক্টোবর ২০১৬/আকরাম হোসেন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়