কূটনীতিক সুবিধাসম্পন্ন পাজেরো জব্দ
এম এ রহমান || রাইজিংবিডি.কম
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিলাসবহুল মিতসুবিশি পাজেরো গাড়ি জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা। কূটনীতিক কোটার অপব্যবহার করে শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে গাড়িটি আমদানি করে পরবর্তীতে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল।
মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরার এক বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ওই বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচাল ড. মইনুল খান রাইজিংবিডিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গাডিটি ইউএনডিপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মি. স্টিফেন প্রিসনার শুল্কমুক্ত সুবিধায় এনে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের ১৮ নম্বর রোডের আশিকুল হাসিব তারিকের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। গাড়িটির আনুমানিক বাজার মূল্য ১ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ওই গাড়ির ওপর নজরদারি করার পর গতকাল গাড়িটি আশিকুল হাসিব তারিক নামে এক ব্যক্তির বাড়ির গ্যারেজ থেকে তুলে আনা হয়। আজ কাগজপত্র যাচাই করে নিশ্চিত হয়ে গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে। বাড়ির মালিক বাড়িতে না থাকলেও তার স্ত্রী গাড়ির কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি।
তিনি প্রথমে শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসহযোগিতামুলক আচরণ করেন। তবে তিনি মৌখিকভাবে স্বীকার করেন যে, গাড়িটি শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ও তারা কূটনীতিক সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তির থেকে ক্রয় করেছেন এবং তা ইনকাম ট্যাক্স ফাইলে দেখানোর চেষ্টা করছেন।
আটককালে গাড়িটিতে হলুদ রেজিস্ট্রেশন প্লেট পাওয়া যায়। হলুদ নম্বর প্লেট সম্বলিত গাড়ি শুধুমাত্র কূটনীতিক সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ব্যবহার করতে পারেন।
কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায়, গাড়িটি শুল্কমুক্তভাবে আমদানি করা হয়। শুল্কমুক্ত হিসেবে ছাড় করা গাড়ি বিক্রি না করার শর্ত থাকলেও তা পালন করা হয়নি। গোপনে নজরদারি এবং সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে গাড়িটি জব্দ করা হয়।
গাডিটি ইউএনডিপির ঊর্ধতন কর্মকর্তা মি. স্টিফেন প্রিসনার শুল্কমুক্ত সুবিধায় এনেছিলেন। তিনি অনুমতি না নিয়ে এবং শুল্ক পরিশোধ ব্যতিরেকে হস্তান্তর করেছিলেন। এক্ষেত্রে তিনি শুল্কমুক্ত সুবিধার অপব্যবহার করে শুল্ক আইন লঙ্ঘন করেছেন। তিনি অবৈধভাবে গাড়ি হস্তান্তর করে এর মধ্যে দেশ ত্যাগ করেছেন। এখন ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একইভাবে, শুল্ক পরিশোধ না করে বর্তমান ব্যবহারকারী আশিকও আইন লঙ্ঘন করেছেন। হলুদ প্লেটের পদাধিকার না থাকলেও তিনি এটি ব্যবহার করায় অসততার আশ্রয় নিয়েছেন।
সূত্র আরো জানায়, আশিকুল হাসিব তারিক ইউএনডিপির প্রাক্তন স্থানীয় স্টাফ ছিলেন। তবে তিনি কূটনীতিক সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তি নন।
গাড়ি যাচাই করে দেখা যায়, চেসিস নম্বর V46-4028766, ইঞ্জিন 4M40, মডেল Y-V46WG NXF 1। গাড়ির ইঞ্জিন নম্বর সিসি 2835। গাড়ির হলুদ নম্বর প্লেট এজস০৫৯।
এ ব্যাপারে দি কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এর সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও শুল্ক গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ নভেম্বর ২০১৬/এম এ রহমান/এসএন
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন