ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

১০ বছরে অর্থনৈতিক পরিধি বেড়েছে দ্বিগুণ

হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩৩, ২৩ এপ্রিল ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
১০ বছরে অর্থনৈতিক পরিধি বেড়েছে দ্বিগুণ

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : ১০ বছরের ব্যবধানে দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিধি দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানিকীকরণের দিকে ধাবিত হচ্ছে জাতীয় অর্থনীতি। উত্তরাঞ্চলে উচ্চমাত্রার প্রবৃদ্ধিতে গ্রামীণ অর্থনীতি বিকশিত হয়েছে। বেড়েছে খানাভিত্তিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও।

অর্থনৈতিক শুমারি ২০১৩ এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। শুমারিটি তৈরি করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক শুমারি ২০১৩ এর গণনা পরবর্তী যাচাই (পিইসি) রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব কানিজ ফাতেমা এনডিসি। এ সময় বিআইডিএস মহাপরিচালক ড. কে এসএ মুরশিদ, ব্যুরোর মহাপরিচালক মো, বাইতুল আমীন ভুঁইয়া, বিআইডিএসের রিসার্চ ডিরেক্টর ড. জায়েদ বখত্, প্রকল্প পরিচালক দিলদার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত এক দশকে দেশের অর্থনৈতিক ইউনিটের বৃদ্ধি ঘটেছে দ্বিগুনের বেশি। আগের জরিপ থেকে সর্বশেষ অবস্থা পর্যন্ত এ বৃদ্ধির হার ১১৮ ভাগ।

বর্তমান শুমারিকালীন মোট অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা ৮০ লাখ ৭৫ হাজার ৭০৪ টি। ২০০১ ও ২০০৩ এর শুমারিতে এ সংখ্যা ছিল ৩৭ লাখ ৮ হাজার ১৪৪টি। রিপোর্টে বলা হয়, অর্থনৈতিক উন্নয়ন স্পষ্টতর হলেও কর্মকাণ্ডের বৈষম্য এখনও রয়ে গেছে।

জরিপে দেখা গেছে, বিভাগীয় শহরগুলোতে এখনও অর্থনৈতিক বৈষম্য  রয়েছে। সব থেকে বেশি অর্থনৈতিক ইউনিট রয়েছে ঢাকা বিভাগে ২৫ লাখ ৯৯ হাজার ৩৭২টি, চট্টগ্রামে ১৩ লাখ ৮৪ হাজার ৭৫৭টি, রাজশাহীতে ১২ লাখ ১৭ হাজার ৬৩৩টি, রংপুরে ১০ লাখ ৮৮ হাজার ২৫৫টি, খুলনায় ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৮১টি, বরিশালে ৩ লাখ ৮৫ হাজার ২৩৩টি এবং সবচেয়ে কম পরিলক্ষিত হয়েছে সিলেট বিভাগে ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৮৭৩টি।

ব্যবসা ও শিল্পায়নে ভারসাম্যপূর্ণ অগ্রগতি : ব্যবসা ও শিল্পায়নের ক্ষেত্রে সামঞ্জস্যপূর্ণ অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়েছে। ১৯৮৬ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ঢাকা শক্তিশালী ঊর্ধ্বগামী প্রবণতার সঙ্গে স্থায়ীভাবে অর্থনৈতিক ইউনিটের সর্বোচ্চ সংখ্যায় দাঁড়িয়েছে।

১৯৮৬ সালে এর সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৬৫ হাজার ৭৯৯টি। ২০১৩ সালে তা বৃদ্ধি পেয়েছে ২৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৩টিতে।

অর্থনীতির ভিত্তি ক্রমশ শক্তিশালী : বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠানিকীকরণের দিকে ধাবিত হচ্ছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে স্থায়ী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা সময়ের ব্যবধানে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

১৯৮৬ সালে স্থায়ী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ১৫ লাখ ৬১ হাজার ৯৪৯টি। ২০১৩ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ লাখ ৩৪ হাজার ৬১৬টিতে।

খানাভিত্তিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের দ্রুত বিস্তার : দেশে খানাভিত্তিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ড দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। ২০১৩ সালে খানাভিত্তিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে খানার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩০ লাখ ৩৯ হাজার ৩৯৮টি। যা ২০০১ ও ২০০৩ সালে ছিল মাত্র ৩ লাখ ৮১ হাজার ৫৫টি।

গ্রামীণ অর্থনীতি বিকশিত : অর্থনৈতিক শুমারি ২০১৩ তে দেখা যায় যে, ২০০১ ও ২০০৩ সালের চেয়ে ২০১৩ সালে গ্রামের অর্থনীতি শহর এলাকার তুলনায় বৃদ্ধির হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি হয়েছে।

এ হার পল্লী এলাকায় ১৫০ দশমিক ৬০ ভাগ এবং শহর এলাকায় ৬২ দশমিক ৯০ ভাগ। একইভাবে রংপুরের  দারিদ্রপীড়িত এলাকায় ব্যষ্টিক অর্থনৈতিক কাযর্ক্রমে বাস্তব প্রবৃদ্ধি লাভ করেছে।

এ বিভাগে ১৯৮৬ সালে অর্থনৈতিক ইউনিট ছিল ২ লাখ ৮ হাজার ১৩৫টি। কিন্তু ২০১৩ সালে এর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ লাখ ৮৮ হাজার ২৫৫টি।

সেবা খাতের অগ্রণী ভূমিকা : অর্থনৈতিক শুমারি ২০১৩ এর প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে সেবা খাতের কাযর্ক্রম যেমন মটরগাড়ি এবং মটর সাইকেল মেরামতসহ খুচরা ও পাইকারি ব্যবস্যা সর্বোচ্চ ৪৫ দশমিক ৯১ ভাগ স্থান দখল করে আছে।

পরিবহণ এবং মজুদ ১৩ দশমিক ৬৫ ভাগ, অপর দিকে উৎপাদন ১১ দশমিক ৭৬ ভাগ এবং অন্যান্য সেবা কাযর্ক্রম ৮ দশমিক ৪৮ ভাগ।

প্রসঙ্গত, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ১৯৮৬ সাল থেকে অর্থনৈতিক শুমারি পরিচালনা করে আসছে। ২০১৩ সালে অর্থনৈতিক শুমারিসহ এ পর্যন্ত তিনটি শুমারি সম্পন্ন হলো।

 

 

 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ এপ্রিল ২০১৫/হাসান/সুমন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়