ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

রিফাত হত‌্যা মামলা: আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় উভয় পরিবার

বরগুনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৬, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৭:১২, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
রিফাত হত‌্যা মামলা: আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় উভয় পরিবার

বহুল আলোচিত রিফাত হত্যা মামলায় আদালতের বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন আদালত। দীর্ঘ প্রায় এক বছর তিন মাস পর চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় প্রকাশ হতে চলেছে।

এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন মামলার বাদি ও নিহত রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ। ছেলে রিফাত হত্যার ন্যায় বিচার পাবেন বলে আশা করছেন তিনি। মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরও ন্যায় বিচারের প্রত্যাশা করে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। 

রায়ের দিন ধার্য করার খবরের রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বলেন, ‘‘আশা করি আমার ছেলে হত্যায় যারা জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। আমি শুরু থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আস্থা রেখেছিলাম। আমার ছেলেকে হত্যার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার, অভিযোগপত্র দেওয়া এবং বিচারিক কাজে সহায়তায় রাষ্ট্র যেভাবে সহায়তা দিয়েছে, আমি কৃতজ্ঞ। করোনার কারণে বিচারিক কার্যক্রম কিছুটা বিলম্বিত হলেও পরবর্তীতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ হয়েছে। 

‘আমি বরাবরই বলে আসছি, আমার ছেলেকে হত্যার নেপথ্য কারণ মিন্নি। মিন্নির কারণেই এই হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে। আমি মিন্নিসহ সব আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। বরাবরই আমি সবার সহযোগীতা পেয়েছি, আশা করছি ন্যায় বিচারও পাবো।”

নিহত রিফাতের মা ডেইজী বেগম খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, ‘ছেলেকে তো ফিরে পাবো না, আশা করি রাষ্ট্রের কাছ থেকে ন্যায় বিচার পাবো।’ 

রিফাতের একমাত্র বোন ইসরাত জাহান মৌ। তিনি বলেন, ‘অভিযুক্তদের মধ্যে একজন যিনি এ ঘটনার মূল দোষী, তিনি জামিনে ছিলেন। আবারও তাকে জামিন দেওয়া হয়েছে। এটা দুঃখজনক। তবুও গোটা বিচারিক কার্যক্রম যেভাবে পরিচালিত হয়েছে, আশা করছি আমরা ন্যায় বিচার পাবো।’

এদিকে রায় ঘোষণার দিন পর্যন্ত আইনজীবী মাহবুবুল বারি আসলামের জিম্মায় মিন্নির জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। বরাবরের মতই মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর মিন্নিকে নির্দোষ দাবি করেছেন। 

কিশোর বলেন, ‘‘মিন্নি নিজের জীবন বিপন্ন করে রিফাতকে বাঁচানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে, এটা গোটা দুনিয়ার মানুষ দেখেছে। তারপরও সাক্ষি থেকে আমার মেয়েকে আসামি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অভিযোগ আনা হয়েছে। আশা করছি, বিজ্ঞ আদালত বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে রায় প্রদান করবেন।

‘আমার মেয়ের পক্ষের আইনজীবীরা আদালত রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি খণ্ডন করেছে। আশা রাখি নিশ্চয়ই ন্যায় বিচার পাবো।”

গত ২৬ জুন সকাল সোয়া ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসিরা প্রকাশ্যে রিফাতকে কুপিয়ে গুরুতর যখম করে। ওই দিনই রিফাতকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত‌্যু হয় তার। 
এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। 

গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। একই সঙ্গে রিফাত হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। 

আত্মসমর্পণসহ এ মামলায় ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের মধ্যে ৬ কিশোর অপরাধী শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে রয়েছে। এছাড়া আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ নয় জন জামিনে রয়েছে।

রুদ্র রুহান/সনি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়