ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

এমসি কলেজে গণধর্ষণ: আসামিদের পক্ষে দাঁড়াননি কোনো আইনজীবী

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৩৭, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ০১:৫৭, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
এমসি কলেজে গণধর্ষণ: আসামিদের পক্ষে দাঁড়াননি কোনো আইনজীবী

প্রধান আসামি সাইফুর রহমানকে আদালতে নেওয়া হচ্ছে

সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে নববধূকে গণধর্ষণের মামলায় এখনো পর্যন্ত তিন আসামির পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালত।  

আজ সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) পৃথক শুনানি শেষে তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। তবে এই তিন আসামির পক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। স্থানীয় আইনজীবীরা তাদের পক্ষে দাঁড়াতে রাজি হননি। 

প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, ৪ নম্বর আসামি অর্জুন লস্করকে দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতে নেওয়া হয়। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরাণ (রহ.) থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল চক্রবর্তী তাদের সাতদিনের রিমান্ড চাইলে শুনানি শেষে বিচারক সাইফুর রহমান পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
 
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) খোকন কুমার দত্ত জানান, আদালতে এই দুই আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আদালত আসামিদের কাছে তাদের বক্তব্য জানতে চান। তাদের বক্তব্য শোনার পর আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

এরপর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ৫ নম্বর আসামি রবিউল ইসলামকে একই আদালতে তোলা হয়। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তার সাতদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করলে শুনানি শেষে বিচারক সাইফুর রহমান পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আসামি রবিউল ইসলামের রিমান্ডে শুনানিকালেও আদালতে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

দুটি শুনানিকালে এজলাসে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী দেবব্রত চৌধুরী লিটন। তিনি বলেন, আদালতে দুটি শুনানিকালে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ওকালতনামা দাখিল করেননি। এ কারণে আদালত আসামিদের কাছে বক্তব্য জানতে চান। আসামিরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

আইনজীবী দেবব্রত চৌধুরী লিটন বলেন, সিলেটের কোনো আইনজীবী এই গণধর্ষণ মামলার আসামিদের পক্ষে দাঁড়াতে রাজি হননি।

তিনি আরও বলেন, প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, ৪ নম্বর আসামি অর্জুন লস্কর আদালতকে জানিয়েছেন ছাত্রাবাসের ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা নেই। তারা অপরাধ করেননি। ঘটনা ঘটিয়েছে রাজন, আইনউদ্দিন ও তারেক। তাদের বক্তব্য শোনার পর আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এরই মধ্যে অভিযুক্তরা নানা তথ্য দিয়েছেন। আরও তদন্তের জন্যে তাদের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ঘাট থেকে গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর কিছুক্ষণ পরই হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এ মামলার ৪নং আসামি অর্জুন লস্কর। পরে তাকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এরপর রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে হবিগঞ্জ থেকে মামলার আরও দুই আসামি শাহ মাহবুবুর রহমান রনি এবং রবিউলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া এজাহারে থাকা অজ্ঞাতনামা আসামি রাজন এবং আইনউদ্দিনকেও জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

এ নিয়ে মামলায় এজাহারে থাকা চারজনসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর পলাতক রয়েছেন তারেক এবং মাহফুজুর নামের দুইজন।

এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে বেড়াতে আসা দম্পতির স্বামীকে আটকে রেখে শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কলেজ ছাত্রাবাসে নববধূকে গণধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় ৬ জনের নাম উল্লেখসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ওই গৃহবধূর স্বামী।

নোমান/বকুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়