খুলনার আলোচিত কাশেম হত্যায় একজনের মৃত্যুদণ্ড, বাকিরা খালাস
নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
দীর্ঘ ২৬ বছর পর খুলনার চাঞ্চল্যকর মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং খুলনা চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি শেখ আবুল কাশেমসহ জোড়া খুনের মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।
সোমবার (২৯ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১ টায় খুলনার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সাইফুজ্জামান হিরো এ রায় ঘোষণা করেন।
এতে আসামি তারেককে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসময় আসামি তারেক আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অন্য আসামিদের খালাস দেওয়া হয়েছে। এরা হলেন- তরিকুল হুদা টপি, আব্দুল গফফার বিশ্বাস, ওসিকুর রহমান, মুশফিকুর রহমান, মফিজুর রহমান ও মিল্টন। খালাস পাওয়ায় আসামিরা সন্তোষ প্রকাশ করলেও বাদিপক্ষ ক্ষোভ প্রকাশ করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতিকে দায়ি করেছেন।
এদিকে, আলোচিত এ রায়কে কেন্দ্র করে খুলনার আদালত পাড়ায় ছিল কৌতুহলী মানুষের ভিড়। আদালত পাড়ায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। প্রবেশ মুখে বসানো হয় চেকপোস্ট।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালের ২৫ এপ্রিল দুপুর পৌনে ২ টার দিকে শেখ আবুল কাশেম তার ব্যক্তিগত গাড়ি, (যার নং ০৩-৪৩৭৩) করে নগরীর স্যার ইকবাল রোডে পিকচার প্যালেস মোড় বেসিক ব্যাংকের ম্যানেজারের সঙ্গে দেখা করতে যান। সাক্ষাত শেষে বাড়ির উদ্দেশে পুনরায় গাড়িতে উঠে বসেন। এসময় ৫ থেকে ৬ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী প্রথমে তার ড্রাইভার মিকাইল হোসেনকে গুলি করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে গাড়ির পিছনের গ্লাস ভেঙে কাটা রাইফেল দিয়ে শেখ আবুল কাশেমকে গুলি করে হত্যা করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে ছুড়তে পিকচার প্যালেস মোড় দিকে বীরদর্পে চলে যায়। ওই ঘটনার পর নিহতের পরিবারের লোকজন এসে তাকে গরিব নেওয়াজ ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বেশ কিছুক্ষণ পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ওই ঘটনায় নিহতের ভাইয়ের জামাই মো. আলমগীর হোসেন খুলনা থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে এটি তদন্ত করে সিআইডি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এ মামলায় ১০ জনকে আসামি করে ১৯৯৬ সালের ৫ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার বিচারাধীন সময়ে দু’জন আসামির মৃত্যু হয়। তারা হলেন- সৈয়দ মনিরুল ইসলাম ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ২৫ নং ওয়ার্ডের সাবেক ডেপুটি মেয়র ইকতিয়ার উদ্দিন বাবলু। তিনিও সন্ত্রাসীর গুলিতে বানরগাতি এলাকায় নিহত হন।
রায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড এবং বাকি সব আসামি খালাস পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ আইনজীবী (পিপি) অ্যাড. আরিফ মাহমুদ লিটন। এ জন্য তিনি মামলার তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতিকে দায়ি করেন। এ বিষয়ে বাদিপক্ষের মতামত সাপেক্ষে উচ্চ আদালতে আপিল করে সব আসামিকেই শাস্তির আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
খুলনা/নূরুজ্জামান/টিপু
আরো পড়ুন