ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

চট্টগ্রাম থেকে নানা কৌশলে শহর ছাড়ছে মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩১, ১০ মে ২০২১   আপডেট: ১৫:৩৫, ১০ মে ২০২১
চট্টগ্রাম থেকে নানা কৌশলে শহর ছাড়ছে মানুষ

ঈদকে সামনে রেখে লকডাউনের মধ্যেও দুরপাল্লার বাস, মাইক্রোসহ নানা কৌশলে চট্টগ্রাম নগরী ছেড়ে ভিন্ন জেলায় স্বজনদের কাছে চলে যাচ্ছে মানুষ।

সরকারি নিষেধাজ্ঞায় দুরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও কখনো কখনো পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে অথবা কখনো পুলিশকে ম্যানেজ করে বাস চলাচল করছে। তবে এর মধ্যে রোববার (৯ মে) রাতে চট্টগ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া ১৮টি বাস আটক করেছে হাইওয়ে পুলিশ।

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, দিনের বেলায় দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও মূলত সন্ধ্যার পর নানা কৌশলে বাস চলাচল শুরু হয় চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে। বিশেষ করে চট্টগ্রামের অলংকার, বিআরটিসি, সিনেমা প্যালেস, গরীব উল্লাহ শাহ, একে খান এলাকা থেকে যাত্রী পরিবহন করছে দূরপাল্লার বাস। এই ক্ষেত্রে দূর পাল্লার বড় বাসকে নিরিবিল কোনস্থানে দাঁড় করিয়ে রেখে মাইক্রো বা ছোট গাড়িতে যাত্রী নিয়ে বাসে তুলে দেওয়া হয়। এরপর হাইওয়ে সড়ক ধরে এসব বাস চলাচল করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাসচালক জানান, মাঝে মাঝে পুলিশের চেক পোস্টে গাড়ি দাঁড় করালে এক হাজার বা দুই হাজার টাকা দিলে তারা ছেড়ে দেন। আর এসব কারণে যাত্রীদের কাছ থেকেও দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছে বাস কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী যাত্রী আহসান উল্লাহ রাইজিংবিডিকে জানান, তিনি ৪৮০ টাকা নন এসি বাসের ভাড়া ৯০০ টাকা দিয়ে রোববার রাতে ঢাকা পৌঁছেছেন কোনো ঝামেলা ছাড়াই। রাতে এভাবে অনেক গাড়ি চট্টগ্রাম ছেড়ে বিভিন্ন গন্তব্যে যাচ্ছে।

এই যাত্রী বলেন, ‘পথে দুই দফা পুলিশের চেক পোস্টে গাড়ি আটক করা হলেও বাসের সুপারভাইজার সবকিছু ম্যানেজ করেছেন। আমরা নিরাপদে ঢাকা পৌঁছাতে পেরেছি।’

রাতে দূরপাল্লার বাস চট্টগ্রাম ছেড়ে যাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে চট্টগ্রাম হাইওয়ে পুলিশের বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল হাসনাত জানান, চোখ ফাঁকি দিয়ে অনেক বাস চলাচলের চেষ্ঠা করছে। রোববার রাতে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে চট্টগ্রাম থেকে রাতে দেশের বিভিন্ন জেলায় আন্তঃজেলা গণপরিবহন চলাচল করার সময় বার আউনিয়া চেকপোস্ট ১৮টি বাস আটক করা হয়েছে। এসব বাসের বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা দেওয়া হয়। এই বাসগুলো যাত্রীদের কাছ দ্বিগুণ ভাড়া নিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাচ্ছিল।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ মোহাম্মদ আবদুর রউফ জানান, আন্তঃজেলা গণপরিবহন চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও কিছু সংখ্যক অসাধু পরিবহন ব্যবসায়ী এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃপক্ষ এ ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কঠোর অভিযান পরিচালনা করছে এবং যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

এরমধ্যে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঢাকা, ময়মনসিংহ, ফেনী, নোয়াখালী ইত্যাদি রুটে যাত্রী পরিবহন করায় ৫০ এর অধিক বাস ও মাইক্রোবাস আটক করা হয়েছে। নগরীর জনসাধারণকে তাই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকালীন সময়ে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ঈদের ছুটিতে বাড়িতে থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ  ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

চট্টগ্রাম/রেজাউল/বুলাকী

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ