ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কঠোর লকডাউনে জনশূন্য চট্টগ্রাম 

রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৭, ২৩ জুলাই ২০২১   আপডেট: ০১:১৯, ২৪ জুলাই ২০২১

শুক্রবার (২৩ জুলাই) ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া ৪র্থ দফা কঠোর লকডাউনের প্রথম দিন সত্যিকার অর্থেই কঠোরভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। চট্টগ্রাম মহানগরী, চট্টগ্রাম জেলা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন শহর যেন পুরোপুরি মানুষ ও যানবাহন শূন্য। শহরে ওষুধের দোকান ছাড়া খুলেনি কোন দোকানপাট। বন্ধ রয়েছে গার্মেন্টস কারখানাসহ সব ধরনের শিল্প কারখানা। কঠোর লকডাউন নিশ্চিত করতে নগর ও জেলা শহরে টহল দিচ্ছেন সেনাবাহিনী, বিজিবি এবং র‌্যাব সদস্যরা। প্রতিটি মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: ঈদের পর কঠোর লকডাউনের প্রথম সকাল

শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শহর পুরোপুরি যানবাহন শূন্য। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু রিকশা ছাড়া কোনো ধরনের যানবাহন বা গণপরিবহন চলাচল করছে না। জরুরি সেবার আওতাভুক্ত কিছু যানবাহন ছাড়া অন্য কোনো ধরনের যানবাহন সড়কে দেখা যায়নি। চট্টগ্রাম নগরীর অক্সিজেন, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, চকবাজার, জিইসি মোড়, ওয়াসা মোড়, টাইগার পাস, নিউমার্কেট, আগ্রাবাদ, বন্দর, ইপিজেডসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন যানবাহন শূন্য চিত্র দেখা গেছে। জরুরি প্রয়োজনে যারা ঘর থেকে বের হয়েছেন তারা যৌক্তিক কারণ ও আইডি কার্ড প্রদর্শন করে চলাচল করতে পারছেন। 

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোমিনুর রহমান বলেন, কঠোর লকডাউন নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিট্রেটরা সকাল ১০টা থেকে শহরজুড়ে দায়িত্ব পালন করছেন। জরুরি সেবার আওতাভুক্ত ছাড়া কেউ অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হলেই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন ম্যাজিট্রেটরা।

 নগরীর ৪টি প্রবেশ পয়েন্টে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর টহল টিম দায়িত্ব পালন করছে। চট্টগ্রাম নগরীর বাইরে জেলার বিভিন্ন উপজেলাতেও লকডাউন কঠোরভাবেই বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে জানা গেছে। জেলার রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, মিরসরাই, সীতাকুন্ড, বাঁশখালী, বোয়ালখালী, পটিয়া, সাতকানিয়া চন্দনাইশ, দোহাজারী প্রভৃতি উপজেলায় কঠোর লকডাউন নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে।

আরও পড়ুন: কঠোর লকডাউন: হেঁটে বাসায় ফিরছেন মানুষ

এসব উপজেলাতেও কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করছে না। খুলেনি কোনো ধরনের দোকানপাট। শুধুমাত্র ওষুধের দোকান খোলা রয়েছে। এছাড়া সকাল থেকে চট্টগ্রামে বৃষ্টি এবং শুক্রবার হওয়ায় উপজেলা পর্যায়েও সাধারণ মানুষের চলাচলও তেমন ছিল না।

পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি থেকে রাইজিংবিডির প্রতিনিধি বিজয় ধর জানিয়েছেন, রাঙ্গামাটি শহর এবং জেলার উপজেলা পর্যায়ে লকডাউন কঠোরভাবেই বাস্তবায়িত হচ্ছে। সড়কে কোন যানবাহন নেই, সাধারণ মানুষের কোন চলাচল নেই, শহরের শিল্পকারখানা,দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। জরুরি সেবার আওতাভুক্ত কিছু যানবাহন চলাচল করছে বিচ্ছিন্নভাবে। 

রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান বলেন, জেলায় কঠোর লকডাউন নিশ্চিত করতে ৪ জন ম্যাজিট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। শহরে টহলে রয়েছে সেনাবাহিনী।  একই রকম চিত্র পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানেও।

কক্সবাজার জেলার লকডাউন চিত্রের খবর নিয়ে জানা গেছে, সেখানে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে কক্সবাজারের সব হোটেল মোটেল। সমুদ্র সৈকত পুরোপুরি জনমানব শূন্য। জেলা পুলিশ বিভিন্ন পয়েন্টে চেক পোস্ট বসিয়ে অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হয়ে আসা সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। 

নোয়াখালী থেকে রাইজিংবিডির প্রতিনিধি মাওলা সুজন জানিয়েছেন, লকডাউনের প্রথম দিনে জেলার প্রধান সড়কে কোনো যানবাহন চলাচল করছে না। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট। শহরের অলিগলিতে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ব্যাটারি রিকশা চলাচল করছে।

চাঁদপুর থেকে অমরেশ জয় জানান, পুরো চাঁদপুর জেলায় লকডাউনে কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করছে না। বন্ধ রয়েছে গণ পরিবহন, দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পকারখানা। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিট্রেটরা লকডাউন নিশ্চিত করতে অভিযানে রয়েছেন।

একইভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়িত হওয়ার খবর জানিয়েছেন রাইজিংবিডির জেলা প্রতিনিধিরা। 

চট্টগ্রাম/রেজাউল করিম/এমএম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়