ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

পাঁচ টাকার হাসপাতালে তালা ঝোলালেন বাড়িওয়ালা

আরিফুল ইসলাম সাব্বির || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২৫, ২৭ জুলাই ২০২১  
পাঁচ টাকার হাসপাতালে তালা ঝোলালেন বাড়িওয়ালা

মূল শহর থেকে বেশ দূরের গ্রামে স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত গ্রামবাসীদের সেবায় চিকিৎসাকেন্দ্র খুলেছিলো একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। মাত্র পাঁচ টাকায় রোগী দেখা ও ৩০ ভাগ খরচে ওষুধ সরবরাহ করা হতো। 

তবে করোনাকালে হাসপাতাল পরিচালনার প্রয়োজনীয় অর্থের সংকুলান না করতে পারায় হাসপাতালের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বাড়িওয়ালা। এতে সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন আশপাশের কয়েক গ্রামের বাসিন্দা। 

সম্প্রতি ঢাকার ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের ফোর্ডনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

উপজেলার শেষ প্রান্তে সাভার উপজেলার পাশে অবস্থিত ফোর্ডনগর গ্রামটিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো নয়। আশপাশে নেই ভালো কোনো চিকিৎসাকেন্দ্রও। 

এ পরিস্থিতি দেখে সেখানে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে সেবামূলক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চালু করে মাজেদা ফাউন্ডেশন। সেখানে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মাত্র পাঁচ টাকায় ডাক্তার দেখানো ও ৩০ ভাগ কম মূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হতো। 

এছাড়া সাধারণ ঠান্ডা, জ্বর ও কাশির ওষুধ দেওয়া হতো বিনামূল্যেই। গত এক বছরে আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষের ভরসাস্থল হয়ে ওঠে হাসপাতালটি। তবে করোনাকালে হাসপাতালের অর্থায়ন কমে আসে। বকেয়া পড়ে যায় কয়েক মাসের ঘর ভাড়া। এর পরপরই হাসপাতালের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন বাড়িওয়ালা সাইদুর ইসলাম। 

স্থানীয় পুস্প রানী বলেন, ‘আমাদের গ্রাম উপজেলার একদম শেষ প্রান্তে। আশপাশে কোনো সরকারি হাসপাতাল নেই। ছোট খাটো অসুস্থতায় আগে সাভার বা ধামরাই শহরে যেতে হতো। কিন্তু এই হাসপাতাল হওয়ার পর থেকে অনেক চিকিৎসা নেওয়া যেতো। বিনামূল্যে ওষুধও দিত। অনেক উপকার হতো আমাদের। এটা বন্ধ হয়ে গেলে আবারও আগের মতো ভোগান্তিতে পড়তে হবে।’

রিপন নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘স্বাস্থ্যকেন্দ্র হওয়ায় গ্রামবাসীর কষ্ট করে দূরে যেতে হয় না। প্রাথমিক সব চিকিৎসা সহজে পাওয়া যায়। এটা বন্ধ হলে গ্রামবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা তারেক মিয়াজ বলেন, ‘মূল শহর থেকে অনেকটা দূরে হওয়ায় এখানে ব্যক্তিগত উদ্যোগে একবছর আগে হাসপাতালটি করেছিলাম। তবে লকডাউনে আর্থিক সংকটে পড়ায় বাড়ি ভাড়া বকেয়া পড়েছে। এজন্য একমাস আগে বাড়িওয়ালা ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। বকেয়া পরিশোধে সময় চাইলেও তিনি দিচ্ছেন না।’

বাড়িওয়ালা সাইদুর ইসলামের বলেন, ‘ভাড়া বকেয়া থাকায় হাসপাতালে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি। ভাড়া পরিশোধ করলেই তা খুলে দেওয়া হবে।’

ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকি বলেন, ‘আইনগতভাবে এখানে আমাদের কিছু করার নেই। এছাড়া আমরা কোনো অভিযোগও পাইনি। অভিযোগ পেলে বাড়িওয়ালার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মানবিকভাবে দেখার অনুরোধ করা যেতে পারে।’

সাভার/সনি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ