ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

‘কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে বা, বেশি দিন বাঁচমু না’

ধামইরহাট (নওগাঁ) সংবাদদাতা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৮, ৫ নভেম্বর ২০২১  
‘কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে বা, বেশি দিন বাঁচমু না’

মোখলেস রহমান (৬৫) এক সময় দাপিয়ে কাজ করে সংসার চালালেও বর্তমানে কিডনী রোগে আক্রান্ত তিনি। কাজ করতে পারেন না। অসহায়ের মতো ঘরে পরে থাকেন। 
প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে তিনি বলেন, ‘মোর কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে বা! মুই আর বেশি দিন বাঁচমু না। মোক এটা ঘর করে দিলে অসুস্থ মা আর বউ নিয়ে রাত্রে এনা শান্তিতে ঘুমাতে পারলো হিনি।' 

মোখলেস নওগাঁর ধামইরহাটের জাহানপুর ইউনিয়নের বিকন্দখাস গ্রামের বাসিন্দা।  আয় করতে না পারায় এখন তার সংসারে নেমে এসেছে অসচ্ছলতার অন্ধাকর। এখন তাকে শতবর্ষী মা ও স্ত্রীকে নিয়ে নিদারুন কষ্টেই জীবন অতিবাহিত করতে হচ্ছে।  

আরো পড়ুন:

শুক্রবার (৫ নভেম্বর)সরেজমিনে মোখলেসের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই কেবল একটিমাত্র মাটির ঘর। ঘরটির একপাশ বর্ষার পানিতে ভেঙে গেছে। ফলে স্ত্রী তহুরা খাতুন বাসা বাড়িতে যা আয় করেন তা দিয়েই চলছে তাদের জীবন। তহুরা তার জমানো টাকা দিয়ে ঘরের চারপাশে কোনো রকমে টিনের বেড়া দিয়েছেন। এখন ওই ঘরেই বৃদ্ধা মা ও স্ত্রীকে রাত কাটাতে হয় মোখলেসকে। 

মোকলেসআলী বলেন, 'মোর কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে বা.! মুই আর বেশি দিন বাঁচমু না। মোক এটা ঘর করে দিলে অসুস্থ মা বউ রাত্রে এনা শান্তিতে ঘুমাতে পারলো হিনি।'

স্ত্রী তহুরা খাতুন বলেন, ‘আমার সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম স্বামীর কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। বাসা বাড়িতে কাজ করে যতটুকু টাকা পাই তা দিয়ে সংসার চলে না। স্বামী-শাশুড়ির চিকিৎসা খরচ মিটাবো কিভাবে?’ 

তিনি আরো বলেন, ‘ঘর নাই। রাতে ঘুমাবার জায়গা টুকুও নেই। সকাল হলেই সূর্যের আলোয় ঘুম ভেঙ্গে যায়। একটা ঘরের জন্য চেয়ারম্যানের কাছে গেলে চেয়ারম্যান খালি আশ্বাস দেয়।’
এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসাবে একটি বাড়ির আবেদন করেন।

শতবর্ষী বৃদ্ধা আবেজন বিবি বলেন, 'এই ঠান্ডাত মোর ছলটা কেংকা করে থাকবে বা, মোক এটা ঘর করে দি।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাহানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওসমান আলী বলেন, ‘ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে প্রতি বছর আমরা তিনটি করে ঘর পেয়ে থাকি। এবার নতুন করে ঘর বরাদ্দ পেলে ওই পরিবারকে দেওয়া হবে।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার গণপতি রায় বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

অরিন্দম/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়