ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

তিস্তার ভাঙনে ঘর-বাড়ি হারিয়েছে ৪০০ পরিবার 

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২৩, ২ সেপ্টেম্বর ২০২২   আপডেট: ১৭:৪৫, ২ সেপ্টেম্বর ২০২২
তিস্তার ভাঙনে ঘর-বাড়ি হারিয়েছে ৪০০ পরিবার 

তিস্তার তীব্র ভাঙনে বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন নদী পাড়ের মানুষজন

তিস্তা নদীর ভাঙনে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের ৪০০ পরিবার ঘর-বাড়ি হারিয়েছেন। ভাঙনের কারণে নদী পাড়ের মানুষজন অসহায় হয়ে পড়লেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে এখনো কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থরা। 

এদিকে তিস্তায় স্থায়ী ভাঙন রোধে কোনো প্রকল্প না থাকলেও জরুরুী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। 

আরো পড়ুন:

সরেজমিনে জানা গেছে, খরস্রোতা তিস্তা প্রতিমহুর্তেই ভাঙছে পাড়। ভাঙন এতোটাই তীব্র হয়ে উঠেছে যে মানুষজন তাদের ঘর-বাড়ি সরিয়ে নেওয়ারও সময় পাচ্ছেন না। এই পরিস্থিতি সহায় সম্বল হারিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন অতিবাহিত করছেন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো।

এদিকে শুধু উলিপুরের বজরা ইউনিয়নে তিস্তার গর্ভে বিলীন হয়েছে দুইটি মাদ্রাসা, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, ব্রাকস্কুলসহ প্রায় চার শতাধিক ঘর-বাড়িসহ শতশত একর ফসলি জমি। এ অবস্থায় তিস্তার ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ভুক্তভোগীদের।

উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের পশ্চিম বজরা গ্রামের আব্দুল হামিদ বলেন, ‘গত কয়েক বছরে তিস্তা নদীর এমন ভাঙন দেখি নাই। মুহুর্তেই ঘর-বাড়ি নদীতে চলে যাচ্ছে। গত তিনদিনে আমরা ঘর-বাড়ি হারানো প্রায় আড়াই শতাধিক পরিবার সড়ক ও অন্যের জায়গায় আশ্রয় নিয়ে আছি। আমদের এখন কোথাও যাওয়ার ঠিকানা নেই।’ 

একই গ্রামের হামিদা বেগম বলেন, ‘তিস্তায় তিনবার আমার বাড়ি ভাঙছে। আবারো ভাঙনের কবলে পড়েছি। হয়তো দু’একদিনের মধ্যেই আমার বাড়ি নদী গিলে ফেলবে। এখনতো আর যাওয়ার জায়গা নাই। আবাদি জমি, বাগান কিছুই থাকবে না।’

বজরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম সরদার বলেন, ‘শুধু আমার ইউনিয়নেই ৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এতে করে প্রতিদিনই ঘর-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে অনেক পরিবার। আমি এ পর্যন্ত ভাঙনের শিকার সাড়ে ৪০০ পরিবারের তালিকে করেছি। তিস্তার ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে আমি বিভিন্ন দপ্তরে গেছি। অবশেষে কিছু জিওব্যাগ দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেগুলোতে বালি ভরে নদীর পাড়ে ফেলানোর কাজ শুরু হয়েছে। তবে এই সামান্য জিওব্যাগ দিয়ে কাজ হবে না। অন্তত এক লাখ জিওব্যাগ লাগবে।’   

তিস্তার বামতীরে বজরা ইউনিয়নে ভাঙনের কথা স্বীকার করে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ-আল-মামুন বলেন, ‘ভাঙন রোধে জরুরী ভিত্তিতে জিওব্যাগ ফেলানো হচ্ছে। যেহেতু তিস্তা নিয়ে মহা পরিকল্পনা রয়েছে সে করণে কোনো প্রকল্প নেই। বজরার এই ভাঙন কবলিত এলাকা রংপুর বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী পরিদর্শন করেছেন। শুক্রবার রংপুর বিভাগীয় কমিশার, জেলা প্রশাসকসহ পরিদর্শন করেছেন। আমরা প্রকল্প তৈরি করে পাঠিয়েছি। আশা করি ব্যবস্থা নিতে পারবো।’  

বাদশাহ সৈকত/ মাসুদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়