মাগুরায় চাল পাচারের অভিযোগে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
মাগুরা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
মাগুরার শালিখা উপজেলার আড়পাড়া সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে প্রায় সোয়া কোটি টাকা মূল্যের ১৩০ মেট্রিক টন চাল পাচারের অভিযোগে শফিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) তাকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠায় পুলিশ। তার বিরুদ্ধে গুদামের বিপুল পরিমাণ চাল পাচারের পর বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে। তিনি গুদাম কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
শালিখা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সালমা চৌধুরী বাদী হয়ে শফিকুরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনা তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
পুলিশ জানায়, গত নভেম্বরের শেষ দিকে আড়পাড়া সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে সরকারি চালের মজুদ নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়। পরিপ্রেক্ষিতে খুলনা আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুস সালামের নির্দেশে মাগুরা জেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনোতোষ কুমার মজুমদার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত চলাকালে প্রাথমিকভাবে কমপক্ষে ১৩০ মেট্রিক টন চাল পাচারের বিষয়টি নিশ্চিত হন তিনি।
পরে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই গুদাম সিলগালা করেন। এছাড়া খাদ্য বিভাগের নির্দেশে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সালমা চৌধুরী বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেন। পুরো ঘটনা তদন্তে মাগুরা জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, কুষ্টিয়ার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, খুলনা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের একজন রসায়নবিদকে সদস্য করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শফিকুর রহমান দীর্ঘদিন ধরেই সরকারি চাল পাচার করে খোলা বাজারে সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি করে আসছিলেন। এ ঘটনা তদারকিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সালমা চৌধুরী যোগসাজশ করে বিষয়গুলো ধামাচাপা দেন।
গুদাম সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি ১৫ দিন পরপর গুদাম পরিদর্শন করার নিয়ম থাকলেও সালমা চৌধুরী গুদাম পরিদর্শন না করেই স্টক রেজিস্ট্রারে সই করেন। এমনকি, গত ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত খাদ্যের মজুদ ঠিক আছে মর্মে তিনি সই করেন।
বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন। এরপরই শফিকুর রহমানকে প্রত্যাহার করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এতে সালমা চৌধুরী নিজেও বিপাকে পড়েন এবং কর্মকর্তাদের নির্দেশে তিনি মামলা করতে বাধ্য হন। তিনি মামলার বাদী হলেও যেহেতু তাকে ঘিরেই ঘটনা ফলে সংশ্লিষ্ট মহলে এ নিয়ে আলোচনা রয়েছে।
এ বিষয়ে মাগুরা জেলার ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনোতোষ কুমার মজুমদার বলেন, গুদাম সিলগালা করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনায় কে জড়িত তদন্ত কমিটি এবং তদন্তকারী সংস্থা খুঁজে বের করবেন। যারাই জড়িত থাকুক নিশ্চয়ই আইনের আওয়তায় আসবেন, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবেন।
মাগুরা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ বলেন, এটা ৪০৯ ধারার অভিযোগ। ফলে সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরাসরি আমরা তদন্ত করতে পারি না। এ বিষয়ে দুদক কাজ করছে, তারা ভালো বলতে পারবেন।
শাহীন/তারা
আরো পড়ুন