ঢাকা     রোববার   ০৫ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২২ ১৪৩১

খুলনায় তালুকদার আবদুল খালেকেই আস্থা আ. লীগের 

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৭, ১৫ এপ্রিল ২০২৩  
খুলনায় তালুকদার আবদুল খালেকেই আস্থা আ. লীগের 

তালুকদার আব্দুল খালেক

আসন্ন খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে তালুকদার আব্দুল খালেকের উপরেই আস্থা রেখেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। পুনরায় তাকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়েছে দলটি। 

শনিবার (১৫ এপ্রিল) দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত পত্রে মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়। খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা এ প্রতিবেদককে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তালুকদার আব্দুল খালেক কেসিসির বর্তমান মেয়র। একই সঙ্গে তিনি আওয়ামী লীগের খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগেও তিনি কেসিসি মেয়র এবং বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মংলা) আসনের একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি সরকারের ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। 

আওয়ামী লীগ দলীয় সূত্র জানায়, খুলনায় বর্তমান মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকসহ খুলনা মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, সদস্য রুনু ইকবাল এবং খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলামও কেসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে অংশ নিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।  

সূত্রমতে, কেসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের নাম সুপারিশ করে মহানগর আওয়ামী লীগ। গত ৮ এপ্রিল মহানগর আওয়ামী লীগের এক বর্ধিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে ৯ এপ্রিল তালুকদার আবদুল খালেকের পক্ষে দলীয় মনোনয়ন ফরম কেনেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। 

তালুকদার আবদুল খালেক খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি ২০০৮ ও ২০১৮ সালে কেসিসি নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন। তবে ২০১৩ সালের নির্বাচনে তিনি বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন।

এর আগে ২০১৮ সালের ১৫ মে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক ১ লাখ ৭৪ হাজার ৮৫১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। সেই নির্বাচনে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তিনি পেয়েছিলেন ১ লাখ ৯ হাজার ২৫১ ভোট। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুজ্জাম্মেল হক ১৪ হাজার ৩৬৩, জাতীয় পার্টির এস এম শফিকুর রহমান (মুশফিক) ১ হাজার ৭২ এবং সিপিবির মিজানুর রহমান ৫৩৪ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছিলেন। 

৭১ বছর বয়সী তালুকদার আবদুল খালেকের রাজনৈতিক জীবনও বর্ণময়। সংসদ সদস্য ছিলেন বেশ কয়েকবার। হয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ছিলেন। খুলনা-বাগেরহাট মিলিয়ে প্রতাপের সঙ্গেই রাজনীতির অঙ্গনে রাজত্ব করছেন তিনি।

১৯৫২ সালে জন্ম নেওয়া তালুকদার আবদুল খালেক জনপ্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালনের ইতিহাস অনেক পুরনো। খুলনা যখন পৌরসভা ছিল, তখন কমিশনার ছিলেন তিনি। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত কমিশনার ছিলেন এই রাজনীতিবিদ।

খুলনা শহরে বাস হলেও তিনি সংসদ সদস্য হন আদি নিবাস বাগেরহাটের রামপাল-মোংলা আসন থেকে। ১৯৯১ সালে প্রথম নির্বাচিত হওয়ার পর ১৯৯৬ সালেও বাগেরহাট-৩ আসনে সংসদ সদস্য হন তিনি। এরপর ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বভারও পান তালুকদার আবদুল খালেক। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে আবারও বাগেরহাট-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

২০০৮ সালে কেসিসি নির্বাচনে অংশ নিয়ে ২৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতে প্রথম মেয়র হন তালুকদার আবদুল খালেকে। ফলে ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে নিজের আসনটি স্ত্রীকে ছেড়ে দেন তিনি। 

২০০৩ সালে ২৫ ডিসেম্বর মঞ্জুরুল ইমামের মৃত্যুর পর ২০০৪ সালে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন খালেক। তার আগে একই শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

২০১৩ সালে মেয়রের মেয়াদ পূর্ণের পর নিজের দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় দলীয় সমর্থন নিয়ে পুনরায় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন তালুকদার আবদুল খালেকে। কিন্তু হেরে যান বিএনপি নেতা মনিরুজ্জামান মনির কাছে। এরপর ২০১৪ সালে সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের আসনটিতে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তালুকদার আবদুল খালেকে।

উল্লেখ্য, ৩ এপ্রিল খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ওই তফসিল অনুযায়ী আগামী ১২ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৬ মে, বাছাই ১৮ মে এবং ২৫ মের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন।

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়