ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

এবার সার্টিফিকেট পোড়ালেন ঢাকা কলেজের সাবেক ছাত্র

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫৮, ৩১ মে ২০২৩   আপডেট: ২০:৪৫, ৩১ মে ২০২৩
এবার সার্টিফিকেট পোড়ালেন ঢাকা কলেজের সাবেক ছাত্র

এবার নেত্রকোনায় নিজের সব একাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেছেন আব্দুস সালাম নামের ঢাকা কলেজের সাবেক এক শিক্ষার্থী।

তার দাবি, সরকারি চাকরির জন্য অসংখ্য আবেদন করেও তিনি চাকরি পাননি। এছাড়া, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সও শেষ। তাই সব একাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেছেন।

মঙ্গলবার (৩০ মে) দিবাগত রাতে সালাম তার সার্টিফিকেটগুলো আগুনে পুড়িয়ে ফেলেন। পরে সেই ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করলে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। এতে পক্ষে-বিপক্ষে অনেকেই নানান মন্তব্য করেছেন।

আব্দুস সালাম মোহনগঞ্জ পৌর শহরের দেওথান গ্রামের শামছুর রহমানের ছেলে। শহরের স্টেশন রোডে ‘কুটুম বাড়ি’ নামে তার একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। চাকরি না পেয়ে তিনি রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করছেন।

জানা যায়, আব্দুস সালাম ২০০৬ সালে মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০০৮ সালে ময়মনসিংহের আলমগীর মনসুর (মিন্টু) মেমোরিয়াল কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। পরে ঢাকা কলেজ থেকে দর্শন শাস্ত্রে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। 

আব্দুস সালাম জানান, পড়াশোনা শেষে এনএসআই, রেলওয়ে ও পুলিশের এসআইসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে আবেদন করেও চাকরি হয়নি। চাকরির বয়স শেষে বেঁচে থাকার তাগিদে নিজের শহরে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমার বয়স এখন ৩৬। সরকারি-বেসরকারি কোনো চাকরিতেই আর আবেদনের সময় নেই। অকেজো এই সার্টিফিকেট তাই পুড়িয়ে দিলাম। সরকারি চাকরির বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি জানাই। এতে আমার না হোক পরবর্তী প্রজন্ম উপকৃত হবে। তাদের হয়তো এভাবে হতাশায় আর সার্টিফিকেট পোড়াতে হবে না।’

আব্দুস সালাম বলেন, ‘স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছি, রেজাল্টও ভালো। কিন্তু অসংখ্য আবেদন করেও চাকরি হয়নি। অথচ লবিং-ঘুষে অপেক্ষাকৃত কম মেধাবীরাও চাকরি পেয়ে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী পরিবারের সন্তান হয়ে শুরু থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। গ্রুপিং রাজনীতি চাকরি পাওয়ার জন্য ক্ষতিকর হয়েছে।’

বয়সসীমা সবার জন্য না বাড়িয়ে সার্টিফিকেট পোড়ানোর কারণে ইডেন কলেজের ছাত্রী মুক্তাকে চাকরি দেওয়া ঠিক হয়নি উল্লেখ করে সালাম বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী মহোদয় এটা ঠিক করেননি। একজনের জন্য আলাদা নিয়ম হতে পারে না। সবার জন্য চাকরির বয়সসীমা বাড়ানো দরকার। তাহলে সবাই এই সুযোগ পাবে।’

এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, ‘এভাবে সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলা ঠিক নয়। পড়াশোনা আসলে চাকরি পাওয়ার জন্য নয়, জ্ঞান অর্জনের জন্য। এ জ্ঞান জীবনের সর্বক্ষেত্রে কাজে লাগবে। সবার তো চাকরি হয় না। তাই  চাকরির চেষ্টার পাশাপাশি উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টাও করতে হবে। তাহলে এই হতাশাগুলো আর থাকবে না।’

উল্লেখ্য, গত ২৩ মে ফেসবুকে লাইভে এসে নিজের সব অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেন কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি উপজেলার বনগ্রামের মুক্তা সুলতানা।

পরে বিষয়টি একটি টেলিভিশনের মাধ্যমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের দৃষ্টিগোচর হয়। পরে মুক্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন প্রতিমন্ত্রী এবং তার দপ্তরে আসার জন্য অনুরোধ জানান।

এরপর মুক্তাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব সিকিউরড ই-মেইল ফর গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার’ প্রজেক্টে ‘কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন অফিসার’ পদে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

সার্টিফিকেট পোড়ানো কি অপরাধ?

যোগ্যতায় সফল না হয়ে ফেসবুককে ঢাল বানানো হচ্ছে, কীসের ইঙ্গিত দিলেন পলকপত্নী

সার্টিফিকেট পোড়ানো ‍মুক্তাকে ৩৫ হাজার টাকা বেতনের চাকরি দিলেন পলক

মিলন/কেআই

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়