ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৮ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

হায়দারকে ইজিবাইক উপহার দিলো পুলিশ

বগুড়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৪, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩  
হায়দারকে ইজিবাইক উপহার দিলো পুলিশ

বগুড়া শহরের পার্করোডে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা (ইজিবাইক) হারানো সেই হায়দার আলীকে অটোরিকশা উপহার দিয়েছে বগুড়া জেলা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী তার হাতে অটোরিকশার চাবি তুলে দেন।

আরো পড়ুন:

এর আগে গত ১৩ জুলাই বগুড়া শহরের পার্করোড এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা (ইজিবাইক) চুরি হয়ে যায় হায়দার আলীর। উপার্জনের একমাত্র সম্বল হারানোর পর কান্না থামছিলো না।

এদিকে উপার্জন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবার নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করছিলেন তিনি। হায়দারের ইজিবাইক হারানোর প্রতিবেদন  রাইজিংবিডিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রকাশ করে। বিষয়টি নজরে আসার পর তাৎক্ষণিক জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে হায়দারকে নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। সে সময় তার হারানো অটোরিকশা উদ্ধারের চেষ্টা এবং সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়। পরে আজ তাকে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা (ইজিবাইক) দেওয়া হলো।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্বিক) স্নিগ্ধ আকতার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সুমন রঞ্জন সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শরাফত ইসলাম ও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইহান ওলিউল্লাহ।

এছাড়া হায়দার আলীর স্ত্রী তানজিলা আক্তার, শিশু কন্যা হাদিয়া খাতুন ও বড় ভাই আবু সাঈদ উপস্থিত ছিলেন।

অটোচালক হায়দারকে উপহার প্রদানের সময় পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, হায়দারের ইজিবাইক হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর তার মানবিক আবেদন জেলা পুলিশের নজরে আসে। ইজিবাইক ওনার উপার্জনের একমাত্র উৎস ছিল। সেই সময় জেলা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে হায়দারের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এরপরে হায়দারকে একটি ইজিবাইক উপহার দিতে বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করা হয়৷ তাতে সাড়া দিয়ে ঢাকার ব্রান্ড গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ নুরুল মোস্তফা ইজিবাইক ক্রয়ে অর্থায়ন করেন। হায়দারের পরিশ্রম ও সৎ উপার্জনের সঙ্গী হতে আজ এই ইজিবাইক উপহার দেওয়া হয়েছে৷ জেলা পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি মানুষের মানবিক আবেদনে সাড়া দিতে কাজ করবে।

হায়দার আলী গণমাধ্যমকে বলেন, আমার খারাপ সময়ে পুলিশ যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে তার জন্য কৃতজ্ঞ। অটোরিকশা চুরির পর থেকে স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। পুলিশ সুপারের সহযোগিতায় এই দুই মাস খেয়ে পড়ে বেঁচেছিলাম। আজ উনিই আমাকে নতুন করে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন। পুলিশের প্রতি, সাংবাদিকদের প্রতি ও বিশেষ করে পুলিশ সুপার মহোদয়ের আমার পরিবার কৃতজ্ঞ। জমিজমা ও ধারদেনা করে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় অটোরিকশা কিনেছিলাম। এখন সেই টাকাও পরিশোধ করতে পারবো।

উল্লেখ্য, অটোরিকশা হারানোর চার দিন আগে জমি বিক্রি করে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা কেনেন হায়দার আলী। এরপর গত ১৩ জুলাই ঘটনার আগে হায়দার আলী অটোরিকশা নিয়ে সাতমাথায় আসেন। যানজট কমাতে অটোরিকশা আপাতত সাতমাথায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিলো। ফলে ট্রাফিক পুলিশ শাস্তিস্বরূপ তার অটোরিকশার সিট খুলে পুলিশ বক্সে রেখে দেন। এরপর হায়দার আলী অটোরিকশা রেখে সিট আনার জন্য পুলিশ বক্সে যান। ফিরে এসে দেখেন তার অটোরিকশা নেই। 

/এনাম/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়