ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

শেরপুরে বন্য হাতির তাণ্ডবে নির্ঘুম রাত কাটছে গ্রামবাসীর

শেরপুর প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:০৩, ২০ মে ২০২৪  
শেরপুরে বন্য হাতির তাণ্ডবে নির্ঘুম রাত কাটছে গ্রামবাসীর

ভারতের সীমান্তঘেঁষা শেরপুরের গারো পাহাড়বেষ্টিত নালিতাবাড়ী উপজেলায় বন্য হাতির তাণ্ডবে গ্রামবাসীর নির্ঘুম রাত কাটছে। বোরো ধানের মৌসুমের শুরু থেকে হাতির দল সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকার ঘরবাড়ি ও ফসলের ক্ষতি করছে। 

উপজেলার কৃষকরা তাদের পাকা ধান কাটতে শুরু করেছে। কোনো কোনো এলাকায় ধান কাটা শেষের দিকে। আবাদের শেষ সময়ে এসেও চিন্তায় পড়েছেন তারা। তাদের জানমাল রক্ষা করতে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে।

আরো পড়ুন:

স্থানীয়রা জানান, প্রায় দুই যুগ আগে পাশের দেশ ভারত থেকে একদল বুনো হাতি বিনা বাধায় বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়ে। প্রথম দিকে ৪০ থেকে ৫০টি হাতি থাকলেও দিন দিন বংশ বিস্তার করে এর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। তারা বর্তমানে কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে একযোগে পাহাড়ি এলাকায় তাণ্ডব চালিয়ে ঘরবাড়ি ও ফসলের ক্ষতি করে চলেছে। বন বিভাগ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছে। তবে বেশিরভাগ মানুষ নানা জটিলতায় ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না।

বুরুঙ্গা আলম মিয়া, তমছের আলীসহ বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, ক্ষুধার্ত হাতিগুলো খাবারের অভাবে পাগল হয়ে গেছে। কখন কোথায় আক্রমণ করছে বলা যাচ্ছে না। আগে বাড়ি ও ফসলে আক্রমণে করলে মশাল জ্বালিয়ে, ডাক-চিৎকার, ভেপু বাজিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া যেত। কিন্তু এখন হাতিগুলো এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এখন আর এসব দিয়ে কাজ হয় না। মূলত বনে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য না থাকায় হাতিগুলো ফসলের মাঠে চলে আসে। মাঠে ফসল না থাকলে বাড়িতে এসে তাণ্ডব চালিয়ে ঘরবাড়ি তছনছ করে গুঁড়িয়ে দেয়। এ সময় হাতি তাড়াতে গেলে পা দিয়ে মানুষ পিষে মারছে। এর সমাধান প্রয়োজন।

মিজান মিয়া নামে এক স্কুলশিক্ষক জানান, বন্য হাতিগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চষে বেড়ালেও উত্তর দিকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের গহীন পাহাড়ের দিকে যেতে দেয় না ভারতীয়রা। যে কারণে যুগের পর যুগ শুধু বাংলাদেশের ভেতরে ছোটাছুটি করে প্রায় প্রতিরাতে কোথাও না কোথাও তাণ্ডব চালায়। উত্তর দিকে ভারতের মেঘালয় ও আসাম রাজ্যের হাজার হাজার কিলোমিটার বনভূমি রয়েছে। সেখানে হাতির পর্যাপ্ত খাদ্যও রয়েছে। কিন্তু সেখানে হাতিদের ফেরত যেতে দেওয়া হয় না। 

ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা ফরেস্ট কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, হাতি দ্বারা নিহত পরিবারকে তিন লাখ, আহতকে এক লাখ এবং ফসলের ক্ষতিগ্রস্তদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে সরকার। সরকার স্থায়ী সমাধানে যাওয়ার আগ পর্যন্ত এই ক্ষতিপূরণ চালিয়ে যাবে। 

ভূমিহীন হওয়ায় অনেকে ক্ষতিপূরণের আওতায় আসছে না— এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। আমরা তো চাকরি করি। আইনের বাইরে তো আর কাজ করতে পারব না।’ 

এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাতি তাড়াতে মশাল জ্বালানোর কেরাসিন তেল, লাইটসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে।

তারিকুল/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়