ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

নোয়াখালী শহরে জলাবদ্ধতা, এখনো ভোগান্তিতে শহরবাসী

নোয়াখালী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২৭, ৩ জুলাই ২০২৪  
নোয়াখালী শহরে জলাবদ্ধতা, এখনো ভোগান্তিতে শহরবাসী

পানিতে সয়লাব নোয়াখালী পৌর শহর

টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালী পৌর শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির পর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস, রাস্তাঘাট, বাড়িঘর ও পাড়া-মহল্লা এখনো পানির নিচে রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে রয়েছে পৌর বাসিন্দারা।

বাসিন্দারা জানান, অতি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে জলাবদ্ধতা কমবে না। পৌর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের কর্মীরা কাজ করছে। অতি শীঘ্রই এই সংকট কেটে যাবে। তবে যদি অতিবৃষ্টি অব্যাহত থাকে তাহলে সময় লাগবে।

আরো পড়ুন:

পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সড়ক পানিতে ডুবে রয়েছে। সড়কের আশেপাশের বাসাবাড়ির আঙিনায় বৃষ্টির পানি জমে আছে। পানিতে সয়লাব হয়ে আছে পুলিশ সুপার কার্যালয়, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, জেলা শিক্ষা কার্যালয়, গণপূর্ত বিভাগ, হাকিম কোয়ার্টার, সরকারি মহিলা কলেজ রোড, দরগা বাড়ী সড়ক, লক্ষীনারায়ণপুর সড়ক, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বাংলো সড়ক, সেন্ট্রাল রোডের বিভিন্ন অংশ, মাইজদী হাউজিং স্টেটের বিভিন্ন সড়ক, হরিনারায়নপুর সড়ক, নোয়াখালী প্রেস ক্লাবের সামনের অংশ, পৌর বাজারসহ পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের সড়কসমূহ। এতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, শহরের বাসিন্দা ও বিভিন্ন কাজে শহরে আসা মানুষজন চলাচলে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

মাইজদী হাউজিং এলাকার বাসিন্দা ইকবাল হোসেন বলেন, শহরের যে ড্রেনগুলো রয়েছে তা উপযুক্ত নয়। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে এ ড্রেনগুলো দিয়ে পানি নিষ্কাশন হয় না। ড্রেন সরু, আবর্জনায় ভরা। তাই ভারী বৃষ্টি হলে শহরের অনাচে-কানাচে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ রোডের বাসিন্দা মো. সোহেল বলেন, এই রাস্তাটি এমনিতেই নিচু। তার উপর আবার ভাঙা। দু’দিনের বৃষ্টিতেই এলাকাবাসীর ত্রাহি অবস্থা। কেউ ঘর থেকে প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছেন না। আমরা জীবিকার তাগিদে বের হয়েছি। যানবাহন এ রোডে আসতে চায় না। পানি মাড়িয়ে কষ্ট করে হাঁটতে সমস্যা হচ্ছে।

পৌরবাজার এলাকার বাসিন্দা কামরুল হোসেন বলেন, বাজারের ভিতর দিয়ে হাঁটা যায় না। প্রায় হাঁটু পরিমাণ পানি। তার উপর আবার ময়লা আবর্জনা। এসব পানিতে হাঁটলে চর্ম রোগ অনিবার্য। পৌর বাজারের আশেপাশে যারা থাকে তারা চরম সংকটে রয়েছে। পৌরসভা পরিচালিত এ বাজারে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। কিন্তু পৌর বাজারের ব্যবসায়ীরা পৌরসভাকে ট্যাক্স দিয়ে আসছে।

মো. ইসমাঈল হিরণ নামে একজন ঠিকাদার বলেন, প্রতিটি অফিসের সামনে পানিতে সয়লাব। ঢুকতে-বের হতে সমস্যা হচ্ছে সবার।

বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, আমাদের তো অফিসে আসতেই হবে। বৃষ্টির পানি মাড়িয়ে ঘর থেকে বের হওয়া, আবার জমে থাকা পানি দিয়ে হেঁটে হেঁটে অফিসে ঢোকা অত্যন্ত কষ্টকর।

নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন বলেন, বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে যারা সেবা নিতে আসছেন তাদের সাময়িক কষ্ট হচ্ছে। পানি মাড়িয়ে তাদের অফিসে ঢুকতে হচ্ছে। আবার আমাদের নিচ তলার দাপ্তরিক কার্যালয়েও পানি জমে আছে। তাই দাপ্তরিক কাজের সুবিধার্থে দ্বিতীয় তলায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

নোয়াখালী পৌরসভার প্যানেল মেয়র রতন পাল জানান, নোয়াখালী পৌর এলাকাটি নিচু এলাকা। একটু বৃষ্টি হলেই সমস্যা হয়। দু’দিনের ভারী বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের কর্মীরা কাজ করছে। পৌরসভার ভিতর পানি উন্নয়ন বোর্ডের মালিকানাধীন যেসব খাল রয়েছে সেগুলো দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি সরতে সময় লাগছে। তবে আশা করছি শীঘ্রই জলাবদ্ধতা কমে যাবে।

আরও পড়ুন: টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালী শহরে জলাবদ্ধতা, শহরবাসীর দুর্ভোগ

সুজন/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়