ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

কোটা বাতিলের দাবিতে গোপালগঞ্জে সড়ক অবরোধ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০০, ৫ জুলাই ২০২৪  
কোটা বাতিলের দাবিতে গোপালগঞ্জে সড়ক অবরোধ

গোপালগঞ্জ-টুঙ্গিপাড়া সড়কে বিক্ষোভ করেন বশেমুরবিপ্রব ‘র শিক্ষার্থীরা

কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (৫ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে এসে গোপালগঞ্জ-টুঙ্গিপাড়া সড়কে অবস্থান নেন তারা। পরে পুলিশ এসে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অবরোধকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেন।  

কোটা বাতিলের দাবি মানা না হলে আগামীতে কঠোর আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ক্লাশ ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে আন্দোলনকারীরা ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বশেমুরবিপ্রবি’র পদার্থ বিজ্ঞানের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শরীফ আহমেদ বলেন, ‘এটা শুধু শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলন নয়। এটা সমগ্র বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের প্রাণের দাবি। অনেকে মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন- যাদের জন্ম হয়েছে ১৯৭১ সালের পর। তাদের সন্তানরা অবৈধ সুবিধা নিচ্ছেন। একই পরীক্ষায় একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ভালো ফলাফল করেও চাকরি পাচ্ছেন না। অথচ একজন কোটার প্রার্থী ভালো ফলাফল না করেও চাকরি পাচ্ছেন। মুক্তিযোদ্ধা কোটা আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এক জিনিস নয়। সে জন্যই আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি শাসনতন্ত্র আন্দোলনের সভাপতি ও বিএমবি (বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মনিকুলার বায়োলজি) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিফাত আহমেদ বলেন, ‘আজ আমরা যৌক্তিক দাবি নিয়ে রাজপথে নেমেছি। কোটা বৈষম্য আন্দোলনে দেশের সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমেছেন। আমরা আমাদের ভাইয়ের সঙ্গে বেঈমানী করতে পারি না। আজ তারা রাজপথে,  তাদের রাজপথে রেখে আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। সারা দেশের ন্যায় আমরাও একই ব্যানারে একই সময়ে কর্মসূচি পালন করবো। আগামীকাল থেকে আমাদের আন্দোলন আরো বেগবান হবে।’

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান বলেন, ‘কোটা বাতিলের দাবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদালয়ের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে করেছেন। অবরোধকালে বিভিন্ন স্লোগান দিয়েছিল তারা। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেই। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, ১০ শতাংশ নারী, ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠীর মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ আর প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল। দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার।

সেখানে বলা হয়েছিল, ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। ওইসব গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা বাতিল করা হলো। পরে ওই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলামসহ ৭ শিক্ষার্থী। এরই প্রেক্ষিতে গত ৫ জুন ২০১৮ সালের জারিকৃত পরিপত্রটিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এরপর থেকেই সারাদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেছেন। 

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়