দেশের পররাষ্ট্রনীতি হবে ছাত্র-জনতার মতামতের ভিত্তিতে: সারজিস
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
সারজিস আলম
আগামীর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হবে ছাত্র-জনতার মতামতের ভিত্তিতে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঠাকুরগাঁও বড়মাঠ প্রাঙ্গণে এক জনসভায় বক্তব্য দেয়ার সময় সীমান্ত হত্যার বিষয়টি তুলে ধরে ভারতকে ইঙ্গিত করে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা স্বামী-স্ত্রীর পররাষ্ট্রনীতি চাই না। আমাদের জায়গা থেকে স্পষ্ট বার্তা, আমাদের চারপাশে যে সীমন্ত রয়েছে; এই সীমান্তে আমার নিরাপরাধ আর একটি ভাই-বোন কে ফেলানির মতো ঝুলে থাকতে দেখতে চাই না।’
সীমান্তহত্যা প্রসঙ্গে সারজিস বলেন, ‘সীমান্তে হত্যা বন্ধ করতে হবে, আমাদের জায়গা থেকে স্পষ্ট বার্তা। আজকের পর থেকে যদি আর এমন ঘটনা ঘটে, তাহলে হয় তার উপযুক্ত বিচার হবে, নয়ত ছাত্র-জনতা জানে সেই রাষ্ট্রকে কীভাবে জবাব দিতে হয়।’
বিগত বছরগুলোতে স্বৈরশাসন আমলে যে অন্যায়গুলো ছিল, সেগুলো এখনও শেষ হয়ে যায়নি মন্তব্য করে ছাত্র-জনতাকে অনুরোধ করে এই সমন্বয়ক বলেন, ‘আপনারা যদি আপনার আগামীর স্বপ্নের বাংলাদেশ দেখতে চান, তাহলে প্রতিবাদ জারি রাখুন। নয়ত আওয়ামী লীগ ১৬ বছরে বাংলাদেশে যে দুর্নীতির সিস্টেম তৈরি করেছে, আবার তার একটি নতুন চলচ্চিত্রায়ন দেখা যাবে। যে যে ধর্মেরই বা দলের হোক না কেন, সে যদি চাঁদাবাজি করে, দুর্নীতি করে তাকে অন্যায়কারী হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে এবং প্রতিবাদ করতে হবে।’
ভোটের বিষয়ে সবাইকে সচেতন করে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা আপনাদের দুর্বলতা নিজেরাই সৃষ্টি করেছেন।’ তা কীভাবে বর্ণনা করে সারজিস বলেন, ‘আপনারা আপনাদের মূল্যবান ভোট কোনো কিছু চিন্তা না করে, না বুঝে একটি মাত্র মার্কাতে (নৌকা) ফিক্সড করে রেখেছেন। এভাবে ভোট প্রদানে যোগ্যতার যাচাই না করে নিজেরা নিজেদের দূর্বলতা সৃষ্টি করেছেন।’
সারজিস বলেন, ‘এ বাংলাদেশে এরপর থেকে যা হবে তা ছাত্র-জনতার রায়ের ভিত্তিতে হবে। কোনো পরিবার থেকে নয় এবং কোনো ফ্যাসিস্ট সিস্টেম থেকে নয়। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে যে দুর্নীতির সিস্টেমগুলো চালু হয়েছে, তা নতুন প্রজন্ম পছন্দ করে না বলে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা উল্লেখ করে সারজিস আলম বলেন, ‘এ আন্দোলনে আমাদের বোনেরা আমাদের ঢাল হিসেবে সামনে ছিল। নারীদের সম্মান করতে হবে। এছাড়াও যারা শহিদ হয়েছে, তাদের স্মরণ রাখতে হবে এবং আহতদের পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে হবে।’
অভিভাবক ও ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশে আজকের তরুণ প্রজন্ম নেতৃত্ব দেবে তাই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারের পাশাপাশি সন্তানদের ত্যাগী দেশপ্রেমিক রাজনীতিক নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’
এ সময় আন্দোলনের সময় বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে নিজের বক্তব্য শেষ করেন তিনি।
হিমেল/বকুল