কিশোরীকে উদ্ধারে গিয়ে মারধরে আহত ৩ পুলিশ
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
যশোর থেকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে পালিয়ে যাওয়া এক কিশোরীকে উদ্ধার করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন তিন পুলিশ সদস্য। সোমবার (৫ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পৌর শহরের বাকুলিয়া গ্রামে ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- যশোর কোতয়ালি থানার এএসআই তাপস কুমার, কনেস্টবল রাবেয়া খাতুন ও ফারজানা খাতুন।
এলাকাবাসী জানান, বাকুলিয়া গ্রামের সুজন হোসেন যশোরের পুলের হাট এলাকার এক কিশোরীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গত ২ মে যশোর কোতয়ালি থানায় অভিযোগ দেন মেয়েটির বাবা। এরপর মেয়েটিকে আনতে তার পরিবারের সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করে সুজনের পরিবার। এরই মধ্যে মেয়েটি বাকুলিয়া গ্রামে চলে আসে।
সোমবার দুপুরে কালো রঙের একটি মাইক্রোবাসে যশোর কোতয়ালি থানার চার পুলিশ সদস্য সাদা পোশাকে এবং মেয়ের বাবা ও ভাই বাকুলিয়া গ্রামে আসেন। মেয়েটিকে দেখতে পেয়ে নারী কনস্টেবল রাবেয়া তাকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। মেয়েটি যেতে অস্বীকৃতি জানালে নারী কনস্টেবল রাবেয়া ও ফারজানা সবাইকে ধাক্কা দিয়ে তাকে (মেয়ে) গাড়িতে ওঠানোর চেষ্টা করে।
এসময় স্থানীয় নারীরা ঠেকাতে গেলে তাদের সঙ্গে নারী পুলিশ কনস্টেবলের ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি হয়। এ সময় নারী কনস্টেবল রাবেয়া এক নারীর নাকে ঘুষি দেন। ওই নারী রক্তাক্ত হওয়ার স্থানীয় জনতা পুলিশকে ধাওয়া দেয় এবং মারধর করে। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন।
ঘটনাটি জানতে পেরে কালীগঞ্জ থানার ওসি ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত তিন পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। তারা কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
বাকুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা আহমেদ সুজন বলেন, “সাদা পোশাকে কয়েকজন পুলিশ ওই ছেলের (সুজন) বাড়িতে আসে। এ সময় তাদের বসতে বলে ছেলের পরিবারের লোকজন। তারা কথা না শুনে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে। ছেলেকে মারধর করেন এএসআই তাপস কুমার। কিশোরীকে আনার সময় মাছুরার নাকে ঘুষি মারেন কনস্টেবল রাবেয়া। তার নাক দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “পুলিশের কেউ ইউনিফর্ম পরিহিত ছিল না। ঘটনার পরে পুলিশ কনস্টেবল রাবেয়া মাইক্রোবাসের মধ্যে ইউনিফর্ম পরেন।”
আহত মাছুরা খাতুনের স্বামী আসাদুজ্জামান বলেন, “বাড়ির পাশের ঘটনা হওয়ায় আমার স্ত্রী সেখানে যান। হঠাৎ পুলিশ আমার স্ত্রীর নাকে ঘুষি মারে। আমার স্ত্রীর অবস্থা বেশি ভালো না। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”
কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, “বাকুলিয়া গ্রামে এক কিশোরীকে উদ্ধারে গেলে হামলার শিকার হন তিন পুলিশ সদস্য। তাদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যশোর পাঠানো হয়েছে।”
ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ