ময়মনসিংহে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, সব হারিয়ে নির্বাক ব্যবসায়ীরা
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
রেলওয়ের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়
ময়মনসিংহে রেলওয়ের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। বুধবার (১৪ মে) সকাল থেকে শুরু হওয়া উচ্ছেদ অভিযান চলে দুপুর পর্যন্ত। অভিযানে দোকান ও মালামাল হারিয়ে নির্বাক ব্যবসায়ীরা।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের জায়গায় গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর তারা সিদ্ধান্ত নেবে, সেই জায়গা ব্যবসায়ীদের পুনরায় লিজ দেয়া যায় কি-না।
পূর্ব নির্ধারিত উচ্ছেদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার (১৪ মে) সকালে ময়মনসিংহ নগরের সানকিপাড়া বাজারের রেলওয়ের দুইপাশে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনায় উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। উচ্ছেদ অভিযানে তাদের সহযোগিতা করে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং রেলওয়ে থানা পুলিশ। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও রেলওয়ের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা উপ-সচিব নাসির উদ্দিন মাহমুদের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান চলে।
এই উচ্ছেদ অভিযানে সিটি করপোরেশন থেকে জমি লিজ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনা করে আসা ব্যবসায়ীদের দোকান ও মালামাল হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। এমন উচ্ছেদ অভিযানে ব্যবসায়ীদের পথে বসার উপক্রম হওয়ায় সাধারণ মানুষ ক্ষোভ জানিয়েছেন। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, উচ্ছেদ অভিযান হবে তা জানলেও গুরুত্ব না দেয়ায় মালামাল সরাননি ব্যবসায়ীরা। যার কারণে সবকিছুই গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
ভাঙারি ব্যবসায়ী মামুন মিয়া বলেন, ‘’২০-৩০ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করে সংসার চালাচ্ছি। নিয়মিত খাজনাও দিয়ে আসছি। কিন্তু আজকে জানতে পারলাম, তা রেলের জায়গা। জায়গাটি নিজের মনে করে মালামাল সরায়নি। তাই ভেকু দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। কোনো প্রতিবাদও করতে পারিনি। শুধু চেয়ে চেয়ে দেখেছি।’’
ডিম ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘‘প্রায় সময় শুনে থাকি অভিযান হবে কিন্তু হয়নি। আজ এত বড় পরিসরে অভিযান হবে ভাবতেও পারিনি। ব্যবসা করে সংসারটা কোনোরকম চালাতে পারলেও এখন কী করব, ভেবে পাচ্ছি না।’’
রেলওয়ের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা উপ-সচিব নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘‘রেলের জায়গা একটি প্রভাবশালী মহল যুগ যুগ ধরে তাদের দখলে নিয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীদের কাছে লিজ দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুস সচেতন না হয়ে রেলের জায়গা সিটি করপোরেশন থেকে লিজ নিয়েছে, এতে তাদেরও দায় রয়েছে। আমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ নিয়ে এই জায়গায় অভিযান পরিচালনা করছি। দেশের সকল জায়গায় আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। জায়গাটি প্রথমে খালি করে পরে সিদ্ধান্ত হবে সেটি ব্যবসায়ীদের কাছে লিজ দেয়া যায় কি-না।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘রেললাইনের দুইপাশে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এরমধ্যে যত স্থাপনা আছে সবকিছুই গুঁড়িয়ে দেয়া হবে।’’
ঢাকা/মিলন/বকুল