পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী আর নেই
রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
উপমহাদেশে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী আর নেই।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টায় রাজশাহী মহানগরীর রানীবাজার এলাকার নিজ বাসভবন ‘মোহিনী নিকেতন’-এ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
অমরেশ রায় চৌধুরী বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী ছিলেন। মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় রাজশাহীর পঞ্চবটি শ্মশানে তাকে দাহ করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
১৯২৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর জেলার চৌদ্দরশি গ্রামে সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন অমরেশ রায় চৌধুরী। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াকালীন তার মা রাজলক্ষ্মী রায় চৌধুরীর আগ্রহে উপমহাদেশের প্রখ্যাত উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী ও সুরকার ফরিদপুরের সুধীর লাল চক্রবর্তীর কাছে তার প্রথম হাতেখড়ি হয়। গুরু সুধীর লালের মৃত্যুর পর তিনি সিরাজগঞ্জের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতবিদ হরিহর শুক্লার কাছে কয়েক বছর তালিম নেন।
পরবর্তীতে ফরিদপুরের কোটালীপাড়ার সঙ্গীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তীর কাছে ধ্রুপদ, খেয়াল ও ঠুমরিতে দীর্ঘদিন প্রশিক্ষণ নেন। নেত্রকোনার বিশিষ্ট শিল্পী ও সুরকার নিখিলচন্দ্র সেনের কাছে আধুনিক, রাগপ্রধান, অতুলপ্রসাদী, নজরুল সঙ্গীত ও শ্যামা সঙ্গীত শেখেন। পরবর্তীতে সঙ্গীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তীর ছেলে প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী মানস চক্রবর্তীর কাছেও উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম নেন অমরেশ রায় চৌধুরী।
১৯৪৫ সালে বাইশরশি শিবসুন্দরী একাডেমি থেকে ম্যাট্রিক পাসের পর উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি নিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গীত চর্চা চালিয়ে যান অমরেশ রায় চৌধুরী। ছোটবেলা থেকেই রাগসঙ্গীতের প্রতি গভীর অনুরাগ ছিল তার।
১৯৬১ সাল থেকে রাজশাহী মহানগরীর রানীবাজার এলাকায় ‘মোহিনী নিকেতন’-এ বাস করতেন অমরেশ রায় চৌধুরী। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে অবদানের জন্য তিনি ২০১৪ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পদক এবং ২০১৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।
ঢাকা/কেয়া/রফিক