‘চুলো জ্বালাতে পারি নাই, শুকনো খাবার খেয়ে টিকে আছি’
নীলফামারী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
তিস্তা ব্যারাজ। ফাইল ফটো
উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৯টায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়া পয়েন্টে পানির এ বিপৎসীমা রেকর্ড করা হয়।
গতকাল বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে প্রথমে ৭ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে তিস্তার পানি, পরে কিছুটা কমলেও রাতের বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে আজ ভোরে তা ১১ সেন্টিমিটার ছাড়িয়ে যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। আগামী দুইদিন ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢল অব্যাহত থাকতে পারে।”
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিপৎসীমার ওপরে পানি প্রবাহিত হওয়ায় ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, গয়াবাড়ী, খালিশা চাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের অন্তত ১২টি গ্রাম ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের প্রায় ১২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তলিয়ে গেছে রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত।
খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, “বারবার বন্যায় ধান, পাট, মাছ সব নষ্ট হয়ে গেছে। অর্থনৈতিকভাবে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছি।”
কেল্লাপাড়া এলাকার বাসিন্দা রহিমা বেগম বলেন, “সকালে ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে পড়েছে। চুলো জ্বালাতে পারি নাই, শুকনো খাবার খেয়ে টিকে আছি।”
ডিমলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান জানান, ইউনিয়নের ঝাড়সিংহেরস্বর, বোল্ডারের চর, খোকার চর, খাড়াপাড়া, ফ্লাটপাড়াসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন।
টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম জানান, তিস্তার কয়েকটি চ্যানেল বের হয়ে আবাদি জমি প্লাবিত করেছে। স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ দিয়ে চ্যানেল বন্ধের চেষ্টা করছেন। পাউবো সহায়তা করছে। চরাঞ্চলের প্রায় ২০০ পরিবারের ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে।
ঢাকা/সিথুন/মাসুদ