সাভারে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে স্কুলের মাঠ দখল
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
স্কুলের মাঠ দখল করে দোকান নির্মাণ করা হয়েছে (ডানে)। অন্য অংশ জানাজার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
ঢাকার সাভারের আমিনবাজারে উত্তরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের একাংশ দখল করে দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। এতে পুরো মাঠ দখলের হুমকিতে পড়েছে। মাঠ দখল হওয়ায় বাচ্চাদের খেলাধুলা ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, আমিনবাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে মরিচারটেক যাওয়ার সড়কের মরিচারটেক এলাকায় পূর্ব দিকে উত্তরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সড়কের পশ্চিম দিকে খেলার মাঠ। ওই খেলার মাঠের একাংশে চারটি দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। বাকি মাঠেও ধর্মীয় প্রার্থনার স্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সালাউদ্দিন মিন্টুর নেতৃত্বে দোকান নির্মাণ করা হয়। এতে স্কুলের শিশুদের খেলার মাঠটি সঙ্কুচিত হয়ে গেছে। এখন পুরোটাই দখলের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, ‘‘ওখানে স্কুলের খেলার মাঠ ছিল। শিশুরা খেলাধূলা করত। ৬ আগস্ট রাতারাতি ওখানে দোকান নির্মাণ করে। মসজিদের নাম করে দোকান করেছে কিন্তু মসজিদের সবই আছে। খরচও এলাকার সবাই মিলে বহন করে।’’ দোকান উচ্ছেদ করে খেলার মাঠ মাঠ উন্মুক্ত করাার দাবি জানান তিনি।
উত্তরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান বলেন, ‘‘স্কুলের নামে ওই জমির দলিল রয়েছে। আমরা দীর্ঘ দিন ধরে এখানে খেলার মাঠ পরিচালনা করছি। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর পাশের মসজিদের নামে দোকান তোলা হয়। বাউন্ডারিও দেয়া হয়েছে। তারা তো কাগজপত্র অনুযায়ী জমি পায় না। তবুও আমরা এটার সামাজিক সমাধান চেয়েছি।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘তারা জানাজা পড়া বা তাদের কাজে মাঠ ব্যবহার করতে পারে। তাতে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু তারা এখানে দখল করছে। এখন আমাদের জমি ছেড়ে দিক।’’
এ সব বিষয়ে কথা বলতে সাবেক ইউপি সদস্য সালাউদ্দিন মিন্টুকে ফোন করা হয়। মসজিদের নামে দোকান করার জন্য জমি বরাদ্দ নেয়া হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি কোনো জবাব দিতে রাজি হননি।
আমিনবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন বলেন, ‘‘ওখানে যে ৩৫ শতাংশ জমি আছে, সেটি স্কুলের বুঝিয়ে দেয়া হবে। মসজিদের সঙ্গে ঝামেলা স্কুলের। দুটি প্রতিষ্ঠানই জনগণের। ৩৫ শতাংশ স্কুলকে বুঝিয়ে দিলে তো আর ঝামেলা থাকবে না।’’
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বকর সরকার বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইনগত প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়লে সরকারি সম্পত্তিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হবে।’’
ঢাকা/সাব্বির/বকুল