খাগড়াছড়িতে অবরোধ স্থগিত
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
খাগড়াছড়ি জেলায় চলমান সড়ক অবরোধ শারদীয় দুর্গোৎসব ও প্রশাসনের দাবি পূরণের আশ্বাসে আজ মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা থেকে আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছে জুম্ম ছাত্র জনতা।
জুম্ম ছাত্র-জনতার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে আজ মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, ‘‘শারদীয় দুর্গোৎসবকে সন্মান জানিয়ে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৮ দফা দাবি পুরণের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত অবরোধ স্থগিত করা হলো।’’ স্কুলছাত্রী ধর্ষণ ঘটনার প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র জনতার ব্যানারে গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) থেকে খাগড়াছড়ি জেলাজুড়ে সড়ক অবরোধ শুরু হয়।
জেলাজুড়ে সড়ক অবরোধ আজ মঙ্গলবারও (৩০ সেপ্টেম্বর) অব্যাহত ছিল। জেলার চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি ও ঢাকা-খাগড়াছড়ি সড়কে অবরোধ শিথিল করা হলেও দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হয়নি। অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতেও অল্পসংখ্যক অটোরিকশা-ইজিবাইক চলাচল করেছে। প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারাও বহাল রয়েছে জেলার সদর ও গুইমারা উপজেলায়।
দুপুরে জেলার গুইমারায় সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন এবং অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেন। খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় ১৪৪ ধারা বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক।
পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এর প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতা এ অবরোধের ডাক দেয়। অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে গত রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভ ও সহিংসতায় রণক্ষেত্র পরিণত হয় খাগড়াছড়ির গুইমারার রামেসু বাজার। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ছিল স্থানীয় একটি পক্ষ। এ সময় গুলিতে তিনজনের মৃত্যু হয়। তারা তিনজনই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর। সেনাবাহিনীর মেজরসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়।
আজ মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে খাগড়াছড়ি পৌর শহরের মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন ছিল। অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল। সড়কে মানুষের হাঁটাচলাও তেমন ছিল না। একাধিক ব্যক্তি একসঙ্গে দেখলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শহরে কিছু সংখ্যক টমটম চলাচল করে।
অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত শনিবার ( ২৭ সেপ্টেম্বর) খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও ভাঙচুর করা হয়। এরপর সদর উপজেলা, পৌরসভা এলাকা এবং গুইমারা উপজেলায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।
২৩ সেপ্টেম্বর জেলা সদরের সিঙ্গিনালায় রাত ৯টায় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় ক্ষেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শয়ন শীল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে ছয় দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকা/রূপায়ন/বকুল