ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৩ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

অবমুক্তির পরও ফিরে এল হেমায়েতের বকটি

পটুয়াখালী (উপকূল) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪৪, ২৯ অক্টোবর ২০২৫   আপডেট: ২২:৫৪, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
অবমুক্তির পরও ফিরে এল হেমায়েতের বকটি

বনবিভাগের অবমুক্তির পর পটুয়াখালীর বাউফলের সেই বকটি আবারো ফিরে এসেছে তার প্রিয় সঙ্গী হেমায়েতের কাছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বকটি বাউফল উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নের নুরাইনপুর বাজারের হেমায়েতের স্টেশনারির দোকানে ফিরে আসে।

এর আগে, গত ২৭ অক্টোবর বন বিভাগের কর্মকর্তারা নুরাইনপুর বাজার এলাকার হেমায়েতের কাছ থেকে নিয়ে বকটি ওই এলাকার ‘বগের বাড়ি’ নামে পরিচিত গাছে অবমুক্ত করেছিলেন। কিন্তু অবমুক্তির পর থেকেই বকটি কিছু না খেয়ে নিরব ছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৪ মাস আগে ঝড়ের সময় স্থানীয়ভাবে ‘বকের বাড়ি’ নামে পরিচিত নুরাইনপুর বাজার সংলগ্ন খানবাড়ির একটি গাছ থেকে বকের ছানাটি পড়ে যায়। তখন একটি গুইসাপ ছানাটিকে আক্রমণ করলে স্থানীয় ব্যবসায়ী হেমায়েত উদ্দিন এগিয়ে এসে উদ্ধার করেন। 

এরপর তিনি নিজের সন্তানের মতো পরিচর্যা করে বকের ছানাটিকে সুস্থ করে তোলেন। সেই থেকেই বকটি হেমায়েত উদ্দিনের সঙ্গে দোকানে বসবাস করছিল। দোকানদারের সঙ্গে বকের এমন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়। পরে বকটি অবমুক্ত করার পর আবার ফিরে আসে।

স্থানীয়রা বকটি ফের হেমায়েতের দোকানে দেখে বিষ্মিত হন। এ ঘনায় মানুষের প্রতি প্রাণীদের ভালোবাসার এক বিরর দৃষ্টান্ত ফুটে উঠেছে বলে মনে করছেন তারা।

হেমায়েত উদ্দিন বলেন, “আমি মনে করেছিলাম বকটি আর ফিরবে না। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমার সঙ্গীটা আবার ফিরে এসেছে। আমি খুব চিন্তায় ছিলাম, ভেবেছিলাম না খেতে পেরে হয়ত মরেই যাবে। আমি সন্তানের মতো বকটিকে লালন-পালন করেছি। বকটি আমার যত্ন এবং ভালোবাসা ভুলে যায়নি।”

বাউফল উপজেলা বন বিভাগের রেঞ্চ কর্মকর্তা বদিউজ্জামান খান সাংবাদিকদের বলেন, “আপনারা দয়া করে আর নিউজ করবেন না। নিউজ করলে বকটির ক্ষতি হতে পারে। আপনারা জানেন, আমরাও জানি এতটুকুই থাক। যত বেশি নিউজ হবে, তত বেশি চাপ আসবে বকটিকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। আর এতে শেষ পর্যন্ত বকটিই মারা যেতে পারে। ওর মতো করে ওকে থাকতে দিন, আমরা ওদিকে আর নজর দেব না।”

তিনি আরো বলেন, “গতকাল (মঙ্গলবার) সরাসরি উপদেষ্টার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। আপাতত যেহেতু বকটি কোথাও যাচ্ছে না, বাইরে থেকে খাবারও খাচ্ছে না, তাই ওকে হেমায়েতের কাছেই থাকতে দিন। ওর কাছে লালিত-পালিত হোক। ভবিষ্যতে বড় হলে এমনিতেই উড়ে চলে যাবে।”

ঢাকা/ইমরান/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়