গোপালগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পুনর্মূল্যায়নের দাবি
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
এম সিরাজুল ইসলাম সিরাজ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির ঘোষিত ২৩৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় নেই দলটির অনেক ত্যাগী নেতাদের নাম। মনোনয়নবঞ্চিত এসব নেতারা মুখ না খুললেও কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
তেমনি গোপালগঞ্জ-২ আসনের বিএনপির কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। গোপালগঞ্জ-২ আসন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা, একটি পৌরসভা ও কাশিয়ানী উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে কেন্দ্রীয় ড্যাব নেতা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ডা. কে এম বাবরকে বিএনপির মনোয়ন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ মনোনয়ন নিয়ে বিএনপির মনোনয়ন প্রদানকে কেন্দ্র করে দলের সাবেক সভাপতি এবং এই আসনে বিএনপির হয়ে তিনবার নির্বাচনে অংশ নেওয়া এম সিরাজুল ইসলাম সিরাজ অনুসারী নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি রুবেল মোল্লা বলেন, “দীর্ঘ ১৭ বছর অনেক ত্যাগ ও জুলুম-অত্যাচার সহ্য করেছে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম। আমাদেরও এই অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। তিনবার বিএনপির হয়ে গোপালগঞ্জ-২ আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও পুলিশের শত বাঁধার মধ্যেও দলের কেন্দ্র ও আঞ্চলিক নেতাদের নির্দেশনায় ঝুঁকি নিয়ে সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হয়েছে। নেতাকে মারপিট ও বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। জেল-জুলুমের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই এবং সর্বদা কর্মীদের পাশে থেকেছেন তিনি। কিন্তু যিনি ১৭ বছর ঘরের মধ্যে ছিলেন, দল ও দলের কর্মীদের জন্য কোনো ঝুঁকি নেননি, আজ তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হলো।”
তিনি আরো বলেন, “তারপরও আমরা দলের এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা ছিল, যিনি মনোনয়ন পাবেন, তিনি মনোনয়ন বঞ্চিতদের কাছে গিয়ে তাদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনের মাঠে নামবেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমাদের এখানে মনোনীত প্রার্থী সেটা করেননি। আমাদেরকে অবজ্ঞা ও হেয় করে চলছেন। দুঃসময়ে যারা দলের হাল ধরে রেখেছে এটাই কি আমাদের উপহার? আমরা ধানের শীষের বাইরের নই কিন্তু এভাবে মাঠে নামা সম্ভব নয়।”
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মো. সাব্বির মোল্লা বলেন, “সিরাজুল ইসলাম সিরাজ গোপালগঞ্জ বিএনপির জন্য একজন ত্যাগী নেতা। দলের হয়ে বহু নির্যাতন সয়েছেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের নেতাকর্মীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে গোপালগঞ্জে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন। এজন্য তাকে মার খেতে হয়েছে। আর যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তাকে তো আমিই চিনি না। সাধারণ জনগণ কীভাবে তাকে চিনবে? আমি বলছি, ডা. কে এম বাবরকে দিয়ে নির্বাচন করালে দলের ভোট কমে যাবে। তাই অবিলম্বে ডা. কে এম বাবরের মনোনয়ন বাতিল করে ত্যাগী নেতা এম সিরাজুল ইসলাম সিরাজকে মনোনয়ন দেওয়া হোক।”
শহরের বিভিন্ন এলাকার বিএনপি নেতা ও সমর্থক বলেন, ভেবেছিলাম কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করবেন। যারা দল চালাতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের রোষাণলে পড়ে ব্যবসা-বাণিজ্য বা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, মারপিটের শিকার হয়েছেন, তাদের বদলে একজন রাজনৈতিকভাবে অচেনা অজানা ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া হলো। এই ঘটনায় আমরা খুবই মর্মাহত। তাই সিনিয়র নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি গোপালগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পুনরায় মূল্যায়ন করে সিরাজুল ইসলামকে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
ঢাকা/বাদল/এস