ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

১৬ ডিসেম্বর অহংকার, আনন্দ ও বেদনার মহাকাব্যিক দিন: তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৯, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৯:০২, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
১৬ ডিসেম্বর অহংকার, আনন্দ ও বেদনার মহাকাব্যিক দিন: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (ফাইল ফটো)

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডাকে শুরু হওয়া মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয় ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করার মধ্য দিয়ে। দেশের অদম্য বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে এই বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন। তাই, ১৬ ডিসেম্বর জাতির জন্য অহংকার, আনন্দ ও বেদনার এক মহাকাব্যিক দিন।”

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেন তিনি।

আরো পড়ুন:

তারেক রহমান বলেন, দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর জাতি বিজয় অর্জন করে। এ ঐতিহাসিক দিনে আমি দেশবাসীসহ প্রবাসী সকল বাংলাদেশিকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণে ভরে উঠুক তাদের জীবন—এই কামনা করি। এই দিনেই ৯ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে এবং পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন, সেই সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। বিদেশি শৃঙ্খল থেকে দেশকে মুক্ত করতে যেসব মা-বোন সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন, আমি তাদের প্রতি জানাই সশ্রদ্ধ সালাম।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, শোষণমুক্ত ও সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ই ছিল নতুন বাংলাদেশের মর্মমূলে। কিন্তু, অমানবিক ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী বারবার সেই প্রত্যয়কে মাটিচাপা দিয়ে জনগণের ওপর সর্বনাশা দুঃশাসন চাপিয়ে দিয়েছে। থামিয়ে দিয়েছে বহুদলীয় গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা।

চক্রান্তকারীদের নীলনকশা এখনো চলমান, উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগ্রাসী শক্তি আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অবজ্ঞা করার ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছে। ওই অপশক্তির এদেশীয় এজেন্টরা দেশের অর্জিত স্বাধীনতাকে বিপন্ন করতে অব্যাহতভাবে চক্রান্তের জাল বুনে চলেছে। তারা গত ১৬ বছর ধরে একের পর এক প্রহসনের একতরফা নির্বাচন আয়োজন করে জনমতকে তাচ্ছিল্য করেছে। কেড়ে নিয়েছে মানুষের সকল গণতান্ত্রিক অধিকার। নাগরিক স্বাধীনতা বিলুপ্ত করে জনগণকে অধিকারহীন করেছে। দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে; সংবাদপত্রসহ বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতাকে করা হয়েছে নিরুদ্দেশ।

তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রহীন রাষ্ট্রে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার দাপটে সর্বত্র নেমে আসে হতাশা, ভয় ও নৈরাজ্যের অন্ধকার। ক্ষমতা জবরদখলকারীরা জনগণের ওপর নৃশংস আক্রমণ চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে গুম ও হত্যা করেছে এবং লক্ষাধিক মানুষকে মিথ্যা মামলায় কারারুদ্ধ করেছে। পরিস্থিতি হয়ে ওঠে ভয়াবহ নৈরাজ্যময়। যিনি জীবনের দীর্ঘ সময় গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, সেই অবিসংবাদিত নেত্রীকে অন্যায়ভাবে বন্দি করে অন্ধকার কারাগারে রাখা হয়েছিল। অমানবিক নিপীড়ক শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে একের পর এক গণবিরোধী পদক্ষেপ নিতে থাকে।

জুলাই অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্রকে বিপদমুক্ত করতে মহান বিজয় দিবসের প্রেরণায় আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪-এর জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার দুনিয়া কাঁপানো আন্দোলনের মাধ্যমে তারা পরাজিত হয়। পতন ঘটে ইতিহাসের এক নিষ্ঠুরতম একনায়কের। দেশে আবারও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের প্রত্যাশা জেগে ওঠে।

তিনি আরো বলেন, এই মুহূর্তে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনকল্যাণমুখী ও জবাবদিহিমূলক সরকার গঠনের পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এই বিজয়ের দিনে আমাদের অঙ্গীকার হোক—আমরা বিভাজন ভুলে, হিংসা ভুলে মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়াব।

মহান বিজয় দিবসে দেশবাসীর সকলের প্রতি সেই আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি।

ঢাকা/মোহাম্মদ/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়